উত্তরবঙ্গে হটাৎ জ্বালানি সংকট

প্রকাশিত: মে ৭, ২০২২; সময়: ১১:৩৯ অপরাহ্ণ |
উত্তরবঙ্গে হটাৎ জ্বালানি সংকট

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় পেট্রোল ও অকেটেনের সংকট দেখা দিয়েছে। গত এক সপ্তাহ ধরে এই সংকট চলছে। জ্বালানি না পাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন গাড়ি চালকেরা।

পাম্প মালিকেরা বলছেন, সরবরাহ না থাকায় পেট্রোল অকটেন বিক্রি বন্ধ রেখেছেন। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের (বিপিসি) পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে ট্রেনের ওয়াগন সংকটের কারণে তেল পরিবহনে সমস্যা হচ্ছে। তাই সাময়িক সংকট দেখা দিয়েছে।

তবে তেল বিপণনকারী কোম্পানি যমুনা সংকটের কথা স্বীকার না করলেও কোম্পানিটির ডিপোর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন মূলত পেট্রোলের সংকট রয়েছে। পেট্রোল ব্যবহারকারী গাড়িগুলো বাধ্য হয়ে অকটেনের দিকে ঝুঁকেছে। ফলে অকটেনেও টান পড়েছে। বিপণণ কোম্পানির কর্মকর্তারা আরও জানিয়েছেন, ঈদের দীর্ঘ ছুটির কারণেও তেল পরিবহনে ব্যাঘাত ঘটেছে। এ কারণে সংকট বেড়েছে।

কুড়িগ্রামে মোটর সাইকেল চালক রাজারহাট উপজেলার অধিবাসী নুরন্নবী ও সদর উপজেলার বেলগাছা এলকার অধিবাসী পুরো জেলা শহর ঘুরে ২০০ টাকার ২ দশমিক ৩০ লিটার করে পেট্রোল পেয়েছেন। শনিবার দুপুর ১২টার দিকে জেলা শহরের খলিলগঞ্জ এলাকায় অবস্থিত মেসার্স এসএস ফিলিং স্টেশনে পেট্রোল ও অকটেনের মজুদ শেষ হওয়ায় বিক্রি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শহরের কেন্দ্রিয় বাস টার্মিনাল এলাকায় অবস্থিত মেসার্স সোনামনি ফিলিং স্টেশনে মজুদ কমে আসায় গত মঙ্গলবার (ঈদের দিন) থেকে রাত ১০টা থেকে পেট্রোল ও অকটেন বিক্রি বন্ধ রয়েছে।

পদ্মা অয়েল কোম্পানির আওতাভূক্ত ফিলিং স্টেশনের ম্যানেজার মিজানুর রহমান জানান, এই ফিলিং স্টেশনে ২৫ হাজার লিটার পেট্রোল এবং ১৫ হাজার লিটার অকটেন ধারণ ক্ষমতার দু’টি ট্যাংকার রয়েছে। শনিবার দুপুর ১২টায় পেট্রোলের মজুদ ৪৭১ লিটার এবং অকটেনের মজুদ ৪৫১ লিটারে নেমে আসে। এরপর বিক্রি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

তিনি জানান, তারা বাঘাবাড়ী, রংপুর ও পার্বতীপুর ডিপো থেকে পেট্রোল ও অকটেন সরবরাহ নিয়ে আসেন। বাঘাবাড়ী ডিপো থেকে গত ৩০ এপ্রিল ১৫ হাজার লিটার অকটেন এবং গত ৫ মে সাড়ে ৪ হাজার লিটার পেট্রোল সরবরাহ এসেছিল। এরপর আর আসেনি। ফলে মজুদ পরিস্থিতি বর্তমান অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে।

কুড়িগ্রামের মেসার্স সাহা ফিলিং স্টেশনের স্বত্বাধিকারী সমরজিৎ সাহা রিন্টু জানান, মজুদ কমে আসায় শুধু সরকারি যানবাহনে দেওয়ার পাশাপাশি মোটর সাইকেলে রেশনিং করে ১০০ টাকা থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত পেট্রোল এবং অকটেন দেওয়া হচ্ছে। এই পাম্পে গত বৃহস্পতিবার (৫ মে) বাঘাবাড়ী থেকে সাড়ে ৪ হাজার লিটার পেট্রোল আনা হয়েছিল। আর আসেনি। পেট্রোল ও অকটেন আনার জন্য গত দু’দিন ধরে দু’টি ট্যাংক লরি বাঘাবাড়ী ডিপোতে অপেক্ষা রয়েছে।

এদিকে, দিনাজপুর এলাকার পাম্পগুলো থেকে পেট্রোল উধাও হয়ে গেছে। পাম্পগুলোতে ‘পেট্রোল ও অকটেন নেই’ লেখা ঝুলছে। তবে খোলা বাজারে অতিরিক্ত দামে পেট্রোল বিক্রি হচ্ছে। দিনাজপুরের লিলি মোড়, সিএন্ডবি মোড়, বড়মাঠ বড়পুল, পুলহাট, পাসপোর্ট অফিস মোড়, বালুয়াডাঙ্গা, শিকদারহাটসহ বিভিন্ন স্থানে খুচরা পেট্রোল পাওয়া যাচ্ছে ১০০ থেকে ১৩০ টাকা লিটার দরে। যেখানে পেট্রোলের নির্ধারিত মূল্য ৮৯ টাকা লিটার। অনেকেই পেট্রোল না পেয়ে অকটেন ব্যবহার করছেন, যদিও অকটেনেরও মজুদ শেষের দিকে বলে জানিয়েছেন পাম্প মালিকরা।

মোটরসাইকেল চালক বিপ্লব হোসেন বলেন, ঠাকুরগাঁও থেকে দিনাজপুর পযন্ত যতগুলো পাম্প পড়েছে সবগুলোতেই খোঁজ নিয়েছি কিন্তু পেট্রোল নাই। খোলা তেল পাওয়া যাচ্ছে, কিন্তু পাম্পে নাই।

দিনাজপুরের বটতলী এলাকার মেসার্স সরকার পাম্পের কর্মচারী ইউসুফ আলী বলেন, পাম্পে পেট্রোল নাই। ক্রেতা আসলেও ঘুরে যাচ্ছেন। বটতলীর সমতা ফিলিং স্টেশনের হিসাবরক্ষনকারী হেলাল হোসেন বলেন, ডিপোতে তেল নাই। আমাদের পাম্পেও তেল নাই।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে