সিটি নির্বাচন, প্রথম দিনে ১৭ মনোনয়ন ফরম বিক্রি

প্রকাশিত: এপ্রিল ৯, ২০২৩; সময়: ১০:০০ অপরাহ্ণ |
সিটি নির্বাচন, প্রথম দিনে ১৭ মনোনয়ন ফরম বিক্রি

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীসহ পাঁচ সিটি করপোরেশনে মেয়র পদে নির্বাচনের জন্য দলীয় মনোনয়নের জন্য আবেদন ফরম বিক্রি শুরু করেছে আওয়ামী লীগ। রোববার প্রথম দিনে ১৭ মনোনয়ন ফরম বিক্রি হয়েছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান।

রোববার সকালে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডিস্থ রাজনীতির কার্যালয়ে এই মনোনয়নের আবেদন ফরম বিক্রি শুরু হয়। দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীরা আগামী ১২ এপ্রিল পর্যন্ত আবেদন ফরম সংগ্রহ ও জমা দিতে পারবেন।

মেয়র পদে নির্বাচনের জন্য দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করা হয়েছে প্রথম দিনে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের জন্য ৭টি, খুলনা সিটি করপোরেশনের জন্য ১টি, বরিশাল সিটি করপোরেশনের জন্য ৪টি ও সিলেট সিটি করপোরেশনের জন্য ৫টি। তবে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের জন্য প্রথম দিনে কেউ মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেননি।

গাজীপুরে ফরম নিয়েছেন সাতজন

আওয়ামী লীগের দপ্তর সূত্র জানিয়েছে, গাজীপুরে যে সাতজন দলীয় ফরম সংগ্রহ করেছেন, তাঁদের মধ্যে আছেন বর্তমান ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান ওরফে কিরণ এবং যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেলের চাচা মতিউর রহমান। আছেন গাজীপুর মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক কামরুল আহসান সরকার, ২৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য মেজবাহ উদ্দিন সরকার, মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম, মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী ইলিয়াস আহম্মেদ ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সাবেক সদস্য আবদুল্লাহ আল মামুন।

তবে বিতর্কিত মন্তব্য করে গাজীপুর সিটির মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত জাহাঙ্গীর আলম ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লাহ খান এখনো ফরম নেননি। গাজীপুর আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, এই দুজন আসলে দলের উচ্চপর্যায়ের সংকেতের অপেক্ষায় রয়েছেন। কারণ, তাঁদের দুজনকেই আওয়ামী লীগের মনোনয়নের শীর্ষ দাবিদার হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

বরিশালে ফরম নিয়েছেন মেয়রের চাচা

বরিশাল সিটি করপোরেশনের বর্তমান মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ প্রথম দিন দলীয় ফরম সংগ্রহ করেননি। তবে তাঁর চাচা আবুল খায়ের আবদুল্লাহ ওরফে খোকন সেরনিয়াবাত ফরম নিয়েছেন। আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের আরও তিনজন ফরম সংগ্রহ করেছেন। তাঁরা হলেন মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহমুদুল হক খান, মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জসিম উদ্দিন ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান। তবে দলের সূত্র বলছে, আবুল খায়ের আবদুল্লাহর পক্ষেই সাদিক আবদুল্লাহকে চ্যালেঞ্জ জানানোর সুযোগ আছে। কারণ, দুজনের একজন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাগনে। অন্যজন ভাগনের ছেলে। বাকি যাঁরা ফরম সংগ্রহ করেছেন, তাঁদের সম্ভাবনা কম বলেই মনে করছেন দলের নেতারা।

সিলেটে প্রথম দিনেই পাঁচজনের ফরম সংগ্রহ

সিলেটে কয়েক মাস ধরেই ৮-৯ জন প্রার্থীর সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা চলছে। প্রথম দিন পাঁচজন ফরম সংগ্রহ করেছেন। এর মধ্যে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে দলের শীর্ষ পর্যায়ের পছন্দের প্রার্থী বিবেচনা করা হচ্ছে। এর বাইরে আজ যাঁরা ফরম সংগ্রহ করেছেন, তাঁদের মধ্যে আছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আসাদ উদ্দিন আহমদ, মহানগর সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন। আছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আরমান আহমেদ ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজাদুর রহমান।

আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্র বলছে, সিলেটে আরও বেশ কয়েকজন প্রার্থী মনোনয়ন সংগ্রহ করবেন। তবে লড়াই হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রবাসী বনাম স্থানীয়। স্থানীয় আওয়ামী লীগের আগ্রহী প্রার্থীরা প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়েছেন যে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বাইরে যে কাউকে মনোনয়ন দিলে সবাই একজোট হয়ে কাজ করবেন।

খুলনায় ফরম নিয়েছেন শুধু মেয়র খালেক

খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি তালুকদার খালেক আজ প্রথম দিনই ফরম সংগ্রহ করে অনেকটাই জল্পনার অবসান ঘটিয়েছেন। তবে মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা না থাকলেও খুলনায় আরও দু-একজন ফরম কিনবেন বলে দলের নেতারা মনে করছেন।

রাজশাহীর কেউ ফরম নেননি

রাজশাহী সিটি করপোরেশনে বর্তমান মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের বাইরে অন্য কারও প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা কম। এ জন্য সেখান থেকে প্রার্থী হওয়ার তোড়জোড় নেই। খায়রুজ্জামান লিটন সোমবার মনোনয়নপত্র ফরম সংগ্রহ করবেন।

এদিকে, চতুর্থবারের মতো রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে প্রার্থী হতে যাচ্ছেন এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। রোববার দুপুরে সংসদ ভবনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাত করে বেরিয়ে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, “আজ দলীয় সভাপতির সঙ্গে সাক্ষাত করেছি। এবারও আমি সিটি করপোরেশনে নির্বাচন করছি। সোমবার দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করব এবং মঙ্গলবার জমা দেব। এর পর রাজশাহী ফিরে নির্বাচনের প্রস্তুতি ও প্রচার শুরু করবো বলেন খায়রুজ্জামান লিটন।

রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের এক প্রভাবশালী নেতা বলেন, ‘‘মেয়র লিটন ওমরাহ করতে সৌদি আরব গিয়েছিলেন। শনিবার তিনি দেশে ফিরেছেন। রোববার দুপুরে সংসদ ভবনে গিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাত করেন লিটন। দুপুর ২টার দিকে তিনি সংসদ ভবন থেকে বের হয়ে আসেন। এর পর তিনি মেয়র পদে নির্বাচন করবেন বলে রাজশাহীর নেতাদের জানান।’’

রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ রোববার দুপুরে বলেন, “আপাতত রাজশাহী সিটিতে মেয়র খায়রুজ্জামান লিটনের বিকল্প নেই। আমার জানা মতে, দলীয় প্রধান তার (লিটন) প্রার্থিতা চূড়ান্ত করেছেন। তাকে দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে জমা দিতে বলেছেন।”

তিনি আরও বলেন, “যেহেতু দলীয় প্রধান তার (লিটনে) কথা বলেই দিয়েছেন সে ক্ষেত্রে আর কারও দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহের সম্ভাবনা নেই।”

স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশের প্রথম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ এম কামারুজ্জামানের ছেলে খায়রুজ্জামান লিটন ২০০৮ সালে প্রথমবার রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হন। ২০১৩ সালের নির্বাচনে তিনি বিএনপির প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের কাছে পরাজিত হন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে দ্বিতীয়বারের মত মেয়র পদে নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের এই নেতা।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে