বরেন্দ্রের মাঠজুড়ে সোনালী স্বপ্নের ছড়াছড়ি
আসাদুজ্জামান মিঠু : চলতি বছর একটু দেরিতে বর্ষার শুরু হয়েছিল। তাই সেচের পানির উপর নির্ভর করেই আমন চাষে মাঠে নেমে পড়েছিলেন কৃষকেরা। তাই এবার একটু আগাম ধান ঘরে উঠবে কৃষকের। বরেন্দ্র অঞ্চলের মাঠে এখন সবুজপাতা ফাঁকে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন বাতাসে দুলছে। সোনালী ধানে ধানে ভরে উঠছে মাঠ। সেই সঙ্গে রঙিন হয়ে উঠছে প্রান্তিক কৃষকের স্বপ্ন। মাঠজুড়ে এখন সোনালী স্বপ্নের ছড়াছড়ি। বরেন্দ্রের মাঠগুলোতে যতদুর চোখ যায় চারিদিকে সোনালী ফসলের সমারোহ।
চলতি কার্তিক মাসের মাঝামাঝি থেকে বরেন্দ্র অঞ্চলের অল্প পরিসরে সোনার ধান কাটা শুরু করছেন কৃষকেরা। অগ্রহায়ণ মাস পড়লেই পুরোদমে আমন কাটা-মাড়াই শুরু হবে বরেন্দ্র অঞ্চলে।
এর আগে আমনের মাঝিামাঝি সময়ে নানান রোগ বালায় ও ইঁদুরের অত্যাচারে আমন ক্ষেতের সামান্য ক্ষতি হলেও কৃষি অধিদপ্তর ও কৃষকদের চেষ্টায় সকল ক্ষতি কাটিয়ে উঠেছেন বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষকেরা। এখন ফলন ভাল হবে এমন স্বপ্ন নিয়ে নতুন করে আশাই বুক বেধেছেন এ অঞ্চলের চাষিরা।
বরেন্দ্রে কৃষকেরা জানান, পুরো মাঠ এখন সোনালী রঙে সেজেছে। মাঠে গেলে বাতাসের দোলে সোনালী ধানের সুগন্ধীতে মন প্রান জুড়িয়ে যাচ্ছে। অন্য যে কোন বছরের চেয়ে চলতি বছর ধানের মাথা ভাল আছে। তাই বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বর্তমানে বাজারে আমনের ভাল দাও আছে।
রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরে তথ্য মতে, চলতি মৌসুমে রাজশাহী জেলায় আমনের লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছে ৭৩ হাজার ২২৪ হেক্টর জমিতে। চাষাবাদ হয়েছে ৭৬ হাজার ৫২৩ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে পোকা দমনের পদ্ধতিতে পার্চিং-লগ, লাইন এবং ধোঁনছা গাছ লাগানো হয়েছে প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ হাজার হেক্টর জমিতে। এছাড়াও রাজশাহী অঞ্চলের রাজশাহী, নওগাঁ, নাটোর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় আমন চাষাবাদ হয়েছে আরো ৩ লাখ ৫০ হাজার হেক্টরের উপরে।
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার চান্দলায় গ্রামের কৃষক তসিকুল ইসলাম জানান, চলতি মৌসুমে ১২ বিঘা জমিতে সুমন স্বর্না জাতের ধান চাষাবাদ করেছেন। বর্তমানে তার ক্ষেতের ধান পাক ধরেছে। গতকাল হতে ধান কাটা শুরু হয়েছে।
তানোর উপজেলার পাঁচন্দর গ্রামের কৃষক বুলবুল জানান, চলতি মৌসুমে ৯ বিঘাতে আমন চাষাবাদ করেছেন। আমনের মাঝামাঝি সময়ে পোকা ও ইঁদুরের অত্যাচার ছিল তবুও সমস্যা নেই,কারণ অন্যসব বছরের চেয়ে এবার আমন ধানের শীষ ভাল আছে ফলে বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তানোর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লা আহম্মেদ জানান,এবার অগ্রিম বৃষ্টি পেয়ে কৃষকেরা আগাম আমন রোপন করেছিলেন॥ এর জন্য সকল প্রকার কৃষকদের সহযোগিতা করেছেন কৃষি সম্প্রাসারণ অধিদপ্তর। চলতি মৌসুমে কৃষকেরা স্বর্না,একান্ন, ব্রি ধান,৮৭ ও বিনা ধান ১৭ জাতের আবাদ বেশি করেছেন। এসব ধান পানি সাশ্রয়ী ও উচ্চ ফলনসীল। এখন মাঠে মাঠে ধানের পাক ধরেছে। কিছু কিছু কৃষক অল্প পরিসরে ধান কাটা শুরুও করেছেন। অন্য যে কোন বছরের চেয়ে এবার ফলন বেশি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।