রাজশাহী অঞ্চলের পর্যটন খাত আরেক ধাপ এগুবে : লিটন

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২২; সময়: ৩:১২ অপরাহ্ণ |
রাজশাহী অঞ্চলের পর্যটন খাত আরেক ধাপ এগুবে : লিটন

নিজস্ব প্রতিবেদক : স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ ও বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী ৫০ বছর পূর্তিতে ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশের আয়োজনে এবং সিটি কর্পোরেশনের তত্ত্বাবধানে আগামী ২৫ থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি রাজশাহীতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ-ভারত ৫ম সাংস্কৃতিক মিলনমেলা-২০২২।

বৃহস্পতিবার দুপুরে নগর ভবনের সিটি হলরুমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে চার দিনব্যাপী এই সংস্কৃতিক মিলনমেলার লোগো ও প্রোমো উন্মোচন করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। এ সময় তিনি চারদিনের অনুষ্ঠান সূচীও ঘোষণা করেন।

এর আগে বাংলাদেশ-ভারত সাংস্কৃতিক মিলনমেলা চারবার হয়েছে। এর মধ্যে দুইটি ভারতে, একটি ঢাকায়, একটি কুষ্ঠিয়ায় হয়। এবার হচ্ছে পদ্মাপাড়ের প্রচীন শহর রাজশাহীতে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মেয়র বলেন, ‘আগামী ২৫, ২৬, ২৭ ও ২৮ ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য সাংস্কৃতিক মিলনমেলায় ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, বিহার ও ত্রিপুরা থেকে আগত প্রাদেশিক মন্ত্রীগণ, অন্যান্য রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বক্তিবর্গ এবং বাংলাদেশ সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী, সংসদ সদস্যবৃন্দ ও রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, সরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন স্তরের সুধীবৃন্দ অংশগ্রহণ করবেন। সাংস্কৃতিক উৎসবকে কেন্দ্র করে রাজশাহীকে বর্ণিলভাবে সাজানো হবে।

মেয়র বলেন, রাজশাহীর এই উৎসবের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে। ব্যবসা-বাণিজ্য ও পর্যটনসহ নানাক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনার দিগন্ত উন্মোচিত হবে। বিশেষ করে রাজশাহী অঞ্চলে যে পর্যটন স্থান রয়েছে তার পরিচিতি আরও বাড়বে। এছাড়াও পরিচিতি পাবে রাজশাহী সিটি করপোরেশনেরও। অতিথিরা একটি ক্লিন সিটি দেখে যাবে এবং জেনে যাবে আমার কোথায় বসবাস করি।

সংবাদ সম্মেলনে প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘ভারত আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র। ভারত ও বাংলাদেশ জনগণের সম্প্রীতির সম্পর্ক ঐতিহাসিক। সেই সম্পর্ক ভৌগোলিক, রাজনৈতিক, অথনৈতিক, বাণিজ্যিক, যোগাযোগ সকল ক্ষেত্রে অনন্য উচ্চতায় উঠিয়ে আনার প্রয়াস একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। বাংলাদেশ-ভারতের জনগণ অসাম্প্রদায়িক উদার ও মানবতাবাদী বলেই ইতিহাসের পথরেখা অভিন্ন ধারায় বহমান। তাই নানা ধরনের গুজব ও বিভ্রান্তি সৃষ্টিকারীরা কখনোই জনগণের কাছে সমাদৃত হতে পারে না।

‘আমাদের সম্পর্ক অনেক অগ্নি পরীক্ষায় উর্ত্তীণ হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার দুই দেশের এই ভাতৃপ্রতীম সম্পর্ক অচ্ছেদ্য ও অটুট আছে। দ্বিপাক্ষিক এই সম্পর্কের মধ্যে জনগণের সঙ্গে জনগণের সবচেয়ে গভীর আন্ত:সম্পর্ক স্থাপন হয় সাংস্কৃতিক ভাব বিনিময়ের মাধ্যমে। ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ এই লক্ষ্য নিয়ে ইতিপূর্বে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে সাংস্কৃতিক মিলনমেলার উদ্যোগ নেয়। এরই ধারাবাহিকতায় এ বছর রাজশাহীতে ৫ম বারের মতো অনুষ্ঠিত হবে সাংস্কৃতিক মিলনমেলা।’

তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমান পৃথিবীতে দেশে দেশে দ্বিপাক্ষিক সর্ম্পকের ক্ষেত্রে সব সময় উইন উইন গেম নিয়ে সকলেই সচেতন থাকেন। আমরাও দেবো ও নেবো, মিলিব মেলাবো নীতিতে বিশ^াসী। আমরা সম্পর্কের জানালা খুলে রাখবো। আসুন আমরা এই সম্ভাবনার দিগন্ত প্রসারিত করি।

উৎসব সফল করতে গণমাধ্যম কর্মীদের সহযোগিতা কামনা করে মেয়র বলেন, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সংবাদপত্র ও সাংবাদিকগণ হচ্ছেন উন্নয়ন সহযোগী। এই সাংস্কৃতিক উৎসব আমাদের সকলের। বাংলাদেশ-ভারত ৫ম সাংস্কৃতিক মিলনমেলা-২০২২ সফল করতে আপনাদের একান্ত সহযোগিতা প্রয়োজন।

সংবাদ সম্মেলনে মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন চারদিনের অনুষ্ঠান সূচীও ঘোষণা করেন। চারদিনের অনুষ্ঠান সূচিতে রয়েছে, ২৫ ফেব্রুয়ারি ভারতীয় অতিথিবৃৃন্দের আগমন। একটি দল সোনা মসজিদ মহদীপুর সীমান্ত পথে বাংলাদেশে প্রবেশ করবেন। আরেকটি দল হযরত শাহ মখদুম (রহ.) বিমানবন্দর হয়ে শহরে আসবেন। অতিথিদের স্বাগত জানানোর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

২৬ ফেব্রুয়ারি সকালে সিএন্ডবি মোড়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালে শ্রদ্ধা নিবেদন। এরপর জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানের সমাধিত শ্রদ্ধা নিবেদন। সকাল ১১টা ৩০ মিনিটে নগর ভবনের গ্রীন প্লাজায় নাগরিক সংবর্ধনা, বিকাল সাড়ে ৪টা রাজশাহী কলেজের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে আলোচনা সভা শেষে উভয় দেশের খ্যাতিমান শিল্পীদের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।

২৭ ফেব্রুয়ারি বরেন্দ্র রিসার্চ মিউজিয়াম ও পুঠিয়া রাজবাড়ি পরিদর্শন শেষে নাটোর গমন। নাটোর উত্তরা গণভবনে দিনব্যাপী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। এরপর সন্ধ্যায় রাজশাহী কলেজ মাঠে জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের শিল্পীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।

২৮ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, তাহেরপুরে দুর্গামন্দির, বাঘা শাহী মসজিদ ও দরগা পরিদর্শন। বিকেলে রাজশাহীতে ফিরে চা চক্রে অংশগ্রহণ। সন্ধ্যায় রাজশাহী কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত হবে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

এছাড়া উৎসব চলাকালে রাজশাহী কলেজ মাঠে রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রির সমিতির সহযোগিতায় ২৫ থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মেলা অনুষ্ঠিত হবে। রাজশাহীতে উৎপাদিত বিভিন্ন পণ্য এই মেলার স্টলগুলোতে স্থান পাবে।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, প্রস্তুতি কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ও রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াদুদ দারা, প্রস্তুতি কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক কবি আরিফুল হক কুমার, কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা নওশের আলী, প্রচার উপ-কমিটির আহ্বায়ক ও মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসানুল হক পিন্টু, রাসিকের প্যানেল মেয়র-১ ও ১২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সরিফুল ইসলাম বাবু।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে