রাজশাহীতে নয়া পদ্ধতিতে বাড়ছে পেঁয়াজ বীজ উৎপাদন

প্রকাশিত: মার্চ ৭, ২০২২; সময়: ৩:২৬ অপরাহ্ণ |
রাজশাহীতে নয়া পদ্ধতিতে বাড়ছে পেঁয়াজ বীজ উৎপাদন

নিজস্ব প্রতিবেদক : হাত দিয়ে একটা একটা করে ফুলের পরাগায়ন করতে শ্রমিক খরচ বেড়ে যায়, সময়ও বেশি লাগে। এ জন্য কাপড় দিয়ে পরাগায়ন করা হচ্ছে। এতে বেড়েছে পেঁয়াজ বীজ উৎপাদনও।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার টুলটুলিপাড়ার রেজাউল করিম সাড়ে চার কাঠা জমিতে পেঁয়াজের বীজ চাষ করেছিলেন। মাত্র এটুকু জমি থেকে তিনি ২০ কেজি বীজ আহরণ করেছেন।

অপর দিকে তাঁর ভাই বাবলু রহমান দেড় বিঘা থেকে পেয়েছেন ২৮ কেজি বীজ। পেঁয়াজবীজের ফলনের এ তারতম্যের কারণ হচ্ছে পরাগায়ন পদ্ধতি। রেজাউল করিম কৃত্রিমভাবে হাতে পরাগায়ন করেছেন। আর তাঁর ভাই নির্ভর করেছিলেন প্রকৃতির ওপর।

কৃষকেরা বলেন, ফসলের পোকা দমনে নির্বিচার কীটনাশক ব্যবহার করায় উপকারী পোকা ও মৌমাছি মারা যাচ্ছে। সে জন্য প্রকৃতিনির্ভর পরাগায়ন ছেড়ে পেঁয়াজচাষিরা এখন কৃত্রিম পরাগায়ন করছেন। তাতেই পাওয়া যাচ্ছে এ সুফল।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এ বছর ১৭৪ মেট্রিক টন পেঁয়াজবীজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। স্থানীয় চাহিদা থাকে ৯০ থেকে ৯৫ মেট্রিক টন। বাকি বীজ বাইরে চলে যাবে।

২০২০-২১ মৌসুমে রাজশাহীতে ৩৫ কোটি ৪০ লাখ টাকার বীজ উৎপাদিত হয়েছে। দুই হাজার টাকা কেজি হিসাবে কৃষকেরা এ দাম পান। এর আগের বছর (২০১৯-২০) ছয় থেকে সাত হাজার টাকা কেজি হিসাবে রাজশাহীতে উৎপাদিত পেঁয়াজের বীজ বিক্রি হয়েছে।

অধিদপ্তর সূত্র আরও জানায়, ১৫ থেকে ৩০ নভেম্বর চাষাবাদ শুরু হয়। আর মার্চের ২৫ থেকে এপ্রিলের ১৫ তারিখের মধ্যে বীজ আহরণ করা হয়ে থাকে। পাঁচ মাসের এ ফসল জেলার মধ্যে গোদাগাড়ী উপজেলায় সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে।
বিজ্ঞাপন

কৃষকেরা বলেন, হাত দিয়ে যে পরাগায়ন হয়ে থাকে, তাকে হস্ত পরাগায়ন বলে। অর্থাৎ হাত দিয়ে পুরুষ ফুলের পরাগরেণু স্ত্রী ফুলের গর্ভমুণ্ডে স্থাপন করাকে হস্ত পরাগায়ন বলে। কিন্তু এভাবে পরাগায়ন করলে সময় বেশি লাগে।

তাই তাঁরা কৃষি বিভাগের পরামর্শে মার্কিন কাপড় দিয়ে পরাগায়ন করছেন। কাপড়টি খেতের সব ফুলের ওপর দিয়ে আলতোভাবে টেনে নিতে হয়। তাতেই পরাগায়ন হয়ে যায়।

পেঁয়াজবীজচাষি রেজাউল করিম জানান, তিনি কৃত্রিম উপায়ে পরাগায়ন ঘটিয়ে ভালো লাভ পেয়েছেন। এ পদ্ধতিতে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা খরচ বেশি পড়ে। কিন্তু ফলনে তা পুষিয়ে যায়।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক উম্মে সালমা জানান, রাজশাহীর চাষিরা উৎকৃষ্ট মানের পেঁয়াজবীজ উৎপাদন করেন। জেলার চাহিদা পূরণ করে এই বীজ এখন জেলার বাইরেও বিক্রি হয়। সূত্র- প্রথম আলো

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে