মধ্যরাতেও উত্তপ্ত রাবি, চারুকলার রেলগেটে শিক্ষার্থীদের অবস্থান

প্রকাশিত: মার্চ ১২, ২০২৩; সময়: ১:২৫ পূর্বাহ্ণ |
মধ্যরাতেও উত্তপ্ত রাবি, চারুকলার রেলগেটে শিক্ষার্থীদের অবস্থান

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাবি : স্থানীয়দের সাথে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ কিছুটা বন্ধ হলেও এখনো উত্তপ্ত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি)। শনিবার (১১ মার্চ) সন্ধ্যা ছয়টা থেকে শুরু হওয়া এই সংঘর্ষ রাত বারোটায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিচ্ছিন্নভাবে চলছে। শিক্ষার্থীদের একাংশ চারকলা অনুষদ সংলগ্ন রেলগেটে অবস্থান নেয়। এতে রাজশাহী-ঢাকা রুটের ধুমকেতু ট্রেন বাতিল করে কর্তৃপক্ষ।

এদিকে ঘটনাস্থলে পুলিশ এবং র্যাবের পাশাপাশি বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। রাত এগারোটার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাজশাহী বিজিবি-১ ব্যাটেলিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাব্বির আহমেদ।

তিনি জানান, ঘটনস্থলে সাত প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। তারা রাজশাহী ঢাকা মহাসড়কের বিনোদপুরে অবস্থান করছেন।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গুরুতর আহত অর্ধশতাধিক ব্যক্তি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এরমধ্যে ১ জন বাদে সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে অনেকের প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। আহতের পরিমাণ বেড়েই চলেছে।

এরআগে, বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা বিনোদপুর পুলিশ ফাঁড়িসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচীর ঘেঁষে থাকা দোকানগুলোতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জলকামান ও টিয়ারসেল ছুড়ছে পুলিশ। শিক্ষার্থীদের ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানান, পুলিশের টিয়ারশেলের আঘাতে প্রায় প্রায় বিশজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।

অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা থাকেন এমন কয়েকটি মেসেও স্থানীয়রা হামলা করেছেন বলেছেন অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, পরিস্থিতি বর্তমানে কিছুটা শান্ত আছে, কিন্তু এখনো ছাত্রদের মাঝে আতংক কাজ করছে। পুলিশ, র্যাব এবং বিজিবি ঘটনাস্থলে টহল দিচ্ছে।

মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও, তিনি কল রিসিভ না করায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

এদিকে স্থানীয়দের সাথে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের জেরে বিশ্ববিদ্যালয় দুইদিন বন্ধ ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শনিবার (১১ মার্চ) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, সংঘর্ষের ঘটনাটির শুরুর বিষয়টির মীমাংসা করতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া ঘটনাস্থলে গেলে তার বাইকে আগুন লাগিয়ে দেয় স্থানীয়রা।

স্থানীয়দের হামলায় আহত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী আল জাবের আহমেদ যুগান্তরকে বলেন, বাসের কন্ডাক্টর ও স্থানীয়দের হামলা থেকে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকে রক্ষা করতে ঘটনাস্থলে যাই। এ সময় তারা আমাদের ওপর হামলা করে। এতে আমাদের অর্ধশতাধিক ছাত্র আহত হয়েছেন। আমরা সবাই হাসপাতালে এসেছি চিকিৎসা নিতে।

চারুকলা অনুষদের আহত শিক্ষার্থী আকাশ জানান, আমি রাস্তার উপরে ছিলাম হঠাৎ, স্থানীয়রা আক্রমণ করেন। এলোপাতাড়ি মারতে থাকে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বগুড়া থেকে ইসলাম ট্রাভেলসের বাসে রাজশাহী আসছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী আলামিন আকাশ। বাসে সিটে বসাকে কেন্দ্র করে গাড়ির ড্রাইভার শরিফুল ও সুপারভাইজার রিপনের সাথে কথাকাটাকাটি হয় আকাশের।

এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনোদপুর গেট এসে আবারো কন্টাক্টারের সাথে ঝামেলা বাধে। তখন স্থানীয় এক দোকানদার এসে শিক্ষার্থীদের সাথে তর্কে জড়ান। একপর্যায়ে উভয়র মধ্যে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে জড়ো হন এবং স্থানীয় দোকানদারে উপর চড়াও হন।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে