রাবিতে সাংবাদিকের উপর হামলা

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৬, ২০২৩; সময়: ৭:১৪ অপরাহ্ণ |
রাবিতে সাংবাদিকের উপর হামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাবি : দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি রায়হান ইসলামের উপর ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হামলার ঘটনা ঘটেছে। রবিবার (২৬ নভেম্বর) রাত দেড়টার দিকে উচ্চস্বরে গান বাজাতে নিষেধ করা নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে হওয়া বাকবিতণ্ডা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তার উপর এই হামলা করা হয়।

অভিযুক্তরা হলেন- শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আল-আমিন আকাশ, চারুকলা অনুষদের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ইমরান এবং ফাইন্যান্স বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সম্রাট, আরবী বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আমির হামজা এবং একই বিভাগ ও শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নাজিমসহ আরও কয়েকজন। এরমধ্যে আল-আমিন আকাশ শহীদ হবিবুর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি এবং বাকিরা ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে পরিচিত।

এঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবি জানিয়ে উপাচার্য বরাবর স্বারকলিপি দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন সাংবাদিক সংগঠন রাবি রিপোর্টার্স ইউনিটি, রাবি সাংবাদিক সমিতি ও রাবি প্রেসক্লাব। রবিবার দুপুরে এই স্মারকলিপি প্রদান করে সংগঠন তিনটির নেতারা।

স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, রবিবার রাত দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ হবিবুর রহমান হলের ১ম ব্লকের ২১৬ নম্বর কক্ষে সাউন্ডবক্সে উচ্চস্বরে গান বাজাচ্ছিলেন আল-আমিন আকাশ, ইমরান এবং সম্রাট। একই হলের কয়েকজন আবাসিক শিক্ষার্থী তাদের উচ্চস্বরে গান বাজাতে নিষেধ করেন। এসময় তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।

স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়েছে, এসময় দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার্স ইউনিটির দপ্তর সম্পাদক রায়হান ইসলাম ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে আকাশ, ইমরান ও সম্রাট, আমির হামজা, নাজিমসহ আরও কয়েকজন মিলে তাকে আক্রমণ করেন এবং এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মারতে থাকেন। এঘটনার প্রেক্ষিতে আমরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিকরা মনে করি যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও সংবাদকর্মীর উপর সহিংস আঘাত বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক নিরাপত্তাব্যবস্থার জন্য হুমকিস্বরূপ। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।

এ ঘটনার প্রেক্ষিতে স্মারকলিপিতে দুই দফা দাবি জানিয়েছেন সাংবাদিকরা। দাবি দুইটা হলো- অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে প্রশাসনিক ব্যবস্থা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় ও হল থেকে তাদের স্থায়ী বহিষ্কার করা এবং মারধরের বিষয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত আল-আমিন আকাশ বলেন, আমি ২১১ নাম্বার রুমে থাকি। গত রাতে ২১৬ নাম্বার রুমে গান-বাজনা হচ্ছিল। এসময় উপর তলা থেকে শাহাদাত নামে এক বড়ভাই এসে জানতে চাই যে, কোন রুমে গান-বাজনা হচ্ছে। ওইসময় আমি ওনাকে তুমি বলে কথা বলেছিলাম। উনি আমার এক ব্যাচ সিনিয়র। একসময় ছাত্রলীগ করতেন। সে হিসাবে ওনার সাথে আমার বেশ ভালো সম্পর্ক। তুমি করে বলায় উনি আমাকে গালি দেন। একারণে ওইসময় একটু ধাক্কাধাক্কি হয়েছিল। রায়হান ২১৭ নাম্বার রুমে থাকে এবং শাহাদাত ভাইয়ের বিভাগের ছোটো ভাই হওয়ায়, এসময় সেও ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছিল। তার সাথে আমাদের কারোরই কিছু হয়নাই। সে সাইডে ছিল। তাকে মারধরের বিষয়টা একদমই ভুল কথা।

এ বিষয়ে রাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু বলেন, ঘটনাটি সম্পর্কে আমি অবগত হয়েছি। ঘটনার সত্যতা প্রমানিত হলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিবো।

হবিবুর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক শরিফুল ইসলাম বলেন, রায়হান একটা অভিযোগ জানিয়েছে। অভিযোগের প্রেক্ষীতে হলের হাউজ টিউটর অধ্যাপক গৌতম দত্তকে আহ্বায়ক এবং অন্য হাউজ টিউটরদের সদস্য করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামীকাল কমিটি দুই পক্ষের সাথে বসে তদন্ত সাপেক্ষে শীঘ্রই তাদের সিদ্ধান্ত জানাবে। এরপর আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ নিবো।

জড়িতদের শাস্তির দাবিতে স্মারকলিপি প্রদানকালে উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, বিষয়টি শোনার পরেই আমি হল প্রশাসনকে ডেকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে