মাছ-মাংস-সবজির দাম বাড়তি, ক্রেতার টাকায় ঘাটতি

প্রকাশিত: নভেম্বর ৩, ২০২৩; সময়: ১১:৩৬ পূর্বাহ্ণ |
মাছ-মাংস-সবজির দাম বাড়তি, ক্রেতার টাকায় ঘাটতি

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : সাপ্তাহিক ছুটির দিনে (শুক্রবার) সাপ্তাহিক বাজার করতে এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী আব্দুল মালেক।

ঊর্ধ্বগতির বাজারে অল্প কিছু কেনাকাটা করতেই তার টাকা শেষ হয়ে যায়। তিনি বলেন, বাজারে মাছ, মাংস, সবজি সব কিছুর দামই বাড়তি। অল্প কিছু কিনতেই বাজেটের টাকায় ঘাটতি পড়ে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, কাঁচাবাজারে কম দামি সবজির মধ্যে রয়েছে একমাত্র পেঁপে। সেটির দামও ৪০ টাকা। বাকি সব ধরনের সবজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা। কোনো কোনো সবজির দাম সেঞ্চুরিকেও ওভার করছে। এই চড়া দাম গেলে আমাদের মতো সাধারণ ক্রেতারা কিনবে কীভাবে?

যদিও ব্যবসায়ীরা বলছেন, অবরোধের সময় এই দাম আরও বাড়তি ছিল, কারণ সেই সময় পরিবহন ভাড়া গুনতে হয়েছে অনেক বেশি।

শুক্রবার (৩ নভেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি বরবটি বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়, শিম ১২০ টাকা, পটল ৬০, করলা প্রতি কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, শসা প্রতি কেজি ৬০ টাকা, ঢেঁড়স কেজি ৬০ টাকা, গোল বেগুন কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, টমেটো ১২০ টাকা, গাজর ১২০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি, কাঁচামরিচ প্রতি কেজি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, লম্বা বেগুন প্রতি কেজি ৮০ টাকা, মুলা প্রতি কেজি ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা প্রতি কেজি ৮০ টাকা, ধুন্দল প্রতি কেজি ৬০ টাকা, ঝিঙ্গা প্রতি কেজি ৬০ টাকা, ফুলকপি প্রতি পিস ৫০ থেকে ৬০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৬০ থেকে ৮০ টাকা, আলু প্রতি কেজি ৬০ টাকা, কচুর মুখি প্রতি কেজি ৮০ টাকা এবং কচুর লতি প্রতি কেজি ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

অন্যদিকে সব ধরনের মাছও বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে প্রতি কেজি পাবদা মাছ ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, শিং মাছ প্রতি কেজি ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, চাষের কই ৩০০ টাকা, পাঙাশ মাছ প্রতি কেজি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, তেলাপিয়া প্রতি কেজি ২৩০ থেকে ২৫০ টাকা, রুই মাছ প্রতি কেজি ৩৩০ থেকে ৩৫০ টাকা, কাতল মাছ প্রতি কেজি ৩০০ থেকে ৩৩০ টাকা, গুড়া মাছ (কাচকি) প্রতি কেজি ৪৮০ টাকা, বাইম মাছ ছোটগুলো প্রতি কেজি ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা, টেংরা মাছ প্রতি কেজি ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকা, মাঝারি শোল মাছ প্রতি কেজি ১২৫০ টাকা, গলদা চিংড়ি প্রতি কেজি ১১০০ টাকা, ছোট চিংড়ি প্রতি কেজি ৬০০ টাকা, আইড় মাছ প্রতি কেজি ৭০০ টাকা, বোয়াল প্রতি কেজি ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা এবং রূপচাঁদা প্রতি কেজি সাইজ ভেদে ৮০০ থেকে ১১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছ।

এছাড়া বয়লার প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকা, সোনালী মুরগি ৩২০ থেকে ৩৩০ টাকা, কক মুরগি ৩৫০ টাকা, গরু মাংস প্রতি কেজি ৭৫০ টাকা এবং খাসির মাংস প্রতি কেজি ১১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রাজধানীর মহাখালী বাজারের সবজি বিক্রেতা শরিফুল ইসলাম বলেন, বেশ কিছু দিন ধরেই সবজির দাম বাড়তি যাচ্ছে। তবে রাজনৈতিক দলের হরতাল অবরোধের সময় পরিবহন সংকট এবং বাড়তি ভাড়ার জন্য সবজির দাম আরেক দফা বেড়েছিল।

পরে কিছুটা কমেছে সবজির দাম। তবে শীত মৌসুম আসার আগ পর্যন্ত সবজির দাম এমনই থাকবে। শীত আসলে সব ধরনের সবজির দাম কমে আসবে।

এদিকে গুলশান সংলগ্ন লেকপাড় মাছ বাজারে সকাল সকাল মাছ কিনতে এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী মোজাম্মেল হক। তিনি বলেন, তেলাপিয়া, পাঙাশ, চাষের কই এগুলো মাছের দাম অন্যান্য মাছের থেকে অনেকটা কম থাকে।

আর এগুলোই আমাদের মতো সাধারণ ক্রেতারা কিনে। কিন্তু এগুলোর দামও এখন বাড়তি। আর অন্য মাছের এতই বেশি দাম যে কেনা সাধ্যের বাইরে চলে গেছে।

আমরা মাছে ভাতে বাঙালি কিন্তু এই প্রবাদ বাক্য এখন আর ঠিক নেই। কারণ এত বেশি দামে মাছ কেনার সক্ষমতা আমাদের অনেকেরই নেই। মাছের দাম বাড়তি বিষয় একই বাজারের মাছ ব্যবসায়ী শাজাহান মিয়া বলেন, সব মাছের দাম বাড়তি যাচ্ছে।

অবরোধের সময় পরিবহনের সংকটের কারণে মাছ আনতে খরচ বেশি লেগেছে তাই দাম বেড়েছে। তাছাড়া মাছের মাছের ফিডের (খাবার) দাম বেড়ে যাওয়ার পর থেকেই মাছের দাম কমছে না।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে