অধ্যক্ষ নিয়োগের অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ, তদন্ত করলো মাউশি

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৪, ২০২৩; সময়: ৪:৫৮ অপরাহ্ণ |
অধ্যক্ষ নিয়োগের অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ, তদন্ত করলো মাউশি

নিজস্ব প্রতিবেদক, বদলগাছী : নওগাঁর বদলগাছী মহিলা ডিগ্রি কলেজের ১৩তম শিক্ষক মাহবুব আলমের অধ্যক্ষ পদে নিয়োগের অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।

ওই কলেজের সহকারী অধ্যাপক মমতাজ জাহানের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত রোববার মাউশির তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি কলেজ এসে মাহবুব আলমের অধ্যক্ষ পদে নিয়োগের অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করেন।

মাউশির তিন সদস্যের তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন, এইচ,আর,এম ইউনিটের সহকারী পরিচালক (১) আশেকুল হক, শিক্ষা কর্মকর্তা (আইন-২) আল-আমিন ও কর্মাসিয়াল সেলের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এম সিদ্দিকুর রহমান।

ওই কলেজের সহকারী অধ্যাপক মমতাজ জাহানের লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালে কলেজের অধ্যক্ষের পদ শূন্য হয়। এরপর নিয়মানুসারে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব নেওয়ার কথা রয়েছ।

কলেজে উপাধক্ষের পদটিও ছিলো শূন্য। জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে কলেজের জ্যেষ্ঠ শিক্ষকের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদে থাকার কথা রয়েছে। জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘণ করে কলেজের ১৩ নম্বর শিক্ষক মাহবুব আলমকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

জনবল কাঠামো ২০২১ বলা আছে, অধ্যক্ষের সহকারী অধ্যাপক হিসাবে ৩ বছরের অভিজ্ঞতাসহ কলেজে ১২ বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

মাহবুব আলমের সহকারী অধ্যাপক অভিজ্ঞতা মাত্র ১৫ মাস। অধ্যক্ষ নিয়োগের সময় মাহবুব আলম নিজেই ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেছেন। সেই সময় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে তিনি নথিপত্রে স্বাক্ষর করেছেন।

এ নিয়ে বির্তক দেখা দিলে পরে উম্মে হাবিবাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দেখানো হয়। মাউসির অফিস আদেশ অনুযায়ী অধ্যক্ষ নিয়োগে নিকটবর্তী সরকারি কলেজের ডিজির প্রতিনিধি থাকতে হবে।

সেই অফিস আদেশ অনুযায়ী বদলগাছী বঙ্গবন্ধু সরকারি মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ ডিজি প্রতিনিধি থাকার কথা রয়েছে । কিন্তু বদলগাছী বঙ্গবন্ধু সরকারি মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষকে নিয়োগের কথা জানানো হয়নি।

নজিপুর সরকারি কলেজ থেকে ডিজি প্রতিনিধি নিয়ে অধ্যক্ষ নিয়োগ কার্যক্রম সম্পুর্ণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় অধ্যক্ষ মাহবুব আলম বলেছিলেন বদলগাছী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ নিয়োগ থাকতে অনীহা জানিয়েছিলেন।

অথচ বদলগাছী বঙ্গবন্ধু সরকারি মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষকে মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ নিয়োগের ব্যাপারে কিছু বলাই হয়নি। বদলগাছী বঙ্গবন্ধু সরকারি মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ এব্যাপারে লিখিত প্রত্যয়ন দিয়েছেন।

ওই কলেজের একটি সূত্র জানিয়েছে, তদন্ত কমিটি অধ্যক্ষ নিয়োগের যোগ্যতার কাগজপত্র দেখেছেন। কলেজের অভিযুক্ত অধ্যক্ষ, অভিযোগকারী ও কয়েক জন শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলেছেন।

আইসিটি প্রভাষক নজরুল ইসলাম বলেন, জেষ্ঠ্যতার ভিত্তিতে কলেজে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগ দেওয়ার কথা।

পরিসংখ্যানের প্রভাষক মাহবুব আলম ১৩ তম ছিলেন। তাকে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।

গোপনে আবার তাকে অধ্যক্ষ নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অধ্যক্ষ নিয়োগের সময় বাংলা বিভাগের শিক্ষক উম্মে হাবিবাকে কাগজে-কলমে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্বে ছিলেন। এসময় মাহবুব ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেছেন।

তবে কলেজের অধ্যক্ষ মাহবুব আলম বলেন, আমার অধ্যক্ষ পদে নিয়োগের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিল। মাউশির তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি রোববার কলেজে এসে অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করেছেন। আমার বিরুদ্ধে দেওয়া অভিযোগ সত্য নয়।

জানতে চাইলে মাউশির তদন্ত কমিটির সদস্য কর্মাসিয়াল সেলের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এম সিদ্দিকুর রহমান বলেন, আমরা তদন্ত বিষয়ে গণমাধ্যমে কিছু বলব না।

আমরা সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলেছি, নিয়োগের কাগজপত্র দেখেছি। আমরা তদন্ত প্রতিবেদন নির্ধারিত ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে দাখিল করব।

 

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে