রাশিয়া থেকে তেল আমদানি কমাতে চায় ইউরোপ

প্রকাশিত: মে ৩১, ২০২২; সময়: ১০:৫৬ পূর্বাহ্ণ |
রাশিয়া থেকে তেল আমদানি কমাতে চায় ইউরোপ

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : রাশিয়ার কাছ থেকে তেল আমদানি দুই-তৃতীয়াংশ বন্ধ করতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নেতারা একমত হয়েছেন। এর ফলে সমুদ্রপথে রাশিয়া থেকে ইউরোপে তেল আমদানি বন্ধ হবে। ইউরোপের দেশগুলো রাশিয়া থেকে যে তেল আমদানি করে তার দুই-তৃতীয়াংশ আসে সমুদ্রপথে।

কিন্তু পাইপলাইনের মাধ্যমে তেল আনা আপাতত বন্ধ হচ্ছে না। রাশিয়ার ওপর এই নিষেধাজ্ঞা ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে এক ধরনের সমঝোতার মাধ্যমে হয়েছে। কারণ, হাঙ্গেরি এর বিরোধিতা করেছে। রাশিয়া থেকে পাইপলাইনে তেল আমদানির বন্ধের বিষয়ে তারা রাজী নয়।

ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের প্রধান চার্লস মিচেল বলেছেন, এই সমঝোতার ফলে রাশিয়া যুদ্ধে যে অর্থ ব্যয় করছে সেটির বড় উৎস বন্ধ হবে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়ার ওপর এনিয়ে ৬ষ্ঠ বারের মতো নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭টি দেশের সবগুলো অংশ নেয়।

মিচেল বলেন, রাশিয়ার সবচেয়ে বড় ব্যাংক এবং তিনটি রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যমের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার ব্যাপারে ইউরোপীয় নেতারা একমত হয়েছেন। রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বন্ধ করার বিষয়টি নিয়ে ইউরোপীয় নেতারা কয়েক ঘণ্টা ধরে বৈঠক করেছেন। কারণ, হাঙ্গেরি এর বিরোধিতা করছিল।

হাঙ্গেরি তার চাহিদার ৬৫ শতাংশ তেল পাইপলাইনের মাধ্যমে রাশিয়া থেকে আমদানি করে থাকে। রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বন্ধ করতে ইউরোপীয় কমিশন প্রথমে প্রস্তাব করেছিল। এজন্য একমাস আগে কমিশন তাদের সদস্য দেশগুলোর জন্য একটি আইনও তৈরি করেছিল। কিন্তু হাঙ্গেরির দিক থেকে সবচেয়ে বেশি বিরোধিতা আসে।

এছাড়া স্লোভাকিয়া এবং চেক রিপাবলিকের মতো যেসব দেশের সমুদ্রবন্দর নেই তারাও রাশিয়ার তেলের ওপর থেকে নির্ভরতা কমিয়ে আসতে সময় চেয়েছিল। অন্যদিকে বুলগেরিয়াতে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে রাশিয়া। তারাও কিছু সময় চেয়েছিল।

এই নিষেধাজ্ঞার ফলে সমুদ্রপথে রাশিয়া ইউরোপীয় ইউনিয়নে যে তেল রপ্তানি করে সেটি বন্ধ হবে। সমুদ্রপথ দিয়ে মূলত ইউরোপীয় দেশগুলো রাশিয়ার কাছ থেকে দুই-তৃতীয়াংশ তেল আমদানি করে থাকে।

ইউরোপে জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির কারণে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি পুরোপুরি বন্ধ করার বিষয়টিতে অনেক দেশ একমত হতে পারছে না। অন্যান্য জিনিসের মতো জ্বালানির মূল্যও বেশ উর্ধ্বমুখী। অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কায় ইচ্ছে থাকলেও রাশিয়ার তেলের ওপর পুরোপুরি নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার বিষয়টিতে থেকে সরে এসেছে ইউরোপীয় দেশগুলো।

ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডের লেইন বলেন, এই নিষেধাজ্ঞা আরো বিস্তৃত করার সুযোগ ছিল। কারণ, জার্মানি ও পোল্যান্ড এ বছরের মধ্যে রাশিয়ার কাছ থেকে ধীরে ধীরে পাইপলাইনের মাধ্যমে তেল আমদানি বন্ধ করে দিতে স্বেচ্ছায় সম্মত হয়েছে। হাঙ্গেরি, চেক রিপাবলিক এবং স্লোভাকিয়ার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, এর ফলে বাকি থাকবে ১০ থেকে ১১ শতাংশ।

ব্রাসেলসের এই বৈঠকে হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান বেশ কঠোর অবস্থার নেন। তিনি বলেন, জ্বালানি সরবরাহ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রীর ভাষায়, ‘আগে আমাদের সমাধান দরকার, তারপর নিষেধাজ্ঞা।’

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এই বৈঠকে ভার্চুয়ালি যোগ দেন। তিনি বলেন, ইউরোপীয় দেশগুলোকে নিজেদের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ বন্ধ করতে হবে। তিনি বলেন, রাশিয়ার কাছ থেকে তেল নিয়ে তারা শুধু দেশটিকে সহায়তা করছে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে