জিন তাড়ানোর নামে যেভাবে নারীদের ওপর চলে যৌন নির্যাতন

প্রকাশিত: আগস্ট ১১, ২০২৩; সময়: ১১:১৮ পূর্বাহ্ণ |
জিন তাড়ানোর নামে যেভাবে নারীদের ওপর চলে যৌন নির্যাতন

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : জিন তাড়ানোর নামে আফ্রিকার কিছু দেশে আধ্যাত্মিক কবিরাজ সেজে নারীদের ওপর যৌন অত্যাচার ও শোষণ চালাচ্ছে কিছু মানুষ।

বিশেষ করে মরক্কো ও সুদানে এ ধরনের ঝাড়-ফুঁক বিশেষভাবে জনপ্রিয়। এ দুটি দেশে বছরের পর বছর ধরে নারীরা এমন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।

এক প্রতিবেদনে বিবিসি জানিয়েছে, ঝাড়-ফুঁকের মাধ্যমে খারাপ জিনের অশুভ প্রভাব দূর করে নানা সমস্যার সমাধান, রোগের চিকিৎসা ইত্যাদি করা সম্ভব বলে বিশ্বাস করেন আফ্রিকান নারীরা।

সে তালিকার ৮৫ জন নারীর সঙ্গে কথা বলেছে গণমাধ্যমটি। তাদের মধ্যে ৬৫ জনই কবিরাজের নাম উল্লেখ করেছেন এবং তাদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি থেকে শুরু করে ধর্ষণ পর্যন্ত নানা অভিযোগ এনেছেন।

প্রতিবেদনে একাধিক নারীর সঙ্গে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনাও তুলে ধরে –

নির্যাতনের শিকার নারীদের একজন দালাল (ছদ্মনাম)। তিনি ক্যাসাব্লাংকার কাছে একটি ছোট শহরে এরকম একজন ঝাড়-ফুঁক বিশারদের কাছে চিকিৎসা নিতে গিয়েছিলেন।

তার বয়স ছিল ২০-এর কোঠায় এবং তিনি বিষণ্ণতায় ভুগছিলেন। তিনি বলেন, সেই কবিরাজ তাকে জানান তার ওপর একজন প্রেমিক জিনের আছর পড়েছে এবং এটাই তার বিষণ্ণতার কারণ।

একদিনের চিকিৎসার সময় যখন তারা ছাড়া আর কেউই উপস্থিত ছিল না তখন এই কবিরাজ তাকে একটি সুগন্ধি শুঁকতে দিলেন। আর তা শোঁকার পরই তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলেন।

এর আগে দালালের কোন রকম যৌন অভিজ্ঞতা ছিল না। তিনি জানান, সেদিন জ্ঞান ফিরে পাওয়ার পর দেখতে পান- তার অন্তর্বাস খুলে ফেলা হয়েছে এবং বুঝতে পারলেন তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে।

এর কয়েক সপ্তাহ পর তিনি আবিষ্কার করলেন যে তিনি গর্ভবতী হয়ে পড়েছেন। এতে তিনি আতঙ্কিত হয়ে পড়লেন, এবং আত্মহত্যা করার কথাও ভেবেছিলেন। যদিও শেষ পর্যন্ত তিনি ওই শিশুটিকে অন্য কাউকে দত্তক দিয়ে দেন।

এ বিষয়ে সুদানের ইসলামিক বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পরিবার ও সমাজ বিভাগের প্রধান ড. আলা আবু জেইদ বলেন, আধ্যাত্মিক চিকিৎসা বিষয়ে আইনকানুন না থাকায় বিশৃঙ্খলতা সৃষ্টি হচ্ছে। যেসব লোকের কোন কাজ নেই তারাই এ ভূমিকাকে পেশা হিসেবে ব্যবহার করছে।

তিনি বলেন, অতীতে তিনি এসব কর্মকাণ্ডকে নিয়ন্ত্রণে আনার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখেছেন। কিন্তু দেশটির বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার জন্য এটিকে গুরুত্ব দেওয়ার তেমন একটা সুযোগ নেই।

অপরদিকে মরক্কোর ইসলামিক অ্যাফেয়ার্স মন্ত্রী আহমেদ তৌফিক বলেন, এ ব্যাপারে আলাদা করে আইন করার দরকার নেই।

কারণ, এসব বিষয়ে আইনগতভাবে হস্তক্ষেপ করা কঠিন। সমাধান হচ্ছে ধর্মীয় শিক্ষা ও তার প্রচার। সাক্ষ্যপ্রমাণ দেওয়া সত্ত্বেও মরক্কো ও সুদানের কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে নারাজ।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে