বাগাতিপাড়ায় বাদাম বিক্রেতা হত্যার ঘটনায় ৫ জন গ্রেপ্তার

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৩; সময়: ২:৩৩ অপরাহ্ণ |
বাগাতিপাড়ায় বাদাম বিক্রেতা হত্যার ঘটনায় ৫ জন গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক, নাটোর : নাটোরের বাগাতিপাড়ার বাদাম বিক্রেতা তপন চন্দ্র চৌধুরী (৩৫) হত্যার সাথে জড়িত সন্দেহে ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। শুক্রবার রাতে নওগাঁর আত্রাই ও নাটোরের বাগাতিপাড়ার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

বাদাম বিক্রেতা তপন চৌধুরীকে অনৈতিক সম্পর্কের প্রলোভন দিয়ে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়। তথ্য প্রযুুক্তির সহায়তায় নওগাঁর আত্রাই এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় এই হত্যাকান্ডের মুল হোতা বাগাতিপাড়া ডিগ্রি কলেজের সামনের বাড়ইপাড়া এলাকার মৃত বরোজ উদ্দিন সরকারের ছেলে সুদ ব্যবসায়ী মইনুল ইসলাম (৪৫) বলে জানায় র‌্যাব কর্মকর্তা।

তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে তার ৪ সহযোগীকে বাগাতিপাড়ার বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত চারজন হলেন, বাগাতিপাড়া উপজেলার বাড়ইপাড়া এলাকার আলম মোল্লার ছেলে মিলন মোল্লা ওরফে মিলন আহমেদ (২৫), একই এলাকার আমিরুল ইসলামের ছেলে আলামিন ইসলাম (২০), বিহারকোল এলাকার বাবলু শেখের ছেলে শাহাবুল শেখ (৩০ ) ও কৃষ্ণপুর এলাকার মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে শরিফুল ইসলাম (৩৫)।

রোববার বেলা ১২ টার দিকে র‌্যাব-৫ নাটোর ক্যাম্পে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে কোম্পানী কমান্ডার মেজর শাহারিয়াজ এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
প্রেসব্রিফিংয়ে মেজর শাহারিয়াজ বলেন, মৃত তপন চন্দ্র চৌধুরী একজন বাদাম বিক্রেতা। তিনি বাগাতিপাড়ার মালঞ্চি বাজারে বাদাম বিক্রি করতেন।

প্রতিদিনের মত ২১ সেপ্টেম্বর বিকেল ৩ টার দিকে বাদাম বিক্রির জন্য বাড়ি থেকে মালঞ্চি বাজারে আসে। ওই দিন রাত আনুমানিক সাড়ে ৮টার দিকে বাদাম বিক্রি শেষে সাহান এর দর্জির দোকান ঘরে বাদামের ডালি রেখে বাড়ি যাওয়ার কথা বলে ওই দোকান থেকে বিদায় নেন।

কিন্তু রাত ১০টাতেও তপন বাড়িতে না ফেরায় তার বড় ভাই ভাই শ্রী নিতিশ চন্দ্র চৌধুরী মালঞ্চি বাজারে এসে তপনের খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে বাড়ি ফিরে যান। মধ্যরাতে জানতে পারে বাগাতিপাড়া মহিলা কলেজের দক্ষিণ পার্শ্বে নীলচড়া মাঠের জনৈক সবুর মন্ডল (৫৫) এর আখ ক্ষেতের আইলের উপর একটি অজ্ঞাতনামা মরদেহ পড়ে আছে। সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে নিতিশ চন্দ্র চৌধুরী তার ভাইয়ের মরদেহ বলে সনাক্ত করেন।

র‌্যাব কর্মকর্তা আরও বলেন, হত্যাকান্ডেরমুল হোতা একজন সুদ কারবারি এবং পতিা ব্যবসার সাথে জড়িত। মৃত তপন চৌধুরীকে টাকা ধার দেন। কিন্তু টাকা পরিশোধ না করায় তপনের সাথে তার বিরোধ বাঁধে।

এক পর্যাায়ে তপনকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। ভিকটিমের চারিত্রিক দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে অনৈতিক প্রলোভন দিয়ে বাদাম বিক্রেতা তপন চৌধুরীকে বিহারকোল এলাকার জনৈক ইয়াসিনের ফার্মের কাছে ডেকে নেন।

ওই ফার্মের কাছে যাওয়া মাত্রই হত্যার সাথে জড়িতরা তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং এলোপাথারী ভাবে পিটিয়ে হত্যা করে। তাকে হত্যার পর নীলচড়া ওই ফসলি জমির আইলের ওপর ফেরে যায়। ঘটনাটি চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয় এবং এ ঘটনায় তার বড় ভাই থানায় মামলা দায়ের করলে আসামীরা গা ঢাকা দেন।

র‌্যাব-৫ ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় হত্যাকান্ডের মুল হোতা মইনুল ইসলামকে আত্রাই এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তার দেয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী বাগাতিপাড়াার বিভিন্ন স্থান থেকে অপর চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদের সময় হত্যাকান্ডের মূল হোতা মইনুল ইসলাম ঘটনার সাথে তার সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন। ধৃতদের বাগাতিপাড়া থানায় সোপর্দ করার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান এই র‌্যাব কর্মকর্তা।

 

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে