ঢাকার ৪ শতাংশের বেশি বাড়িতে এডিস মশা

প্রকাশিত: এপ্রিল ১৪, ২০২৩; সময়: ৪:১০ অপরাহ্ণ |
ঢাকার ৪ শতাংশের বেশি বাড়িতে এডিস মশা

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : রাজধানীর ৪ শতাংশের বেশি বাড়িতে এডিস মশার উপস্থিতি রয়েছে। যে মশা ডেঙ্গির ভাইরাসের বাহক।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকার চেয়ে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় এডিস মশার উপস্থিতি কিছুটা বেশি পাওয়া গেছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এডিসবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির আওতায় পরিচালিত বর্ষাকাল-পরবর্তী জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। রাজধানীর মহাখালীর জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে এক সেমিনারে জরিপের ফলাফল বৃহস্পতিবার প্রকাশ করা হয়।

এতে জানানো হয়, এ বছরের ২৬ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকার ১০৮ ওয়ার্ডে এ জরিপ চালানো হয়। এর মধ্যে উত্তর সিটির ৪০ এবং দক্ষিণ সিটির ৫০ ওয়ার্ডের তিন হাজার ১৫০টি বাড়িতে জরিপ করা হয়। জরিপে ১২৭টি বাড়িতে এডিস মশা পাওয়া যায়, যা শতকরা হারে ৪ দশমিক ০৩ শতাংশ।

কোনো এলাকায় এডিস মশার লার্ভার উপস্থিতি হিসাব করা হয় ব্রুটো ইনডেক্সের মাধ্যমে। এ ইনডেক্স ২০-এর বেশি হলেই তাকে ঝুঁকিপূর্ণ বলা হয়। উত্তর সিটির কোনো ওয়ার্ডে মশার ব্রুটো ইনডেক্স ২০ পাওয়া যায়নি। ৩, ২৩, ২৬ ও ৩৮ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় ব্রুটো ইনডেক্স ছিল ১০-এর বেশি। দক্ষিণ সিটি এলাকার ১২ নম্বর ওয়ার্ডে ব্রুটো ইনডেক্স পাওয়া গেছে ২৪ দশমিক ১৪ শতাংশ। এছাড়া ২, ১৬ ও ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে ব্রুটো ইনডেক্স ১০-এর বেশি পাওয়া গেছে। সমীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জেলা পর্যায়ের এডিস মশার জরিপে দেখা গেছে, কক্সবাজারে ৯৭ দশমিক ৩ শতাংশ এডিস ইজিপ্টি এবং ২ দশমিক ৭ শতাংশ এডিস অ্যালবোপিকটাস ছিল। মাদারীপুর ও বরগুনা পৌরসভায় শতভাগ এডিস অ্যালবোপিকটাস প্রাদুর্ভাব ছিল। তবে একই সময়ে চাঁদপুর পৌরসভায় কোনো এডিস মশা পাওয়া যায়নি।

সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার। তিনি বলেন, বর্ষা-পরবর্তী জরিপ দিয়ে মশার উপদ্রব কেমন হবে তা বোঝা যায় না। কারণ এ সময় বৃষ্টি কম থাকে। এপ্রিল-মে মাসে যে জরিপ হবে তার ফলাফল দিয়ে বোঝা যাবে এ বছর পরিস্থিতি কেমন হবে। এডিস মশার একটা সাইকেল (জীবন চক্র) থাকে, ফেব্রুয়ারিতে যে সাইকেল ছিল সেটা এখন নেই। নতুন সাইকেল শুরু হয় এপ্রিলে। সেটা ধরে নতুন ট্রেন্ড কী হতে পারে তা ধরা যাবে। সেজন্য অতিদ্রুত বর্ষা-পূর্ববর্তী জরিপ করতে হবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর বলেন, ডেঙ্গি আক্রান্ত হলে মারা যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। এ কারণে ডেঙ্গি প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা রাখা জরুরি। এ জরিপের কারণে কোন এলাকা ঝুঁকিপূর্ণ তা জানা যাবে। সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নিতে সিটি করপোরেশনকে সহায়তা করবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে, ১ জানুয়ারি থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সারা দেশে ৯০১ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের। এ রোগে আক্রান্ত হয়ে গত বছর ৬২ হাজার ৩৮২ জন হাসপাতালে ভর্তি হন। তাদের মধ্যে রেকর্ড ২৮১ জনের মৃত্যু হয়। কেবল ডিসেম্বরেই পাঁচ হাজার ২৪ জন ডেঙ্গি রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, মৃত্যু হয় ২৭ জনের।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে