২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে রাবিতে মানববন্ধন

প্রকাশিত: আগস্ট ২১, ২০২৩; সময়: ৩:৫৭ অপরাহ্ণ |
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে রাবিতে মানববন্ধন

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাবি: একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। সোমবার বেলা ১১টায় সিনেট ভবনের সামনে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ’ এর ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন,২০০৪ সালের ২১ আগস্ট এটি মূলত ১৯৭৫ সালের ১৫ ই আগস্টেরই একটি পুনরাবৃত্তি ঘটনা। সেদিন যারা বাঙালি জাতির জাতীয়তাবাদকে ধ্বংস করতে সমর্থ হয়, তারা বঙ্গবন্ধু কে স্ব শরীরে হত্যা করে কিন্তু তার জ্ঞান, চিন্তা, ত্যাগ সেটা সূর্যের মতো দেদীপ্যমান হয়ে আমাদেরকে আলোকিত করে চলেছে তাকে হত্যা করতে পারে নি।’

তিনি বলেন,’পরবর্তীতে ১৯৯৬ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এদেশের ক্ষমতায় ফিরে এসেছিলেন এবং যার মাধ্যমে দেশ এগিয়ে যাচ্ছিলো। কিন্তু ২০০৪ সালে তার উপর নারকীয় হামলা হয়েছিল।আমরা বুঝতে পারি ২০০৪ সাল দেশের রাজনৈতিক অবস্থা কেমন ছিলো! কি এক নারকীয় সময়, কি এক পৈশাচিক সময়! সে সময় জামায়াত বিএনপি সরকার তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব চায় নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘তারা এখনো বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের জন্য একটি বড় হুমকি। কারন এটি প্রমানিত হয়েছে সেসময় যেটি হয়েছে সেটি রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস৷ সেসময় রাষ্ট্রের প্রতক্ষ্য তত্বাবধানে এই সন্ত্রাস ঘটেছিল৷ যা পৃথিবীর ইতিহাসে এমন কোথাও নেই৷ আধুনিক রাষ্ট্রের সঙ্গায় এ জাতীয় সন্ত্রাসী কর্মকান্ডকে স্বীকৃতি দেয় না। বিগত এক যুগের বেশি সময় ধরে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নকামী রাষ্ট্রে পরিনত হয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথ ধরে তিনি হাঁটছেন এবং দেশকে এগিয়ে নিচ্ছেন।’

উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতানুল ইসলাম বলেন, ‘২১ শে আগস্ট নারকীয় হত্যাকান্ড এবং দেশকে নেতৃত্বশূন্য করে বিপথে পরিচালনা করার জন্য তখনকার যে মৌলবাদী শক্তি জামায়াত শিবির এবং বিএনপি সরকার ঘটিয়েছিলো সেদিন ২৪ জন স্বাধীনতা চেতনায় বিশ্বাসী নেতা-নেত্রী সেদিন জীবন দিয়েছিলো৷ ২১ শে আগস্টে নারকীয় হত্যাকান্ড কি উদ্দেশ্যে করা হয়েছিলো? তারা চেয়েছিলো বাংলাদেশের স্বাধীনতা, বাংলাদেশের মুক্তি, বাঙালিদের মুক্তি এবং বাংলা ভাষার মুক্তির যে নায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উত্তরসূরী জননেত্রী শেখ হাসিনা তিনি সহ স্বাধীনতা চেতনায় বিশ্বাসী যারা সেদিন উপস্থিত ছিলেন তাদের স্বমূলে ধ্বংস করে দেশকে পাকিস্তানি পন্থায় টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টায় যারা রত ছিলেন তারাই জরিত ছিলেন তা প্রমানিত হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘জামাত শিবির ও মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী শক্তিরা যে নারকীয় গ্রেনেড হত্যাকান্ডের মধ্য দিয়ে নারকীয় আনন্দ লাভ করেছিল এবং স্বাধীনতার স্বপক্ষে নেতৃত্ব শূন্য করতে চেয়েছিলো। সেই দেশ আজ জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে৷ আপনারা দেখেছেন যখন নির্বাচন আসে তখন অপপ্রচার বেড়ে যায়। মিথ্যাচার এবং অপপ্রচারে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের মানুষ কান দেবে না। কারন দেশ আজ এগিয়েছে। পাকা রাস্তা, ছেলেরা উন্নত স্কুলে পড়াশোনা করছে, ভুমিহীন দের ভূমি দেওয়া হয়েছে, দেশের মানুষ আরাম আয়েশে থাকছে৷ কিন্তু এক শ্রেনীর মানুষে গায়ে জ্বালা, এ দেশের মাথাপিছু আয় বেড়েছে, বড় বড় ব্রিজ, রাস্তা ঘাট, কর্ণফুলি ব্রিজ নির্মান হয়েছে। কারন সবাই স্বাধীনতার সুফল ভোগ করছে। জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে একইসাথে ক্রয় ক্ষমতাও বেড়েছে৷ কিন্তু অপপ্রচারকারীরা অন্ধকারের মধ্যে থাকতে চায়। তারা ষড়যন্ত্রের জরিত। কিন্তু আমরা বঙ্গবন্ধুর সৈনিক হিসেবে সে ষড়যন্ত্র হতে দিতে পারি না। ‘

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে থাকতে হলে সংবিধান মেনে চলতে হবে। এখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশে অপপ্রচারের ঠাই নেই। কেও বিচার ও আইনের ঊর্ধ্বে নয়। আমরা চাই তাদেরকে বিচারের আওতায় আনা হোক।’

প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের আহ্বায়ক অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন , ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষকরা সাম্প্রতিক সময়ে সায়েদী পক্ষে খোলা পোস্ট দিচ্ছে সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে তার সাথে জুলুম হয়েছে। তারা কিন্তু আমাদের সাথে আছেন আমাদের চারপাশে আছেন। তাহলে এসব জায়গা থেকে যদি আমরা বের হতে চাই। তাহলে ২১ আগস্ট বা ১৫ আগস্টসহ অসংখ্য নারকীয়তা যা আমরা বলতে পারি। এগুলোর বিচার আমারা চাই। একি সাথে ভবিষ্যতের কথা যখন আমরা চিন্তা করবো তখন শুধু বিচার চাইলে হবে না প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আজকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বড় অংশের শিক্ষক মনে করেন ছাত্ররাজনীতি না থাকা ভালো। যে শিক্ষক মনে করেন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি না থাকা ভালো তার আসলে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করার যোগ্যতা নেয়। ১৫ আগস্ট বা ২১ আগস্ট কিন্তু ইতিহাসের শেষ না হতে পারে এটা শুরু। সামনে প্রস্তত থাকতে হবে। বিশেষকরে সাম্প্রতিক সময়ে যে ঘটনা গুলো ঘটছে। যে প্রপাগাণ্ডা গুলো ছড়াচ্ছে যা খুব আশঙ্কাজনক। সে সব বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে এবং সে অনুযায়ী যদি আমরা পদক্ষেপ গুলো নিতে পারি তাহলে আসা করবো যে হত্যাকান্ডের বিচার চাচ্ছি সেটা হবে আর ভবিষ্যতে এধরণের ঘটনা ঘটা

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে