নেপালের ভূমিকম্পে মৃত্যু বেড়ে ১৫৭

প্রকাশিত: নভেম্বর ৪, ২০২৩; সময়: ১১:০৫ অপরাহ্ণ |
নেপালের ভূমিকম্পে মৃত্যু বেড়ে ১৫৭

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : নেপালে হওয়া শক্তিশালী ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৫৭ জনে দাঁড়িয়েছে। উদ্ধারকর্মীরা জীবিতদের খোঁজে সন্ধান চালিয়ে যাচ্ছেন। শনিবার তারা ধসে পড়া ঘরবাড়ির ধ্বংসস্তূপ হাত দিয়ে সরিয়ে উদ্ধার প্রচেষ্টা শুরু করে দেন।

রয়টার্স জানায়, আট বছরের মধ্যে হওয়া সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক এই ভূমিকম্পে এদিন সকাল পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ১৫৭ জন ছিল। এ ভূমিকম্পে অনেক দূরের নয়া দিল্লির ভবনগুলোও কেঁপে উঠেছিল।

নেপালের ন্যাশনাল সিসমোলজিক্যাল সেন্টার জানিয়েছে, রাজধানী কাঠমাণ্ডু থেকে ৫০০ কিলোমিটার পশ্চিমে কারনালি প্রদেশের জাজরকোট জেলার রামিদাণ্ডায় শুক্রবার রাত ১১টা ৪৭ মিনিটে আঘাত হানে ৬ দশমিক ৪ মাত্রার ভূমিকম্পটি।

তবে জার্মান রিসার্চ সেন্টার ফর জিওসায়েন্সেস (জিএফজেড) বলছে, ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৭; আর ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভের তথ্য অনুযায়ী ভূমিকম্পটি ছিল ৫ দশমিক ৬ মাত্রার।

রাতে ভূমিকম্প হলেও কেবলমাত্র শনিবার ভোরে ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলের কাছে দুর্গম পাহাড়ি এলাকাগুলোতে পৌঁছতে সক্ষম হন জরুরি উদ্ধারকর্মীরা। পৌঁছেই তারা জীবিতদের সন্ধানে কাজে নেমে পড়েন। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কর্মকর্তারা।

জাজারকোট জেলার কর্মকর্তা হরিশ চন্দ্র শর্মা টেলিফোনে রয়টার্সকে বলেছেন, “আহত কয়েকশ জনে দাঁড়াতে পারে আর মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়তে পারে।”

ভূমিকম্পের তীব্রতা প্রবল না হলেও অঞ্চলটির অবকাঠামোগুলো দুর্বল হওয়ায় এবং তখন অধিকাংশ মানুষ ঘুমিয়ে থাকায় ক্ষয়ক্ষতি ও মৃত্যুর সংখ্যা তুলনামূলক বেশি হতে পারে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

তারা জানিয়েছেন, এক লাখ ৯০ হাজার জনঅধ্যূষিত জাজারকোট মূলত পাহাড়ি এলাকা। ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এখানকার গ্রামগুলো বেশ দুর্গম। বহু এলাকায় জরুরি দলগুলোকে আগে ভূমিধসে বন্ধ হয়ে যাওয়া পথগুলো পরিষ্কার করতে হবে, তাই উদ্ধারকাজ হয়তো প্রত্যাশামতো দ্রুত শুরু করা যাবে না। এই প্রচেষ্টায় যোগা দেওয়ার জন্য হেলিকপ্টার ও ছোট বিমানগুলোকে প্রস্তুত থাকার জন্য বলা হয়েছে, জানিয়েছেন তারা।

নেপালের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর জানিয়েছে, কারনালি প্রদেশের জাজারকোটে ৯৯ জন নিহত ও ৫৫ জন আহত হয়েছেন এবং পশ্চিম রুকুম জেলায় ৩৮ জন নিহত ও অন্তত ৮৫ জন আহত হয়েছেন। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জাজারকোটে তিনটি শহর ও তিনটি গ্রাম ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ভূমিকম্পে হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতিতে নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দহল (প্রচণ্ড) গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি শনিবার সকালে ক্ষয়ক্ষতি দেখতে চিকিৎস ও প্রয়োজনীয় উপকরণসহ জাজারকোটের দুর্গত এলাকা পরিদর্শনে যান। জাজারকোট হাসপাতালে আতদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার পাশাপাশি তাদের স্বজনদের সঙ্গেও কথা বলেন তিনি।

এর আগে ২০১৫ সালে নেপালে দু’টি ভয়াবহ ভূমিকম্পে নিহত হয়েছিল নয় হাজারের মতো মানুষ। তখন কয়েকটি শহর, শতবছরের পুরনো অনেক মন্দির, ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা পুরোপুরি মাটির সাথে মিশে গিয়েছিল। ধ্বংস হয়েছিল ১০ লাখের বেশি ঘরবাড়ি।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে