যে হাদিস শুনে হাসা সুন্নত

প্রকাশিত: আগস্ট ৬, ২০২৩; সময়: ১:১৯ অপরাহ্ণ |
খবর > ধর্ম
যে হাদিস শুনে হাসা সুন্নত

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : বিখ্যাত সাহাবি আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) এমন একটি হাদিস বর্ণনা করেছেন, যেটি বর্ণনার সময় তিনি হেসেছেন, নবীজি বর্ণনা করার সময় নবীজি হেসেছিলেন। ঘটনাটি হলো সর্বশেষ জান্নাতে যাওয়া লোক সম্পর্কে।

ঘটনায় সর্বশেষ জান্নাতি লোকটি আল্লাহকে জিজ্ঞেস করবেন, আপনি কি আমার সাথে ঠাট্টা করছেন? এমন প্রশ্নে আল্লাহও হাসবেন এবং তকে জান্নাত দিয়ে সন্তুষ্ট করবেন।

ঘটনাটি শুনলে আপনারও হাসি আসবে এবং হাসাটা সুন্নত। সহিহ মুসলিম শরিফের হাদিসে কুদসিতে ঘটনাটি বর্ণিত হয়েছে। চলুন হাদিসটি জেনে নিই।

ইবনে মাসউদ (রা.) বর্ণিত হাদিসে এসেছে , রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘সর্বশেষ জান্নাতে প্রবেশ করবে এমন ব্যক্তি— যে একবার চলবে, একবার হোঁচট খাবে; একবার আগুন তাকে ঝলসে দেবে।

যখন সে তা অতিক্রম করবে তার দিকে ফিরে তাকাবে। অতঃপর বলবে- বরকতময় সেই সত্ত্বা! যিনি আমাকে তোমার থেকে নাজাত দিয়েছেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ আমাকে এমন বস্তু দান করেছেন— যা পূর্বাপর কাউকে দান করেননি।

অতঃপর তার জন্য একটি গাছ প্রকাশ করা হবে, সে বলবে, ‘হে আমার রব! আমাকে এ গাছের নিকটবর্তী করুন, যেন তার ছায়া গ্রহণ করতে পারি ও তার পানি পান করতে পারি। আল্লাহ তাআলা বলবেন, হে আদম সন্তান! যদি আমি তোমাকে এটা দান করি— হয়ত অন্য কিছু তলব করবে। সে বলবে- না, হে আমার রব।

এ সময় সে ওয়াদা দেবে যে, এ ছাড়া কিছু তলব করবে না। তখন আল্লাহ তাকে ছাড় দেবেন। কারণ সে এমন কিছু দেখবে যার ওপর তার ধৈর্যধারণ করা সম্ভব হবে না। তাকে তার (গাছের) নিকটবর্তী করবেন, ফলে সে তার ছায়া গ্রহণ করবে ও তার পানি পান করবে।

অতঃপর তার জন্য অপর গাছ প্রকাশ করা হবে, যা পূর্বের তুলনায় বেশি সুন্দর। সে বলবে- হে আমার রব, আমাকে এর নিকটবর্তী করুন, যেন তার পানি পান করতে পারি ও তার ছায়া গ্রহণ করতে পারি, এ ছাড়া কিছু চাইব না।

তিনি (আল্লাহ তাআলা) বলবেন, হে আদমসন্তান তুমি কি আমাকে ওয়াদা দাওনি যে, অন্য কিছু চাইবে না? আমি যদি তোমাকে এর নিকটবর্তী করি হয়ত (আবারও) অন্য কিছু চাইবে।

ফলে সে ওয়াদা দেবে যে, অন্য কিছু চাইবে না, তার রব তাকে ছাড় দেবেন। কারণ সে এমন কিছু দেখবে যার ওপর তার ধৈর্য নেই। অতঃপর তাকে তার (দ্বিতীয় গাছের) নিকটবর্তী করবেন, সে তার ছায়া গ্রহণ করবে ও তার পানি পান করবে।

অতঃপর তার সামনে প্রকাশ করা হবে আরেকটি গাছ জান্নাতের দরজার মুখে, যা পূর্বের দুইটি গাছের চেয়ে বেশি সুন্দর। সে বলবে- হে আমার রব! আমাকে এ গাছের নিকটবর্তী করুন। আমি তার ছায়া গ্রহণ করব ও তার পানি পান করব।

এ ছাড়া কিছু চাইব না। তিনি (আল্লাহ তাআলা) বলবেন, হে আদমসন্তান তুমি কি আমাকে ওয়াদা দাওনি যে, অন্য কিছু চাইবে না? সে বলবে- অবশ্যই হে আমার রব, এটাই চাই; আর কিছু চাইব না, তার রব তাকে ছাড় দেবেন।

কারণ সে এমন কিছু দেখবে— যার ওপর তার ধৈর্য নেই। অতঃপর তিনি তাকে তার নিকটবর্তী করবেন, যখন তার নিকটবর্তী করা হবে— সে জান্নাতিদের আওয়াজ শুনবে। সে বলবে- হে আমার রব! আমাকে তাতে প্রবেশ করান। তিনি (আল্লাহ তাআলা) বলবেন, হে বনি আদম, কীসে তোমার থেকে আমাকে নিষ্কৃতি দেবে?

তুমি কি সন্তুষ্ট যে, আমি তোমাকে দুনিয়া ও তার সাথে তার সমান দান করি? (অর্থাৎ দুনিয়ার দ্বিগুণ দিলেই কি তুমি খুশি হবে?) সে বলবে- হে আমার রব! আপনি কি আমার সাথে ঠাট্টা করছেন অথচ আপনি উভয় জাহানের রব?

ইবনে মাসউদ হেসে দিয়ে বলেন, তোমরা আমাকে কেন জিজ্ঞাসা করছ না যে, আমি হাসছি কেন? তারা বলল- কেন হাসছেন? তিনি বললেন- রাসুল (স.) (হাদিসটি বর্ণনা করার সময়) এরূপ হেসেছেন।

তখন তারা (সাহাবিরা) বলল, হে আল্লাহর রাসুল কেন হাসছেন? তিনি বললেন, আল্লাহর হাসি থেকে যখন সে বলল, আপনি আমার সাথে ঠাট্টা করছেন অথচ আপনি উভয় জাহানের রব? তিনি বললেন, আমি তোমার সঙ্গে ঠাট্টা করছি না, তবে আমি যা চাই— করতে পারি। (মুসলিম, হাদিসে কুদসি: ৫৫)।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে