নাটোরের ফসলি জমি রক্ষায় জনস্বার্থে আদালতে মামলা দায়ের

প্রকাশিত: জুন ৮, ২০২৩; সময়: ৬:১৫ অপরাহ্ণ |
নাটোরের ফসলি জমি রক্ষায় জনস্বার্থে আদালতে মামলা দায়ের

নিজস্ব প্রতিবেদক, নাটোর : নাটোরের লালপুরে অবৈধভাবে তিন ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে বিক্রি এবং অবৈধ ড্রাম ট্রাকে করে মাটি পরিবহনে সড়ক ও মহাসড়ক ক্ষতি সাধনের ঘটনায় আদালতের জনস্বার্থে মামলা করেছেন মানবাধিকার কর্মী ও সাংবাদিক জাকির হোসেন।

নাটোরের লালপুর আমলী আদালতের স্টেনোগ্রাফার মহুয়া আফরোজ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, তিন ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে বিক্রি এবং অবৈধ ট্রাকে ড্রাম করে মাটি পরিবহনে সড়ক ও মহাসড়ক ক্ষতি সাধনের ঘটনায় বুধবার আদালতে মামলা করেন জাকির হোসেন। আদালত মামলাটি আমলে গ্রহন পিবিআই (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেসন) পুলিশ সুপারকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার আদেশ দেন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোসলেম উদ্দিন।

পিবিআই নাটোরের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. শরিফ উদ্দিন বৃহস্পতিবার আদালতের আদেশ হাতে পেয়ে পুলিশ পরিদর্শক মো. নাসিরুল ইসলামকে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করেন।

স্টেনোগ্রাফার মহুয়া আফরোজ আরো বলেন, নালিশী দরখাস্তে সংক্ষেপে বলা হয় আসামীগণ পরস্পর যোগসাজসে সরকার অনুমতি ব্যতিত ফসলি চাষের জমি হতে মাটি কেটে অবৈধ লাইসেন্স বিহীন ট্রাক্টরকে সড়ক ও মহাসড়ক দিয়ে পরিবহনের সময় পাকা রাস্তা এবং হাইওয়ে রাস্তার ভেতরে মাটি ফেলে রাস্তা নষ্ট করে লাইসেন্স বিহীন ইট ভাটা সহ বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করছে।এর ফলে সড়ক মহাসড়কে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে।

গত ২৯ মে সকাল ১১টার দিকে লালপুর থানাধীন নান্দরায়পুর হযরত আলীর ফসলি জমিতে পুকুর খননের ভিডিও ধারণ ও স্থির চিত্র ধারণ করলে হযরত আলী, মো. নাজিম এবং মো. মিনাল লালপুর উপজেলা শাখার বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের সদস্য জাকিরকে হুমকি ধামকি দেয়। পরে ওই রাতে হযরতের পুকুরে ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান চালিয়ে আবাদি জমিতে বিনা অনুমতিতে পুকুর খনন বন্ধ করে দেয়। এতে তারা আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। পর দিন ৩০ মে তারা সকাল অনুমান ১১টার দিকে জাকিরের বাসায় এসে তাকে না পেয়ে তার মাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং তাকে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়া সহ হত্যার হুমকি দিয়ে চলে যায়।

পরে ৪ জুন সকাল ১০ টার দিকে জাকিরের মুদিখানা দোকানে গিয়ে দোকানের পেছনে জাকিরের গলা চেপে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করে হযরত আলী, মো. নাজিম এবং মো. মিনাল।

নাটোর জেলা মানবাধিকার কমিশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট সোহেল রানা বলেন, অবৈধভাবে পুকুর খননের ফলে নাটোর জেলায় আবাদি জমি প্রায় ১০ হাজার হেক্টর কমে গেছে। তাই তারা জনস্বার্থে এই মামলা করেছেন। এই মামলার মাধ্যমে নাটোর জেলার মাটি খেকোদের হাত থেকে আবাদি জমি রক্ষা পাবে বলে মন্তব্য করেন সোহেল রানা।

আইনজীবি অ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেন বলেন, আদালত ঘটনার সত্যতা নিরুপণ করার জন্য কতটুকু জমি থেকে কি পরিমাণ গভীর করে মাটি উত্তোলন করা হয়েছে তা তদন্তের পাশাপাশি ফসলি জমি হতে মাটি কেটে অবৈধ লাইসেন্স বিহীন ট্রাক্টর দ্বারা রাস্ত তথা সড়ক ও মহাসড়ক দিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় পাকা রাস্তা এবং হাইওয়ে রাস্তর ভেতরে মাটি ফেলে রাস্তা নষ্ট করে ।

দুর্ঘটনা ঘটানোর কারণে যে ক্ষতি হয়েছে সেসব বিষয় এবং জাকির হোসেনকে মোবাইল ফোনে হত্যার হুমকি প্রদান করা এবং গলা চেপে শ্বাসরোধ করে হত্যাচেষ্টা সংক্রান্ত বিষয়ে এবং নালিশী দরখাস্ত সংক্রান্তে সত্যতা নিরুপন করতে বলেছেন।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে