গোদাগাড়ীতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের অত্যাচারে অতিষ্ঠ শিক্ষক-কর্মচারী

প্রকাশিত: অক্টোবর ৩০, ২০২৩; সময়: ৭:৩৮ অপরাহ্ণ |
গোদাগাড়ীতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের অত্যাচারে অতিষ্ঠ শিক্ষক-কর্মচারী

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহার ও হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। প্রধান শিক্ষকের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে শিক্ষক-কর্মচারী ও অভিভাবকবৃন্দরাও। রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার বিদিরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আশরাফ আলী তুহিনের বিরুদ্ধে অসদচরণ ও দুর্ব্যবহারের অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে শিক্ষক কর্মচারীরা। এছাড়াও শিক্ষকদের প্রকাশ্যে রিতরস্কার এবং কুটুক্তির অভিযোগও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে রয়েছে। এর ফলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে র্দীঘ সময় থেকে শিক্ষার সুষ্ঠ পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে। সৃষ্টি হয়েছে বৃশ্রীঙ্খলা ও অচলাবস্থা।

এ ঘটনায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে গত ১২ অক্টোবর রাজশাহী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন শিক্ষক কর্মচারী ও ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবকবৃন্দরা। তবে প্রধান শিক্ষকের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে তাকে অপসারণের অভিযোগ দেয়ার পরেও কোন প্রতিকার হচ্ছে না। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মচারীদের মধ্যে শিক্ষিকা রুনা লাইলা, মো জুলফিকার হায়দার, মোছা: সায়েরা খাতুন, মোসা: নূরজাহান খাতুন, আলভিয়া, মোসা: তাসলিমা আখতার, তাসনিয়া রিকি, শফিকুল ইসলাম,আইরিণ, আসমা খাতুন, আবিদা খাতুন, আয়েশা খাতুন। এছাড়াও লিখিত অভিযোগে এলাকাবাসী প্রায় ১০০ মানুষ প্রধান শিক্ষক তুহিনের অপসারণের দাবিতে গনস্বাক্ষর দিয়েছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে আশরাফ আলী প্রধান শিক্ষক হিসাবে যোগদান করেন। এরপর থেকেই তিনি প্রকাশ্যে অভিভাবক এবং শিক্ষর্থীদের সামনে সহকারী শিক্ষকদের চরম অপমানজনক কথা বলে তাচ্ছিল্ল করেন। শিক্ষকদের যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন এবং অপমানজনক কথা বলেন প্রধান শিক্ষক। প্রধান শিক্ষকের এ রকম আচরণ ও কর্মখান্ডে শিক্ষার্থীদের পাঠদানে ব্যাঘাত ঘটছে।

বেশ কিছু শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা বলেন, রুনা লাইলা নামের একজন শিক্ষিকার ছেলে দুরারোগ্য জিবিএস রোগে আক্রান্ত হয়ে গত ১ অক্টোবর রামেক হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। এ পরিস্থিতিতে প্রধান শিক্ষক সহকারী শিক্ষিকা রুনা লাইলার পাসে না দাড়িঁয়ে তাকে বিভিন্ন ভাগে কুটুক্তি ও অসম্মান জনক কথা বলে অপমান অপদস্ত করেন।

অভিযোগ রয়েছে, তিন মাস আগে নূরজাহান খাতুন নামের একজন শিক্ষকের আট বছরের শিশুর চিকিৎসার জন্য ভারতে যাওয়ার প্রয়োজন হয়। এ কারণে ওই শিক্ষক প্রত্যয়নের জন্য প্রধান শিক্ষককে অনুরোধ করেন। পরে অনেক হয়রানির পর প্রত্যায়নপত্র দেন প্রধান শিক্ষক। তার অধিনস্ত শিক্ষকদের পাওনা নৈমত্তিক ছুটি দেওয়ার ক্ষেত্রেও নানা ভাবে অসহযোগিতা করেন ও হয়রানি করে থাকেন। প্রধান শিক্ষকের মেন অচরণে হয়রানির শিকার শিক্ষক এবং অভিভাবকরা স্থানীয় মাটিকাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হোসেল রানার কাছে গত ১০ অক্টোবর লিখিত অভিযোগ দেন।

এ বিষয় সোহেল চেয়ারম্যান বলেন, বিষয়টি তদন্ত করতে প্রতিষ্ঠানে গেলে আমার সামনেই প্রধান শিক্ষক তার অধীনস্ত শিক্ষকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। এমনকি আমার সাথেও খারাপ অচরণ করে বলেন, প্রতিষ্ঠান আমার, আমার আইনে চলবে।

তবে অভিযোগ সব অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক আশরাফ আলী বলেন, শিক্ষক, অভিভাবক ও চেয়ারম্যানের সাথে দুর্ব্যবহার ও অসদাচরণের অভিযোগ সঠিক না। আমার বিরুদ্ধে চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে একটি চক্রান্ত চলছে। চেয়ারম্যান আমাকে হুমকি দিয়েছে যে, তোকে তাড়াতে কতো দিন লাগে দেখিছি। আমার বিরুদ্ধে সব অভিযোগ মিথ্যা। আমার বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ উঠেছে তা একবার আমাকে জানানো হয়নি।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সাইদুল ইসলাম গোদাগাড়ীর সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার আলী হাসানকে বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দেন। এ ব্যাপারে সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার আলী হাসান বলেন, তদন্তের সময়ে আমাকে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সহকারী শিক্ষকরা অভিযোগ করেছেন। তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পরে এ বিষয় ব্যস্থা গ্রহণ করা হবে দ্রুত।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে