পুঠিয়ায় পানির অভাবে পাট জাগ দেওয়া নিয়ে বিপাকে চাষিরা

প্রকাশিত: জুলাই ২৩, ২০২৩; সময়: ৭:২৬ অপরাহ্ণ |
পুঠিয়ায় পানির অভাবে পাট জাগ দেওয়া নিয়ে বিপাকে চাষিরা

মোহাম্মদ আলী, পুঠিয়া : পানির অভাবে জাগ দেওয়া নিয়ে বিপাকে পড়েছেন রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার পাট চাষিরা। পাট কাটার মৌসুম শুরু হলেও পানির অভাবে কাটতে পারছে চাষীরা।

উপজেলার অধিকাংশ খাল, বিল, ডোবা ও জলাশয়ের কোথাও পানি নেই এবার। তাই সামনে আমন ধান লাগানোর সময় আসলেও ক্ষেত থেকে পাট কাটতে পারছেনা চাষীরা। কেউ পুকুর বা জলাশয় লিজ নিয়ে পাট জাগ দিচ্ছে। আবার কেউ পাট কেটে নসিমন বা ভ্যানে করে গর্তে বা নালায় শ্যালো মেশিন দিয়ে পানি জমিয়ে পাট জাগ দেওয়া শুরু করেছে।এতে উৎপাদন খরচ বাড়ার পাশাপাশি নষ্ট হচ্ছে সময়।

পুঠিয়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ৪ হাজার ৪শ ৬০হেক্টর জমিতে উচ্চ ফলনশীল তোষা জাতের পাট আবাদ হয়েছে। এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। এবছর উৎপাদন লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ১৩ হাজার ৩শ ৮০ মে.টন যা গতবারের চেয়ে ১৮শ ৫৫ মে.টন পাট বেশি ফলন হবে।

পুঠিয়া উপজেলার জায়গীরপাড়া গ্রামের আনোয়ার হোসেন নামের এক পাট চাষী বলেন, পানির অভাবে আমরা পাট কাটা শুরু করতে পারছি না। ধান লাগানোর জন্য কেবল কিছু কিছু করে পাট কাটতে শুরু করেছি। অনেক দুর থেকে পাট কেটে বাড়ির কাছে নিয়ে এসেছি। এখান আমাদের একটি নালা/গর্ত আছে সেখানে সেচ মেশিন দিয়ে পানি জমিয়ে পাট জাগ দিচ্ছি। এতে করে অনেক খরচ বেশি হবে। এখন দাম কেমন পাবো এটাই দেখার বিষয়।

পাটচাষি রাকিব বলেন, আষাঢ় শ্রাবণ মাসে পাট কাটা হয়। এ বছর আবহাওয়ার অনুকূল পরিবেশ থাকায় পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে এ বছর খুবই বৃষ্টি কম হয়েছে। তাই এলাকার খাল, বিল, জলাশয়ে এখন পর্যন্ত কোন পানি নেই। এ কারণে অতিরিক্ত অর্থ খরচ করে যেসব স্থানে ছোট ছোট নালা বা গর্ত রয়েছে সেখানে মেশিনের সাহায্যে পানি জমিয়ে পাট জাগ দেওয়া লাগছে। এবার শুরুতেই যদি ৩ হাজার টাকার নিচে পাটের দাম থাকে তাহলে আমাদের অনেক লোকসান হবে। সামনে আবার নির্বাচন সেই কারণে যদি পাটের দাম কম হয় সেই ভিতিও মনে কাজ করছে।

কৃষক আমিনুল ইসলাম বলেন, ৩ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি। জমির আশেপাশের নালায় কোনো পানি নেই। তাই ভ্যান গাড়িতে করে পাট নিয়ে দূরের একটি পুকুর ২৫০০ টাকায় লিজ নিয়েছি সেখানে জাগ দিতে যাচ্ছি। এতে সময় ও টাকা অনেক বেশি খরচ হচ্ছে।

পুঠিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার স্মৃতি রানী সরকার বলেন, এ বছর লক্ষমাত্রার চেয়ে অধিক জমিতে পাট আবাদ হয়েছে। পাটের ফলনও ভালো হয়েছে। কিন্তু বৃষ্টি না হওয়ার কারনে পুকুর বা নালায় পানি দিয়ে পাট জাগ দিতে অতিরিক্ত ৫/৬ হাজার টাকা বেশি খরচ হচ্ছে। এতে করে পাটের দাম ৩ হাজার টাকা মত থাকলে কৃষক লাভবান হবেন।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে