রাজশাহীতে চোখ রাঙাচ্ছে সবজিও

প্রকাশিত: মার্চ ৬, ২০২২; সময়: ৩:১১ অপরাহ্ণ |
রাজশাহীতে চোখ রাঙাচ্ছে সবজিও

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীতে এক দিনের ব্যবধানে কাঁচা মরিচের কেজি ৬০ থেকে ১০০ টাকা হয়ে গেছে। করলার দাম কেজিতে বেড়ে গেছে ৫০ টাকা। বাজারে পেঁয়াজের অভাব না থাকলেও তিন দিন ধরে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা কেজিতে তা বিক্রি হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে বিক্রেতারা বলছেন, এবার তারাও জানেন না এই বাজার কোথায় গিয়ে ঠেকবে।

রাজশাহীতে এক সপ্তাহ ধরে সয়াবিন তেলের দাম বাড়তি। বাজারে সয়াবিন তেলের সংকটের খবর শুনে ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ তেলের বোতল মজুত করে রাখছেন। কেউ বোতলের লেখা তুলে বেশি দামে তা বিক্রি করছেন। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কয়েক দিন ধরে অভিযান চালিয়ে ব্যবসায়ীদের জরিমানা করেছে। কারও কারও দোকান সিলগালা করেছে, কিন্তু দাম নিয়ন্ত্রণে আসেনি।

এই অবস্থার মধ্যে নগরে সবজি থেকে শুরু করে চাল, ডাল, মাংস-সবকিছুর দাম বেড়ে গেছে। বাজারে গত শুক্রবার যে করলা ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে, গতকাল শনিবার তা ১৩০ টাকা কেজিতেও পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। এক দিনের ব্যবধানে কাঁচা মরিচের কেজি ৬০ থেকে ১০০ টাকা হয়ে গেছে। এই দুই পণ্যের সরবরাহও বাজারে কম দেখা গেছে।

বাজারে পেঁয়াজের অভাব না থাকলেও, তিন দিন ধরে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা কেজিতে তা বিক্রি হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে বিক্রেতারা বলছেন, এবার তাঁরাও জানেন না এই বাজার কোথায় গিয়ে ঠেকবে।

রাজশাহী নগরের কয়েকটি দোকানে গতকাল সয়াবিনের তেলের সন্ধান করা হয়। দোকানে সয়াবিন তেলের বোতল নেই। এক দোকানদার বলেন, ‘কতটুকু লাগবে? এনে দিতে হবে।’ বেশির ভাগ দোকানদারের বক্তব্য, বাজারে সয়াবিন তেলের সরবরাহ কম।

নগরের সাহেববাজার এলাকার মুদিদোকানি আবুল কালাম আজাদের দোকানে সয়াবিন তেল নেই। তিনি বলেন, সয়াবিনের বাজারের ঠিক-ঠিকানা নেই। ১৭০ টাকা দিয়ে এক লিটার সয়াবিন কিনে তিনি ১৬৮ টাকায় বিক্রি করতে পারবেন না।

এ কারণে দোকানে তেল রাখছেন না। তেলের সংকট না থাকলে বাজারে টান পড়ত না। যাঁরা বিদেশ থেকে তেল আমদানি করেন, তাঁদের ধরলেই বোঝা যাবে কেন তেলের দাম বাড়ে। আর সাধারণ ক্রেতা মনে করেন, এই শহরের ব্যবসায়ীরাই ইচ্ছে করে দাম বাড়িয়ে দেন।

নগরের মাস্টারপাড়া বাজারের পাশে এক মুদিদোকান থেকে এক ক্রেতা ১ লিটার সয়াবিনের তেল কিনলেন ১৭৫ টাকা দিয়ে। তবে বোতলে গায়ে দাম লেখা ১৬৮ টাকা। ক্রেতা হামিদুর রহমান বলেন, অনেক দোকানে সয়াবিন তেল বিক্রিই করছে না। আবার অনেক জায়গায় এটা আরও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে কাকে কী বলবেন, বুঝতে পারছেন না।

নগরের সবচেয়ে বড় কাঁচাবাজার মণিচত্বর মাস্টারপাড়া বাজার। এখানে উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি জেলা থেকে সবজি আসে। এই বাজারে কেবল বেগুনের দাম গত এক সপ্তাহে ৫ টাকা কমেছে। এখন বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকা কেজিতে। আর সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে কেজিতে ৫ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত। এর মধ্যে করলার দাম কেজিতে এক দিনের ব্যবধানে ৫০ টাকা বেড়ে গেছে।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগীয় উপপরিচালক অপূর্ব অধিকারী বলেন, কয়েক দিন ধরে সয়াবিন তেলের বিষয়ে ভোক্তারা বেশি অভিযোগ দিয়েছেন। তাঁরাও অভিযান চালিয়েছেন। বাজারে তেলের সংকট নেই, কিছু ব্যবসায়ী তবু তেলের বেশি দামের আশায় বিক্রি করছেন না। বাজারে মোটামুটি সবকিছুর দাম বেড়ে গেছে। পেঁয়াজের কেজিও ২০ টাকা বেড়ে গেছে। মার্চের মাঝামাঝি নতুন পেঁয়াজ এলে দাম কমবে।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) রাজশাহী জেলার সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা বলেন, সয়াবিন তেলসহ অন্যান্য পণ্যের দাম বাড়তিই আছে। জেলা পর্যায়ে বাজার নিয়ন্ত্রণ করলে কোনো ফলাফল আসবে না। তেল আমদানিকারকদের নিয়ন্ত্রণ না করলে দাম কমবে না। বাজার নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি সরকারের কাছেই রয়েছে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে