পা দিয়ে লিখে এইচএসসিতে উর্ত্তীন জনিকা রানীর স্বপ্ন শিক্ষক হওয়ার

প্রকাশিত: ১৯-০২-২০২২, সময়: ১৪:৪৫ |

মাসুদ রানা, পত্নীতলা : নওগাঁর পত্নীতলায় নজিপুর সরকারী কলেজ কেন্দ্রে পা ও হাতের সাহায্য লিখে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শারীরিক প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী জনিকা রানী জিপিএ ৪.১৭পেয়ে উর্ত্তীন হয়ছেন। সেই শিক্ষার্থী এখন শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন অন্তরে রেখেছেন।

জনিকা রানী জেলার মহাদেবপুর উপজেলার গাহলী দেওরা গ্রামের হরেন্দ্র বর্মণ ও বুলবুলি রানীর মেয়ে । জনিকা তাদের সাংসারের বড় মেয়ে। এছাড়াও বঙ্কিম ও লিমন নামে তাদের দুই ছেলে সন্তান আছে।

জন্ম থেকেই জনয়িকার দুটি হাত থাকলেও তা অকেজো। এ নিয়ে পরিবারের সদস্যরা হতাশ হলেও ছোটবেলা থেকেই লেখাপড়ার প্রতি প্রবল ইচ্ছা ছিল জনিকা রানীর। বিষয়টি নজরে আসে তার অভিভাবকদের।

প্রাথমিক সমাপনী, জুনিয়র সার্টিফিকেট পরীক্ষাতে ভালো ফল করেন তিনি। স্থানীয় গাহলী দ্বি মুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে পিএসসি পরীক্ষায় ২.৮৩ এসএসসি পরীক্ষাতে জিপিএ-৪.৫৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন।

এর পর উচ্চতর শিক্ষার আশায় পত্নীতলার চৌরাট শিবপুর বরেন্দ্র ডিগ্রি কলেজে ভর্তি হন। যার ধারাবাহিকতায় নজিপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজকেন্দ্রে পরীক্ষা দেন। মেঝেতে একটি বিছানার ওপর বসে ডান পায়ের আঙুল দিয়ে লিখে পরীক্ষা দেন সে।

চৌরাট শিবপুর বরেন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ দিপক কুমার জানান, জনিকা খুব মেধাবী ছাত্রী। নিয়মিত ক্লাস করেছে। ক্লাস পরীক্ষার ফল ছিল সন্তোষজনক। সে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপএ ৪.১৭ পেয়ে উর্ত্তীন হয়েছে।

জনিকার বাবা হরেন্দ্র বর্মন বলেন মেয়েটাকে নিয়ে আমাদের অনেক কষ্ট হয়, ওর মা তার দেখাশোনা করে। মেয়েটার পড়ার প্রতি খুব আগ্রহ, সে উচ্চতর পড়াশুনা শেষ করে সরকারি চাকুরী করতে চায়।

জনিকার মা বুলবুলি রানী বলেন, জনিকা আমাদের বড় সন্তান; জন্ম থেকেই তার সবকিছুর দেখভাল করছি আমি। অনেক চিকিৎসা করেও মেয়েটির অবস্থা স্বাভাবিক হয় নি। মেয়েকে নিয়ে অনেক দুঃশ্চিন্তা হয়, তার ভবিষ্যৎ কি হবে!

আমি মারা গেলে কে তাকে দেখবে! প্রাধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আবেদন, তিনি যদি আমার মেয়েটিকে একটি সরকারী চাকুরী দিতেন ওর একটা গতি হতো, তাহলে আমি মরে গিয়েও শান্তি পেতাম।

শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে বাধা নয় বরং শক্তিতে রুপান্তরিত করে একদিন জনিকা রানী দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষাগ্রহণ শেষে রাষ্ট্রের কল্যাণে নিজেকে নিবেদিত করবে, এমনটাই প্রত্যাশা করেন জনিকার পরিবার, শিক্ষক সহ এলাকাবাসি।

আর এজন্য সমাজের বিত্তবান মানুষ সহ সরকারের সহযোগিতা চান তারা।

উপরে