রংধনুর সাত রঙে গোলাপি নেই কেন?

প্রকাশিত: ০৭-০৩-২০২২, সময়: ১১:৪৮ |

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : রংধনু সাধারণত বৃষ্টির পর আকাশে সূর্যের বিপরীত দিকে দেখা যায়। রংধনুতে সাতটি রঙের সমাহার দেখা যায়। দেখতে ধনুকের মতো বাঁকা হওয়ায় এটির নাম রংধনু। একে রামধনুও বলা হয়। সূর্যের আলো আর বৃষ্টির মিলনে ভেসে উঠে রংধনুর সাতটি রং। এই রংধনুর সাত রং নিয়ে কতো গান কতো কবিতার রচিত হয়েছে। রংধনুর সাত রং কাব্যিক মনে যেমন দোলা দেয়, তেমনই আঁচড় কাটে আর্টিস্টের তুলিতেও।

সাত রঙে সুসজ্জিত প্রকৃতির এই রংধনু। লাল, কমলা, হলুদ, সবুজ, আসমানি, নীল এবং বেগুনি- প্রিয় সব রঙই রয়েছে এতে। তবে খেয়াল করেছেন রংধনুর এই সাত রঙে কেন গোলাপি রং নেই! প্রকৃতির দ্বারা সৃষ্ট রংধনুতে গোলাপি রং থাকে না। পেইন্টিংয়ে রংধনুর রঙে গোলাপি রঙের আভা দেখতে পারেন, তবে তা শিল্পীর কাল্পনিক।

প্রকৃতির দ্বারা সৃষ্ট রংধনুতে গোলাপি রং থাকে না। পেইন্টিংয়ে রংধনুর রঙে গোলাপি রঙের আভা দেখতে পারেন, তবে তা শিল্পীর কাল্পনিক।

প্রকৃতির দ্বারা সৃষ্ট রংধনুতে গোলাপি রং থাকে না। পেইন্টিংয়ে রংধনুর রঙে গোলাপি রঙের আভা দেখতে পারেন, তবে তা শিল্পীর কাল্পনিক।
বিশেষজ্ঞরা জানান, রংধনুতে লাল আর বেগুনি রঙের অবস্থান বিপরীত দিকে। এই দুইয়ে মিলে গোলাপি আভা দেখা যেত। তবে লাল ও বেগুনির বিপরীত প্রান্তে অবস্থান হওয়ায় প্রকৃতির এই রঙের খেলায় হারিয়ে গেছে গোলাপি রংটি। যদিও এটি একটি সরলীকৃত ব্যাখ্যা। রংধনুতে নির্দিষ্ট রং দেখার পেছনে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাও রয়েছে।

বিজ্ঞান বলছে, যখন একই জায়গায় একটি নির্দিষ্ট সময়ে সূর্য এবং বৃষ্টি থাকে, তখন বৃষ্টির ক্ষুদ্র ফোঁটা সূর্যের আলোকে প্রতিসরণ করে। বর্ণালীর সাতটি রঙে বিভক্ত করে। এই সময় যদি সূর্যের আলো পেছনে থাকে এবং বৃষ্টি সামনে থাকে তবেই রংধনু দৃশ্যমান হতে পারে। আমরা সূর্যের আলোকে সাধারণত সাদা আলো মনে করি। তবে এটি সব দৃশ্যমান রঙের মিশ্রণ। তাই যখন এটি বৃষ্টির ফোঁটার মাধ্যমে প্রতিসরণ হয়, তখন আমরা এই রঙগুলো দেখতে পাই।

এটি বৃষ্টির ফোঁটার মাধ্যমে প্রতিসরণ হয়, তখন আমরা এই রঙগুলো দেখতে পাই

এটি বৃষ্টির ফোঁটার মাধ্যমে প্রতিসরণ হয়, তখন আমরা এই রঙগুলো দেখতে পাই
বিজ্ঞান আরো জানায়, রংধনুর রঙগুলো দৃশ্যমান বর্ণালী থেকে অভিক্ষিপ্ত এবং এগুলোর নিজস্ব তরঙ্গদৈর্ঘ্য রয়েছে। গোলাপি রং দৃশ্যমান বর্ণালীতে অস্তিত্বহীন। কারণ এটি দুইটি রঙের মিশ্রণ। এর নিজস্ব তরঙ্গদৈর্ঘ্য নেই।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গোলাপি আসলেই কোনো রং, নাকি এটিকে তৈরি করা হয়েছে তা নিয়ে অনেক যুক্তিও রয়েছে। রেডিও ল্যাবের রবার্ট ক্রুলউইচ একটি ব্লগ লিখেছেন। যেখানে তিনি ব্যাখ্যা করেছেন, গোলাপি রং কীভাবে মানুষের দ্বারা তৈরি হয়েছে। লাল এবং বেগুনি মিশ্রিত হয়ে গোলাপি রঙকে কল্পনার অংশ করে তোলে। কারণ এটির নিজস্ব তরঙ্গদৈর্ঘ্য নেই, এটি একটি অফিসিয়াল রঙ নয়। এদিকে অনেক বিজ্ঞানী এবং গোলাপি রঙের প্রেমিকরা এই অধিগ্রহণের বিরোধিতা করেছেন। তাদের মতে, অন্য সব রঙের মতোই গোলাপি রং আমাদের মস্তিষ্কের তৈরি।

জীববিজ্ঞানী টিমোথি এইচ. গোল্ডস্মিথ ব্যাখ্যা করেন, আমাদের মস্তিষ্কই সব রং তৈরি করে। তাই কে বলবে গোলাপি একটি অফিসিয়াল রং না। রংধনুতে যেমন গোলাপি রঙের অস্তিত্ব নেই, তেমনি বাদামী, কালো এবং সাদা রংও ​​নেই। এর কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা জানান, বাদামী রং সবুজ এবং লালের মিশ্রণ থেকে তৈরি হয়। আর এই দুটি রং কখনো স্পর্শ করে না। তাই রংধনুতে বাদামী রং কখনো দেখা যাবে না। রংধনুতে সাদা দেখতে পাই না কারণ সূর্যের আলো সাদা। এই সাদা আলোই রঙে পরিণত হচ্ছে। আর কালো রঙের উপস্থিতি নেই কারণ এটি অন্য সব রঙের অনুপস্থিতি।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলেন, রংধনুতে প্রচুর রং রয়েছে যা আমরা দেখতে পাচ্ছি না

তবে বিশেষজ্ঞরা বলেন, রংধনুতে প্রচুর রং রয়েছে যা আমরা দেখতে পাচ্ছি না
তবে বিশেষজ্ঞরা বলেন, রংধনুতে প্রচুর রং রয়েছে যা আমরা দেখতে পাচ্ছি না। তবে এর অর্থ এই নয় যে তারা সেখানে উপস্থিত নেই। রংধনুর মধ্যে অতিবেগুনি এবং ইনফ্রারেড আলো থেকে উত্পাদিত রং আছে। যা মানুষের চোখ প্রাকৃতিকভাবে দেখতে পারে না। যদিও মানুষের চোখ রঙের শেডগুলো ভিন্নভাবে গ্রহণ করবে। আমরা সবাই রংধনুতে একই রং দেখতে পাব। যদি রংধনুতে লাল এবং বেগুনি সংস্পর্শে থাকতো, তবে গোলাপি রং দেখা যেত। তবে সূর্যের আলো প্রতিসরিত হওয়ার কারণে এটি কখনই ঘটবে না।

উপরে