শতশত ঘুঘুর প্রাণ বাঁচলো পুলিশ

প্রকাশিত: আগস্ট ২২, ২০২২; সময়: ৮:১২ অপরাহ্ণ |
শতশত ঘুঘুর প্রাণ বাঁচলো পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাঘা : মুখবাঁধা প্লাষ্টিকের তিনটি ক্যারেটে প্রায় ২শতাধিক দেশীয় ঘুঘু নিয়ে নদী পার হয়ে ওপরে উঠে আসছিলেন সোহেল রানা (৩০) ও ইউনুছ মন্ডল(৪৫)। তা দেখে চোখ পড়ে যায় পুলিশের। বিষয়টি নজরে নিয়ে সংগীয় ফোর্স নিয়ে তাদের আটকে দেন বাঘা থানার এএসআই আব্দুর রহিম।

সোমবার(২২ আগষ্ট) উপজেলার গড়গড়ি ইউনিয়নের শিমুল তলা ফেরিঘাট এলাকা থেকে সোহেল রানা ও ইউনুছ মন্ডলকে আটক করে পাখীসহ তাদের থানায় নিয়ে আসেন এএসআই আব্দুর রহিম। চান্দু প্রমানিকের ছেলে সোহেল রানা বাঘা উপজেলার চরাঞ্চলের নীচ পলাশি গ্রামের বাসিন্দা আর মহসীন মন্ডলের ছেলে ইউনুছ মন্ডল একই উপজেলার আলাইপুর মন্ডলপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।

অফিসার ইনচার্জ(ওসি) সাজ্জাদ হোসেনকে বিষয়টি জানানোর পর মূহূর্তেই মুক্ত করেন বন্দী ঘুঘুগুলোকে। ঘুঘুগুলো তখনই মুক্তির আনন্দে উড়ে যায় আকাশে। আর থানার ভেতরে থাকা উৎসুক মানুষ ও পুলিশ সদস্যরা হাততালি দিয়ে উল্লাস প্রকাশ করতে থাকেন। সবাই বলেছেন ‘ প্রাণ বাঁচলো শতশত ঘুঘুর, মহান একটি কাজ হলো।’

ওসি সাজ্জাদ হোসেন বলেন,দেশীয় ঘুঘুসহ অনেক পাখি এখন বিলুপ্তির পথে। তার অফিসার যে কাজটি করেছে, তা প্রশংসনীয়। তিনি বলেন, বাণিজ্যিকভাবে তারা জাল পেতে ঘুঘুগুলো ধরেছিল। তবে যাদের আটক করা হয়েছে তারা আর এভাবে পাখি ধরবেনা বলে অঙ্গিকার করেছে। ঘুঘুগুলো মুুক্ত হবার সাথে সাথে সবাই হাততালি দিয়ে উল্লাস প্রকাশ করেন। ওসি বলেন,শুধু মানুষই নয়, প্রত্যেকটা প্রাণেরই মূল্য আছে। প্রতিটি প্রাণ রক্ষা আমাদের কর্তব্যের ভেতরেই পড়ে। বিষয়টি এভাবে মাথায় নিয়েই আমরা কাজ করি। ছোট্ট পাখিগুলোকে মুক্ত করতে পেরে আমাদেরও ভালো লাগছে।’

শাহদৌলা সরকারি কলেজের রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক আব্দুল হানিফ মিঞা বলেন,এক সময় বাঘার গ্রামগঞ্জের মাঠে-ঘাটে, বনে-জঙ্গলে, গাছে গাছে জাতীয় পাখি দোয়েলসহ নানা ধরনের পাখি দেখা গেলেও কালের আবর্তে এখন আর চিরচেনা সেই পাখি দেখা যায় না, পাখিদের কলরবে মুখর গ্রামের মেঠো পথ এখন পাখি শূন্য হতে চলছে। বনে জঙ্গলে গাছে পাখি দেখার সেই অপরুপ দৃশ্যপট পাল্টে যাচ্ছে। দুষ্কর হয়ে পড়েছে পাখির দেখা। কয়েক বছর আগেও মানুষের ঘুম ভাঙতো পাখির ডাকে। তখন বোঝা যেতো ভোর হয়েছে। কিন্তু এখন যেন সেই পাখির ডাক হারিয়ে গেছে, এখন আর গাছ গাছালিতে পাখির ডাক নেই।

তিনি বলেন, বনাঞ্চলের পরিবেশ দূষণ, নির্বিচারে গাছ কাটা, জমিতে কিটনাশকের যথেচ্ছা ব্যবহার, পাখির বিচরণ ক্ষেত্র ও খাদ্য সংকট আর জলবায়ুর পরিবর্তনের প্রভাবে বিলুপ্তির পথে দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন পাখি।

উপজেলা প্রাণি সম্পদ অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ডাঃ রোকনুজ্জামান বলেন,বণ্যপ্রাণী আইন মতে যে কোন পাখি শিকার ও নিধন করা অপরাধ। যারা ধরেছে তারা নিঃসন্দেহে অপরাধ করেছে। তবে পাখিগুলো মুক্ত করে পুলিশ মানবতার পরিচয় দিয়েছে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে