তানোরে উদ্ধোধনের আগেই স্কুল ভবনে ফাটল

প্রকাশিত: জুলাই ১০, ২০২৩; সময়: ৭:৪৭ অপরাহ্ণ |
তানোরে উদ্ধোধনের আগেই স্কুল ভবনে ফাটল

সাইদ সাজু, তানোর : রাজশাহীর তানোরে নির্মিত স্কুল ভবন উদ্ধোধনের আগেই ফাটল ধরেছে। সেই একাধিক ফাটল গুলোতে সিমেন্ট বালু দিয়ে ঢেকে দেয়ার কারনে ভবনের সৌন্দর্যই নষ্ট হয়ে গেছে।

এঘটনায় এলাকাবাসীসহ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে, সেই সাথে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা।

কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা ও দেখভালের দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালন না করায় এবং অনৈতিক সুবিধা নিয়ে নিম্ন মানের সামগ্রী দিয়ে এধরনের স্কুল ভবন নির্মান করা হয়েছে বলে মনে করেন এলাকার সচেতন মহল।

উপজেলার পাঁচন্দর ইউনিয়ন( ইউপির) ইলামদহী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ঘটে রয়েছে এমন ঘটনা। এতে করে ভবনের টিকসই নিয়ে দেখা দিয়েছে সন্দিহান। ফলে দ্রুত পুনরায় ভবনটি সঠিক নিয়ম অনুযায়ী করার জোর দাবি তুলেছেন স্থানীয়রা।

গত রোববার সরেজমিনে দেখা যায়, পাঁচন্দর ইউনিয়ন (ইউপির) পাকুয়া হাটে বিগত ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ইলামদহী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়টি। বিদ্যালয়টির সামনে বিশাল মাঠ ও পিছনে প্রতি বৃহস্পতিবার বসে হাট।

পুরাতন ভবনের পশ্চিমে দুই কক্ষ বিশিষ্ট এক তলা নতুন ভবন নির্মান করা হয়েছে। নির্মান কাজ শেষে ঘিয়া কালার দিয়ে পুরো ভবনটি রং করা হয়। কিন্তু ভবনের পিছনে সাইডে ও ভিতরে সিমেন্ট বালু দিয়ে একাধিক জায়গায় ফাটলে পুটিং করা আছে।

স্কুল খোলা থাকলেও কাজের জন্য বোর্ডে ছিলেন প্রধান শিক্ষক খাইরুল ইসলাম। তার সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, দেয়ালে শুধু ফাটল না ছাদ দিয়ে পানিও পড়ে।

বিষয়টি উপজেলা প্রকৌশলীকে অবহিত করা হলে ঠিকাদার আমিনুল ছাদে ও দেয়ালে পুটিং দিয়ে যত্রতত্র ভাবে ঢেকে দিয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট সুত্রে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জাইকার অর্থায়নে উপজেলা পরিচালন ও উন্নয়ন প্রকল্প হতে প্রায় ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে এলজিইডির মাধ্যমে ভবনটি নির্মান করেন ঠিকাদার আমিনুল ইসলাম।

তিনি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়নার আপন ছোট ভাই। নির্মান কাজ এতই নিম্মমানের করা হয়েছে যে উদ্ধোধনের আগেই ভবনটির এমন বেহাল অবস্থা।

বেশকিছু শিক্ষকরা জানান, বর্তমান সরকারের সময় উন্নয়ন বলতে এই দুই কক্ষ বিশিষ্ট ভবনটি। তাও আবার উদ্ধোধনের আগেই ছাদ দিয়ে পানি পড়া, দেয়ালের বাহিরে ভিতরে অসংখ্য ফাটল এবং দরজা জানালা গুলো একেবারেই নিম্মমানের।

যিনি কাজ করেছেন সে চেয়ারম্যানের ভাই এজন্য কেউ কিছুই বলতে পারেননি । পুরো বারান্দায় ফাটল, একাধিক বার বলেও কোন সমাধান হচ্ছে না। কথায় আছে নাই মামার চেয়ে কানা মামা অনেক ভালো।

তবে দেয়ালে উদ্ধোধনী ফলক লিখা রয়েছে। তাতে বিসমিল্লাহ হির রাহ মানির রাহিম, তার নিচে ইলামদহী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, তার নিচে লাল অস্পষ্ট ভাবে আলহাজ ওমর ফারুক চৌধূরী, এমপি লিখা আছে।

তার নিচে প্রকল্পের নাম : উপজেলা পরিচালন ও উন্নয়ন প্রকল্প, তার নিচে চুক্তিমূল্য : ১৪,৯৬০৯২.৩২৯ টাকা, তার নিচে বাস্তবায়নে : উপজেলা পরিষদ, তানোর, রাজশাহী।

তার নিচে অর্থায়নে : স্থানীয় সরকার বিভাগ, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়, তার নিচে সহযোগীতায় জাইকা, শেষে তারিখ ৮ আগষ্ট/২০২২।

স্থানীয় বেশকিছু ঠিকাদারেরা জানান, ইলামদহী স্কুল ভবনটি ৫% টের বেশি লাভ দিয়ে কিনে নিয়ে কাজ করেছেন চেয়ারম্যানের ভাই ঠিকাদার আমিনুল। এতই নিম্মমানের কাজ হয়েছে যা বলায় যাবে না।

অন্য ঠিকাদার হলে তাকে কত মাসুল গুনতে হত সে বুঝত। কিন্তু আমিনুলের গায়ে আছে বড় মাপের সাইন বোর্ড। এজন্য দায়সারা কাজ করে চলে এসেছেন।

ঠিকাদার আমিনুলের ব্যক্তিগত ০১৭২৪-৩৮৪৯৯৮ মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও সে রিসিভ করেন নি।

উপজেলা প্রকৌশলী সাইদুর রহমান বলেন, উপজেলার মাটি অত্যান্ত কড়া, যে কোন ভবন ফেটে যাবে। তবে প্রধান শিক্ষক বলার পর ফাটলগুলোতে পুটিং দিয়েছে ঠিকাদার বলে আমাকে জানিয়েছেন।

 

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে