রাজধানীর প্রবেশমুখে অবস্থানের ঘোষণা বিএনপির

প্রকাশিত: জুলাই ২৮, ২০২৩; সময়: ৯:৫৯ অপরাহ্ণ |
রাজধানীর প্রবেশমুখে অবস্থানের ঘোষণা বিএনপির

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : ঢাকায় মহাসমাবেশ করে সরকার হটানোর এক দফা আন্দোলনের নতুন কর্মসূচিতে রাজধানীর প্রবেশমুখগুলোতে অবস্থানের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি।

শনিবার বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ঢাকার প্রবেশমুখগুলোতে বিএনপির এই অবস্থান কর্মসূচি চলবে। শুক্রবার বিকালে ঢাকার নয়া পল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ থেকে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, “এই সরকার বেআইনি, অসাংবিধানিক, অবৈধ এই সরকারের অধীনে কোন নির্বাচন হতে পারে না। দফা এক, দাবি এক, পদত্যাগ করে সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে।”

যে চার জায়গায় বিএনপির অবস্থান করবে সেগুলো হলো- নয়াবাজারে বিএনপি অফিসের সামনে, গাবতলী এস এ খালেক বাসস্ট্যান্ডের সামনে, যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভারের নিচে দনিয়া কলেজ সংলগ্ন মাঠে, উত্তরা বিএনএস সেন্টারের উল্টো দিকের রাস্তায়।

সমাবেশে মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের ক্রন্তিলগ্নে সবচেয়ে বেশি ত্যাগ শিকার করতে হয় তরুণদের। আমাদের ছয়শ নেতা-কর্মীকে গুম করা হয়েছে। হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। ৪০ লাখ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হয়েছে। গত দুই দিনে মহাসমাবেশে যোগ দিতে আসা কয়েক হাজার নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

“গ্রেপ্তার করে কী আমাদের থামানো যাবে? আমরা পুলিশকে, প্রশাসনকে বলতে চাই, আপনারা এই ভয়াবহ একটা দলীয় সরকারের বেআইনি আদেশ-নির্দেশে জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবেন না।”

এই আন্দোলনের লক্ষ্য তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “সমস্ত দলগুলো, যারা আন্দোলনে থাকবে, তাদের নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করব। আজকে আমরা শুধু একা নই। বাইরের দেশগুলো, আন্তর্জাতিক বিশ্ব তারাও বলছে তারা বাংলাদেশে একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চায়।

“আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, বেআইনি গ্রেপ্তার বন্ধ করুন, যারা কারাগারে আছেন তাদের ছেড়ে দিন। খালেদা জিয়াকে অবিলম্বে মুক্তি দিন, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করুন। ভালো চাইলে আমাদের এক দফা দাবি মেনে নিয়ে পদত্যাগ করুন।“

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের সভাপতিত্বে প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টার এই সমাবেশে দলের কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতারাও বক্তৃতা দেন।

পাশাপাশি লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একটি অডিও বক্তব্য প্রচার করা হয়, যদিও আইনের দৃষ্টিতে পলাতক থাকায় তার বক্তব্য বিবৃতি প্রচারে আদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

মির্জা ফখরুল মহাসমাবেশের ‘চমক’ হিসেবে তারেক রহমান বক্তব্য দেবেন বলে ঘোষণা করেন। সেই বক্তব্যের পর শনিবার ঢাকা মহানগরের সকল প্রবেশমুখে অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করে সমাবেশ শেষ করেন মির্জা ফখরুল।

তিনি বলেন, বিএনপি ও সমমনা দলগুলো যে যুগপৎ আন্দোলন আন্দোলনে রয়েছে, তার অংশ হিসেবে এই কর্মসূচি পালন করা হবে। আমাদের এই অবস্থান কর্মসূচি সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ হবে। এটা আমাদের সাংবিধানিক অধিকার।”

সরকার ও প্রশাসনের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা আশা করব, যে প্রশাসন, তারা এই কর্মসূচিকে শান্তিপূর্ণভাবে পালন করতে তাদের সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করবে।

“আমরা এটাও আশা করব, কালকে যে ছুটির দিন আছে এবং পবিত্র আশুরা আজকে রাত থেকে শুরু হবে… আজকে রাতেই শেষ হয়ে যাবে। সেই কারণে সকল দলকে একসঙ্গে রেখে শান্তিপূর্ণভাবে আমরা আমাদের এই কর্মসূচিটা পালন করব… সেটাই হচ্ছে আমাদের আগামীকালের ঘোষণা। প্রশাসন ও সরকার যাতে সহযোগিতা করে এই আশা আমি করছি।”

সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ‘এক দফা’ দাবিতে বিএনপিসহ সমমনা জোট ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ঢাকায় আলাদা আলাদাভাবে সমাবেশ করে শুক্রবার। গত ১২ জুলাই শুরু হওয়া এক দফার আন্দোলনের এটি দ্বিতীয় কর্মসূচি ছিল। এর আগে ১৮ ও ১৯ জুলাই সারাদেশে মহানগর ও জেলায় পদযাত্রা করে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে