পাবিপ্রবির সাংবাদিক মামুনকে মারধরের অভিযোগ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে

প্রকাশিত: জুলাই ২৪, ২০২৩; সময়: ৭:৩০ অপরাহ্ণ |
পাবিপ্রবির সাংবাদিক মামুনকে মারধরের অভিযোগ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, পাবনা : পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক আব্দুল্লাহ আল মামুনকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাংবাদিককে মারধরের ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেওয়ায় এই ঘটনা ঘটায়৷ তাকে আহতাবস্থায় উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

রবিবার (২৩ জুলাই) দুপুর আড়াইটার দিকে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়ায় এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী সাংবাদিক আব্দুল্লাহ আল মামুন দৈনিক নয়া শতাব্দীর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের যুগ্ম-আহবায়ক। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।

ভুক্তভোগী সাংবাদিক ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের সদস্যরা জানান, সম্প্রতি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাংবাদিককে মারধর করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ওই ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে একটি প্রেসবিজ্ঞপ্তি দেয় পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাব।

এ কারণে প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর করা প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব দুর্জয় কুমারকে ক্যাফেটেরিয়ায় আটকে রাখে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এমন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে উদ্ধার করতে এগিয়ে যান আব্দুল্লাহ আল মামুন। এ সময় মামুনকেও আটকে রেখে প্রেসবিজ্ঞপ্তি ও প্রেসক্লাবের বিষয়ে জানতে চেয়ে বেধড়ক পেটায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, মারধরের ঘটনায় নেতৃত্ব দেন শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মাসুদ রানা সরকার, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম প্রান্ত, সাবেক প্রচার সম্পাদক ইকরামুল ইসলাম সাগর, তৌফিকুল ইসলাম হৃদয়সহ ২০-২৫ জন নেতকর্মী।

এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের সহযোগিতা চাইলে তিনি এসে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের পক্ষ নিয়ে বিভিন্ন সংবাদ পরিবেশন ও প্রেসক্লাব নিয়ে সাংবাদিকদের উল্টো নানারকম প্রশ্ন করেন। পরে প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব দুর্জয় কুমারকে দিয়ে একটি অভিযোগপত্রে জোর করে স্বাক্ষর রেখে তাদের মুক্তি দিলে আহত মামুনকে নিয়ে হাসপাতালে যান তার সহকর্মীরা।

পাবিপ্রবি প্রেসক্লাবের আহবায়ক উজ্জল কুমার বিশ্বাস বলেন, এ ঘটনায় আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। শুধু ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা নয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বয়ং প্রক্টর যদি তাদের (ছাত্রলীগের) পক্ষ নিয়ে তাহলে আমাদের নিরাপত্তা কোথায়? আমরা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মাসুদ রানা সরকার বলেন, আজ বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন ধরনের কোনো ঘটনাই ঘটেনি। কাউকে আমরা মারধর করিনি। মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রেসক্লাবের কমিটি গঠন নিয়ে প্রক্টরের সাথে কথা বলতে গিয়েছিলাম।

প্রেসক্লাবের কমিটি নিয়ে আপনাদের (ছাত্রলীগের) কি কথা জানতে চাইলে মাসুদ রানা বলেন, কিভাবে, কাদের নিয়ে কমিটি গঠন হবে, না হবে, এসব বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. কামাল হোসেন বলেন, প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব দুর্জয় কুমার আমার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেয়। এসময় আব্দুল্লাহ আল মামুন আমার কাছে এসে তাকে মারধরের অভিগোগ করেন। কিন্তু আমি তাকে বলেছি লিখিত আকারে অভিযোগ দিলে তদন্ত করে দেখা হবে। ওইখানে ছাত্র উপদেষ্টাসহ অনেকেই ছিল। তাই কারো পক্ষ নেয়ার প্রশ্নই উঠে না। অসহযোগিতার অভিযোগ সঠিক নয়।

এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. হাফিজা খাতুন বলেন, এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না। আমাদের তো নিরাপত্তা কর্মকর্তা আছে। বললে তারাও দেখবে। তারপরও আমি এ ব্যাপারে খোঁজখবর নিচ্ছি।

পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, পাবনা প্রেসক্লাব সেক্রেটারী আমাকে বিষয়টি জানিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটরিয়ার ভেতরে নাকি কার কার সাথে ওই সাংবাদিক তর্কাতর্কি করছে, সেটা একটু ঝামেলা হয়েছে। ভুক্তভোগী অভিযোগ দিলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে