বিক্ষোভে শিক্ষার্থীদের জড়ো হতে মসজিদের মাইকে আহ্বান

প্রকাশিত: মার্চ ১২, ২০২৩; সময়: ১:১৫ অপরাহ্ণ |
বিক্ষোভে শিক্ষার্থীদের জড়ো হতে মসজিদের মাইকে আহ্বান

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষের ঘটনায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ মিছিল চলছে। বিক্ষোভে অংশ নিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে হলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের জড়ো করছেন আন্দোলনরতরা। মিছিলে শিক্ষার্থীদের অংশ নিতে হলের মসজিদের মাইকে আহ্বান জানাতেও দেখা গেছে।

রোববার (১২ মার্চ) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন হলের উদ্দেশ্যে পদযাত্রা শুরু করেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার থেকে মতিহার হল হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এস এম হল, নবাব আব্দুল লতিফ হল, মাদারবক্স হল, শহীদ জিয়াউর রহমান হল, হবিবুর রহমান হলসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সব হলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে অংশগ্রহণের আহ্বান জানানো হয়।

আমীর আলী হলের মসজিদের মাইকে বিক্ষোভকারীরা বলেন, একটি জরুরি এলার্ম। আমার ভাইদের রক্তে ক্যাম্পাস রঞ্জিত। আপনারা হলে বসে না থেকে আন্দোলনে যোগদান করুন। এখন আর কোনো দল নেই, আমরা সবাই রাবিয়ান। দ্রুত হল থেকে বের হয়ে প্রশাসন ভবন যাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।

এদিকে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষের ঘটনায় প্রশাসন ভবনে তালা দিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করছেন শিক্ষার্থীরা। রোববার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে যোগ দেন।

বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের শতশত ভাই আহত হয়ে মেডিকেল ভর্তি আছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে। প্রশাসনের ঘুমন্ত চেহারা আমরা অনেক দেখেছি। গতকালের ঘটনায় আমরা প্রশাসনের কাউকেই পাশে পাইনি।

এসময় প্রক্টরের পদত্যাগের দাবি করেন শিক্ষার্থীরা। প্রশাসন ভবনের পর উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করে তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলেও হুমকি দেন।

অন্যদিকে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষের ঘটনায় ১২ ও ১৩ মার্চ সব ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শনিবার (১১ মার্চ) রাতে অনিবার্য কারণ দেখিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেছেন রাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বগুড়া থেকে ‘মোহাম্মদ’ নামের একটি বাসে রাজশাহী যাচ্ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের এক শিক্ষার্থী। বাসের সিটে বসাকে কেন্দ্র করে চালক শরিফুল ও তার সহযোগী রিপনের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় ওই শিক্ষার্থীর। বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বিনোদপুর বাজারে বাস থেকে নামার সময় তাদের আবারও কথা কাটাকাটি হয়। এসময় বিনোদপুর বাজারের একজন ব্যবসায়ী বাসচালকের পক্ষ নিয়ে কথা বলেন। তখন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে হাতাহাতি হয় তার।

খবর পেয়ে সেখানে যান বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া। এসময় ব্যবসায়ীরা তার মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন। ধাওয়া দিয়ে তাকে ক্যাম্পাসের ভেতরে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। এতেই বড় হয়ে যায় ঘটনাটি।

খবর পেয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আবাসিক হল থেকে বের হয়ে বিনোদপুর গেটের পাশে অবস্থান নেন। আর ব্যবসায়ীরা অবস্থান নেন রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়কে বিনোদপুর বাজারে। এক পক্ষ আরেক পক্ষকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে। এতে আহত হন অনেক শিক্ষার্থী। ব্যবসায়ীদের মধ্যেও আহত হন অন্তত ১০ জন।

এদিকে, বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পুলিশ। তবে রাত ১০টার পর ফের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের বাইরে বেরিয়ে পড়েন। এসময় তারা বিক্ষোভ করেন।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে