তৃতীয় লিঙ্গের সুইটিকে ঘর থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগ

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৩; সময়: ১২:০৪ pm |
তৃতীয় লিঙ্গের সুইটিকে ঘর থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঈশ্বরদী : পাবনার ঈশ্বরদীতে পৈতৃক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করতে তৃতীয় লিঙ্গের একজনকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত করে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তার ভাই, ভাবি ও সৎমায়ের বিরুদ্ধে।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শফিকুল ইসলাম সুইটি শুক্রবার সকালে ঈশ্বরদী থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার উপজেলা সদরের পাতিলাখালি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী শফিকুল ইসলাম সুইটি ওই এলাকার মৃত কামরুল ইসলামের সন্তান।

সুইটির ভগ্নিপতি আকরাম রায়হান বাবুর ভাষ্যমতে, তার শ্বশুর সাবেক পুলিশ সদস্য মরহুম কামরুল ইসলামের ছয় সন্তানের মধ্যে শফিকুল ইসলাম সুইটি চতুর্থ। তিনি তৃতীয় লিঙ্গের।

সুইটি এইচএসসি পাস করে পাবনা এডওয়ার্ড কলেজে অনার্সে ভর্তি হন। তবে বাবা মারা যাওয়ার পর তার পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায়। তিনি এখন তার অসুস্থ (পঙ্গু) মাকে নিয়ে নিজ বাড়িতে বসবাস করছেন।

সুইটির বাবার রেখে যাওয়া বাড়িটি দখলে নিতে চান তার মেজ ভাই শরিফুল ইসলাম বিপ্লব। বিপ্লব তার সৎমাকে সঙ্গে করে এ বাড়ি নিজেদের বলে দাবি করেন এবং সুইটিকে বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতে বলেন।

তিনি তৃতীয় লিঙ্গ। তার এ বাড়িতে কোনো অংশীদারত্ব নেই, এ কথা বলে একাধিক বার তাকে মারধর করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সুইটির সঙ্গে বিপ্লবের কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে বিপ্লব, তার স্ত্রী জেসমিন আক্তার ও সৎমা আঞ্জু ইসলাম তিনজন মিলে বাঁশের লাঠি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে সুইটির মাথা ও শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত করেন।

রক্তাক্ত অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তার মাথায় ১২টি সেলাই দেন।

সুইটির বড় ভাবি মরিয়ম বলেন, ‘আমার মেজ দেবর বিপ্লব আমাদের বাড়ি থেকে অনেক আগেই বের করে দিয়েছে। এখন সুইটিকে বের করে দিতে পারলেই বাড়িটি তার পরিপূর্ণ দখলে চলে আসবে। তাই সে নানান সময় সুইটিকে মারধর করে।’

প্রতিবেশী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সুইটির চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে আমরা দৌড়ে এসে দেখি তার মাথা দিয়ে রক্ত ঝরছে। তাকে দ্রুত স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাই। তার মাথা দিয়ে খুব রক্তক্ষরণ হচ্ছিল।’

শফিকুল ইসলাম সুইটি বলেন, ‘আমার বড় ভাইকে কয়েক বছর আগেই তারা বের করে দিয়েছে। আমার বোনদের এ বাড়িতে আসতে দেয় না। আমাকে ওরা যখন তখন মেরে ফেলতে পারে। আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’

এ বিষয়ে জানতে শরিফুল ইসলাম বিপ্লবের বাড়িতে গিয়ে তাদের পরিবারের কাউকে পাওয়া যায়নি। তার মোবাইলফোনও বন্ধ রয়েছে।

ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার বলেন, সুইটিকে মারধরের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। এ ঘটনায় সুইটি একটি অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন। এটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে