ঈদে কোরবানির পশু হাট কাঁপাতে আসছে নওগাঁর সাদা পাহাড় ও কালা পালোয়ান

প্রকাশিত: জুন ৫, ২০২৩; সময়: ৮:০৫ অপরাহ্ণ |
ঈদে কোরবানির পশু হাট কাঁপাতে আসছে নওগাঁর সাদা পাহাড় ও কালা পালোয়ান

নিজস্ব প্রতিবেদক, নওগাঁ : চার বছর আগে দুইটি দেশী জাতের গাভী পালন শুরু করেছিলেন নওগাঁর শামীম ও তিথি দম্পতি। সেই গাভীতে নওগাঁ প্রানীসম্পদ অধিপ্তরের পরামর্শ এবং সহযোগিতায় ফ্রিজিয়ান জাতের বীজ দেওয়া হয়। তিন বছর আগে সেই বীজ থেকে জন্ম নেওয়া আজকের প্রায় ২৪ মন ওজনের ফ্রিজিয়ান ষাঁড় সাদা পাহাড় এবং ২৩ মন ওজনের কালা পালোয়ান। দৈনিক ৩-৫ বার গোসল আর প্রতিদিন ৮-১০ কেজি খাবার খেয়ে থাকে। ষাঁড় দুটি প্রতি মাসে ২৫-৩০ হাজার টাকার খাবার খেয়ে থাকে।

নওগাঁ সদর উপজেলার বোয়ালিয়া ইউনয়নের চৌধুরী পাড়ায় ঢুকতে দেখা মিলবে ষাঁড় দুটির। সাদা পাহাড়ের উচ্চতা প্রায় ৫ফিট ৭ ইঞ্চি আর কালা পালোয়ানের উচ্চতা প্রায় ৫ ফিট ৫ ইঞ্চি। সাদা পাহাড়ের উচ্চতা বেশি হওয়ায় গোয়াল ঘর থেকে তাকে বের করা সম্ভব হয় না আর কালা পালোয়ানকে মাঝে মাঝে গোয়াল ঘর থেকে বের করেন খামারি। প্রায় গরু দুটি দেখতে ভীড় জমান এলাকাবাসি।

চাকুরী সুত্রে শামীম ঢাকায় থাকেন দীর্ঘ দিন । তার স্ত্রী তিথি বেগম ষাঁড় দুটিকে নিজ সন্তানের পরমযত্নে লালন পালন করে যাচ্ছেন। শামীম মাসে এক থেকে দুইবার বাড়িতে এসে ষাঁড় দুটির বাড়তি যত্ন নেন। এছাড়া প্রতিদিনের খাবার , গোসল করানো , গোয়াল ঘর পরিস্কার করা থেকে যাবতীয় কাজ করে থাকেন তার স্ত্রী তিথি বেগম। খামারি শামীম হোসেন জানান- দীর্ঘ তিন বছর যাবৎ সাদা পাহাড় আর কালা পালোয়ানকে পরম যত্নে লালন পালন করে আসছেন। ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড় হওয়ায় খুব দ্রুত এর গ্রোথ বৃদ্ধি পেয়েছে সাথে ওজনও। ষাঁড় দুটিকে এবারের কোরবানীর পশুর হাটে বিক্রি করবেন তিনি। ২৪ মন ওজনের সাদা পাহাড়ের দাম ৬লক্ষ ৫০ হাজার আর ২৩ মন ওজনের কালা পালোয়ান এর দাম ৬ লক্ষ টাকা মুল্য তিনি নির্ধারন করেছেন । এর কম বেশি দামে তিনি এইবারের ঈদে গরু দুটি বিক্রি করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

এদিকে শামীমের স্ত্রী তিথি বেগম জানান- সাদা পাহাড় আর কালা পালোয়ান এর দৈনন্দিন খাবার তালিকায় ভুট্টার আটা, গমের ভুঁশি, মসুরের ভুঁশি, ছোলা, কুঁড়া, লালী, ঘাস, খড় , ভাত খেয়ে থাকে। দৈনিক চার বেলা খাবার দিতে হয় তাকে আর তিন থেকে চার বার গোসল করানো লাগে। প্রতিদিন ভোড় বেলা থেকে প্রায় মধ্যরাত পর্যন্ত তাদের যত্ন নিতে হয়। মায়ায় জড়ানো ষাঁড় দুটিকে আশ্রু জলে বিদায় দিতে চান তিনি।

এদিকে ষাঁড় দুটিকে লালন পালনে অনেক পরিশ্রম হওয়ার কথা জানিয়ে শামীমের পরিবার জানায় – তার ছেলে ও বৌমা অনেক কষ্টে ষাঁড় দুটি লালন পালন করছেন দীর্ঘ তিন বছর যাবৎ। কোরবানীর ঈদে ষাঁড় দুটি বিক্রি হলে তাদের কষ্ট কিছুটা লাঘব হবে । ভালো দামে সাদা পাহাড় আর কালা পাহাড় বিক্রি হবে বলে আশা করছেন তারা।

এদিকে নওগাঁ জেলা প্রানীসম্পদ কর্মকর্তা মহির উদ্দিন জানান- বর্তমানে এই জাতের ষাঁড়ের গ্রোথ অনেক বেশী হয়ে থাকে । এতে করে খামারিরা অল্প সময়ে বেশী লাভের মুখ দেখে। এই দম্পতি যথা সময়ে প্রানীসম্পদ বিভাগের পরামর্শ নেওয়ায় এখনো পর্যন্ত বেশ ভালো অবস্থানে আছে। বর্তমানে খুব সহজে প্রতিটি জেলা উপজেলা থেকে অনলাইন এর মাধ্যমে কোরবানীর পশু কেনা বেচা করা যায়। সাদা পাহাড় আর কালা পালোয়ানকে বিক্রি’র জন্য জেলা প্রানীসম্পদ বিভাগ যথাযথ সহযোগিতা করবে বলে তিনি জানান।

পরম মায়া মমতায় লালন পালন করা সাদা পাহাড় ও কালা পাহাড় কে ভালো দামে বিক্রি জন্য ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষন করেছেন শামীম ও তিথি দম্পতি।

 

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে