বিএনপির বিরুদ্ধে মাঠে নামছে ১৪ দল

প্রকাশিত: জুন ৩, ২০২২; সময়: ১১:৩৮ অপরাহ্ণ |
বিএনপির বিরুদ্ধে মাঠে নামছে ১৪ দল

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : বিএনপির বিরুদ্ধে ১৪ দলের শরিকদেরও মাঠে নামাতে চাইছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। প্রথমে ঢাকায় একটি সমাবেশ করবে ১৪ দল। এর দিন-তারিখ জানানো হবে। এরপর ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলায় সমাবেশ করা হবে। শুক্রবার বিকেলে নিউ ইস্কাটন রোডে ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমুর বাসায় এক বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা জানান, ‘পঁচাত্তরের হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিএনপির ছাত্রসংগঠন ছাত্রদলের মিছিলে এমন স্লোগানের সূত্র ধরে ১৪ দল কর্মসূচি নিচ্ছে।

নেতারা বলছেন, এ স্লোগানের মাধ্যমে বিএনপি আসলে অসাংবিধানিক পথে ক্ষমতায় যাওয়ার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করে। তারা হানাহানির রাজনীতির পথে হাঁটতে চাইছে। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হওয়া দরকার। ঢাকায় ১৪ দলের সমাবেশ কবে হবে, তা ঠিক করার জন্য আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলামকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি মহানগর আওয়ামী লীগ ও শরিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তারিখ ঠিক করবেন।

বৈঠকে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ১৪ দলের নেতারা। ২৫ জুন পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের দিনটি ঢাকাসহ সারা দেশে উদ্‌যাপনের পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। এই উদ্‌যাপনে ১৪ দলের শরিক দলগুলোর নেতা-কর্মীদের সাধ্যমতো শামিল হওয়ার আহ্বান জানায় আওয়ামী লীগ।

বৈঠক সূত্র জানিয়েছে, একাধিক শরিক দলের নেতা দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তাঁরা বলেন, সরকার যত ভালো কাজই করুক না কেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে না এলে মানুষ বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠবে। এর সুযোগ নেবে বিরোধী দলগুলো।

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে এক অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, দেশের চার থেকে পাঁচ কোটি মানুষের ক্রয়ক্ষমতা ইউরোপের সমপর্যায়ের। তিনি আরও বলেন, বড় গ্রুপগুলো চাল কিনে প্যাকেট করছে। উদাহরণস্বরূপ যে চাল বাজারে ৫০ টাকা, সেটি শুধু প্যাকেট করে ৭০ থেকে ৭৫ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। তারা গ্রাহক পাচ্ছে বলেই বিক্রি করতে পারছে।

এ বিষয়েও ১৪ দলের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। শরিক দলের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের কোনো কোনো নেতা এ বক্তব্যের সমালোচনা করেন বলে সূত্র জানায়।

সরকার নিম্ন আয়ের মানুষকে সামাজিক সুরক্ষার আওতায় আনার জন্য এক কোটি মানুষকে খাদ্যসহায়তা দেওয়ার যে ঘোষণা দিয়েছে, তাতে বাজারে খুব বেশি প্রভাব পড়েনি বলে ১৪ দলের নেতারা মনে করেন। এ জন্য নিম্নমধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্তকে সুরক্ষায় আনার পরামর্শ দেন তাঁরা। এ ক্ষেত্রে রেশন কার্ড চালু করা যায় বলে মত দেন ১৪ দলের নেতারা।

নেতারা অভিযোগ করেন, ব্যবসায়ীদের একটি সিন্ডিকেট দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে। সরকার রেশন কার্ড চালু করলে এসব অসাধু ব্যবসায়ীর অতি মুনাফা অর্জনের পথ বন্ধ হয়ে যাবে।

বৈঠকে প্রখ্যাত সাংবাদিক ও কলামিস্ট আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করা হয়। এ ছাড়া ১৪ দলের সাবেক মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিমের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ১৩ জুন আলোচনা সভা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বৈঠক শেষে ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু সাংবাদিকদের বলেন, দেশে সন্ত্রাস ও নতুন করে হত্যাকাণ্ড ঘটাতে চাইছে বিএনপি। ১৫ আগস্ট নিয়ে স্লোগান প্রমাণ করে, তারা নতুন ষড়যন্ত্র করছে। তিনি বলেন, বিএনপি যাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে, তাদের রাজনৈতিক সক্ষমতা কতটুকু, তা জানে ১৪ দল।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাতীয় পার্টি-জেপির সাধারণ সম্পাদক শেখ শহিদুল ইসলাম, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, গণ আজাদী লীগের সভাপতি এস কে সিকদার, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন প্রমুখ।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে