রাজশাহীতে সক্রিয় নিষিদ্ধ সংগঠন

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৫, ২০২৩; সময়: ১০:১৮ অপরাহ্ণ |
রাজশাহীতে সক্রিয় নিষিদ্ধ সংগঠন

নিজস্ব প্রতিদেক : ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বরে সংবাদ সম্মেলনের প্রস্তুতির সময় রাজশাহী নগরীর সোনাদিঘি মোড় থেকে হিযবুত তাহরিরের ১০ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছিল মহানগর পুলিশ। গ্রেপ্তারদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষক ড. সৈয়দ গোলাম মাওলা ছাড়াও বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকও ছিলেন।

জঙ্গি কার্যক্রমের অভিযোগে হিযবুত তাহরিরকে ২০০৯ সালের অক্টোবরে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তবু থেমে নেই তাদের কর্মকাণ্ড। এখনো তারা রাজশাহীর উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো টার্গেট করে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে। মহানগরীর বিভিন্ন এলাকার ছাত্রাবাসেও তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম চলছে।

এদিকে, কিছুদিন আগে মহানগরী বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক সংখ্যায় পোস্টার সাঁটিয়েছে হিযবুত তাহরির। এ পোস্টারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সেলফিও ছাপানো হয়। ৩০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৭টায় ‘আল ওয়াকিয়াহ্ ডট টিভি’ নামে একটি অনলাইন সম্মেলনে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে এগুলো সাঁটানো হয়। তবে এখনো দেওয়ালে অক্ষত আছে এ পোস্টারগুলো। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কের পাশের স্থাপনায় লাগানো আছে এসব। অনেকেই কৌতূহলী হয়ে পড়ছেনও সেগুলো।

অন্যদিকে, কয়েকদিন আগে মহানগরীর বোয়ালিয়া থানার দোশরমণ্ডলের মোড় এলাকায় দেখা যায়, একটি নির্মাণাধীন ভবনের সীমানা প্রাচীরজুড়ে লাগানো আছে হিযবুত তাহরিরের বড় বড় পোস্টার। সেখানকার চা দোকানি ফরহাদ হোসেন জানান, কয়েকদিন আগে রাতের বেলায় ১০-১২ জন ছেলে এসে এগুলো লাগিয়ে গেছে।

স্থানীয় যুবলীগ কর্মী সাদ বলেন, এর কয়েক মাস আগে একইভাবে নগরীতে পোস্টার লাগিয়েছিল হিযবুত তাহরির। পোস্টারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্পর্কে আপত্তিকর কথা ছিল। তখন আমরা তুলে ফেলেছিলাম। কিন্তু এবার তো পুলিশও পোস্টারগুলো তুলে ফেলেনি।

এ কারণে সাধারণ মানুষ সেগুলো পড়ছে। পোস্টারগুলোতে সরকার পতনের আহ্বান জানানো হয়েছে। নগরীতে পুলিশের তৎপরতা সেভাবে না থাকায় তারা সুযোগ পাচ্ছে বলেও তার অভিযোগ।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক সূত্র জানিয়েছে, হিযবুত তাহরিরের কার্যক্রম শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝেই বেশি। ইসলামের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে তারা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও রুয়েটসহ বিভিন্ন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের সংগঠনে ভেড়ানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে। অতীতে গ্রেফতার হওয়া বেশির ভাগ নেতাকর্মীই ছিল শিক্ষার্থী।

জানা গেছে, চলতি বছরের ১৬ এপ্রিল মহানগরীর বালিয়াপুকুর থেকে হিযবুত তাহরিরের সক্রিয় সদস্য মামুন অর রশিদ ওরফে মুন্নাকে (২৭) গ্রেপ্তার করা হয়। সে ঠাকুরগাঁওয়ের বাসিন্দা আনিসুর রহমানের ছেলে। আর তার দেওয়া তথ্যে ১৭ এপ্রিল চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ থানার কাজিরখিল থেকে আরেক সদস্য ইসহাক ওরফে ইসমাইল হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। কাজিরখিল গ্রামের বাবুল মিয়ার ছেলে। ইসমাইল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত তৃতীয় বর্ষের ছাত্র।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য অধ্যাপক সুলতান উল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যাতে রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে না পড়ে সে বিষয়ে আমরা সবসময়ই সতর্ক। শিক্ষার্থীদের ক্লাসের বাইরেও ব্যস্ত রাখতে নানা ধরনের ক্লাব ও খেলাধুলাসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো হচ্ছে। আমরা আশা করি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এ কার্যক্রম আর চালানোর সুযোগ পাবে না তারা।

আরএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অপস অ্যান্ড ক্রাইম) বিজয় বসাক বলেন, পোস্টার লাগানোর ঘটনা তদন্ত করছি। তদন্তে আমাদের অগ্রগতিও আছে। তবে গোপনীয়তার স্বার্থে এ বিষয়ে এখন কিছু বলতে পারছি না। সূত্র- যুগান্তর

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে