মহাকাশের গ্রহ-নক্ষত্র দেখতে পাবেন শিক্ষার্থীরা

প্রকাশিত: জুলাই ২২, ২০২৩; সময়: ৩:০৮ অপরাহ্ণ |
মহাকাশের গ্রহ-নক্ষত্র দেখতে পাবেন শিক্ষার্থীরা

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : রংপুরে দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটারের নির্মাণ কাজ। ইতোমধ্যে ৫০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্মাণ সম্পন্ন করতে চায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

এটি নির্মাণ হলে রংপুরের মানুষের আর্থিক সমৃদ্ধি ও বিনোদনের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞানমনস্ক উন্নত শিক্ষায় সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

সম্প্রতি রংপুর সদর উপজেলার দেবীপুর-গংগাহরি মৌজায় রংপুর-দিনাজপুর সড়কের পাশে গিয়ে বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটারের নির্মাণযজ্ঞ দেখা যায়।

সেখানে দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের তত্ত্বাবধানে ১০ একর জমিতে প্রায় শতাধিক শ্রমিক নির্মাণ কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এমজি জামাল অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেড এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।

জানা গেছে, আধুনিক নভোথিয়েটার স্থাপনের মাধ্যমে জনসাধারণের মধ্যে মহাকাশ সম্পর্কিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিভিন্ন বিষয় অবহিত করে বিজ্ঞানমনস্ক সমাজ গঠনে সহায়তা করতে রংপুরে স্থাপন হচ্ছে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার’।

সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় গণপূর্ত অধিদফতরের মাধ্যমে এই প্ল্যানেটেরিয়ামটি নির্মাণ করছে। এর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১২১ কোটি ১৭ লাখ ৬৮ হাজার ১০৯ টাকা।

এর বাস্তবায়নকাল ধরা হয়েছে জানুয়ারি ২০২১ হতে ডিসেম্বর ২০২৩ (পরিকল্পনা কমিশনের প্রস্তাব: জুলাই ২০২১ হতে জুন ২০২৪)।

ইতোমধ্যে জমির সীমানা নির্ধারণ ও প্রকল্পের অনুকূলে জমি হস্তান্তর করা হয়েছে। জমির ডিজিটাল সার্ভে, সয়েল টেস্ট ও নকশা ডিজাইন সম্পন্ন করা হয়েছে। নির্মাণ কাজের মধ্যে রয়েছে প্লানেটরিয়াম ভবন, অফিস ভবন, বাউন্ডারি ওয়াল এবং ডরমিটরি ভবন।

প্রকল্পের উদ্দেশ্য সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, (ক) একটি আধুনিক নভোথিয়েটার স্থাপনের মাধ্যমে জনসাধারণের মধ্যে মহাকাশ সম্পর্কিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিভিন্ন বিষয় অবহিত করে বিজ্ঞানমনস্ক সমাজ গঠনে সহায়তা করা, (খ) শিক্ষা-বিনোদনের সুযোগ সৃষ্টি করে স্কুলগামী শিক্ষার্থী ও তরুণ প্রজন্মকে উৎসাহিত করার মাধ্যমে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক শিক্ষায় উৎসাহিত করা এবং (গ) মহাকাশ বিষয়ক গবেষণার সুযোগ সৃষ্টিসহ ডিজিটাল ও সায়েন্টিফিক প্রদর্শনী বস্তু প্রদর্শনের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে একটি অনানুষ্ঠানিক বিজ্ঞান শিক্ষা-বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে তৈরি করা।

বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার প্রকল্পটি নির্মাণ হলে এখানকার শিক্ষার্থীরা নভোথিয়েটারের মাধ্যমে মহাকাশ বিষয়ক প্রদর্শনী, ৫ ডি এডুটেইনমেন্ট সিমুলেটর, ডিজিটাল এক্সিবিউস গ্যালারি ও ৫-ডি মুভি থিয়েটার সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে পারবে।

এটি শুধু নভোথিয়েটার হবে এমনটা কিন্তু নয়, নভোথিয়েটার সংলগ্ন শিশুদের জন্য একটি পার্ক, উন্মুক্ত পরিবেশ ও খেলাধুলার মাঠ থাকবে। যাতে করে বিনোদনের মাধ্যমে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বিজ্ঞানমনস্ক একটি উন্নত জাতি হিসেবে গড়ে উঠতে পারে।

গত বছরের ৩ নভেম্বর অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ৩২তম সভায় ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার, রংপুর স্থাপন’ প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে সরকার।

এর আগে ২০১৪ সালের অক্টোবরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার রংপুর শাখার স্থাপনের জন্য সম্ভাব্য প্রকল্পের স্থান পরিদর্শন করেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব খোন্দকার আসাদুজ্জামান ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার মহাপরিচালক আরশাদ হোসেন।

এদিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার রংপুর অঞ্চলের সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীদের বিনোদনের মাধ্যমে মহাকাশ বিজ্ঞান সম্পর্কে সঠিক ধারণা ও তথ্য প্রদান এবং মহাকাশ বিজ্ঞান শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ করবে বলে সংশ্লিষ্টদের দাবি। সরকারের এই উন্নয়ন প্রকল্পের প্রশংসা করছেন সচেতন মহল।

এ প্রসঙ্গে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী শিপন তালুকদার বলেন, সরকার রংপুরের উন্নয়নে অনেক কিছু করছে।

এখন নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটারটি আমাদের শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে বেশি সহায়ক হবে। বিশেষ করে বিজ্ঞানমনস্ক উন্নত শিক্ষানুরাগী শিক্ষার্থীদের মেধার বিকাশ ও স্বচ্ছ ধারণা তৈরিতে ভালো ভূমিকা রাখবে।

রংপুরে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটারের প্রজেক্ট ইঞ্জিনিয়ার মনির হুসাইন বলেন, প্রকল্পের প্রায় ৫০ শতাংশ শেষ হয়েছে। এটি নির্মাণ হচ্ছে বিজ্ঞানমনস্ক শিশু-কিশোরদের মেধা বিকাশের জন্য।

এই প্রজন্ম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ব্যবহার বাস্তবে দেখতে পাবেন। পাঠ্যপুস্তকে এতদিন যা পড়েছে এবং জেনেছে, তা বাস্তবে দেখার সুযোগ মিলবে নভোথিয়েটারে। নভোথিয়েটারের মাধ্যমে বিশাল আকাশের বুকে যে-সব গ্রহ-নক্ষত্র রয়েছে, তা দেখতে পাওয়া যাবে।

তিনি আরও বলেন, প্রকল্পটি নতুন প্রজন্মকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষায় আগ্রহী করা, জনগণের মধ্যে মহাকাশ বিজ্ঞান সম্পর্কিত ধারণা এবং বৈজ্ঞানিক মনোভাব সঞ্চার করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

আমরা দ্রুতই প্রকল্পের কাজ শেষ করার চেষ্টা করছি। এজন্য আমাদের ম্যানেজার, সাইট ম্যানেজার, সার্ভেয়ার ইঞ্জিনিয়ার, সাইট ইঞ্জিনিয়ার, স্টোর কিপারসহ কর্মকর্তা-কর্মচারী ও নির্মাণ শ্রমিকেরা দিনরাত পরিশ্রম করছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই আমরা নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করতে চাই।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে