শিবগঞ্জে পেঁয়াজ চাষে ঝুঁকছে কৃষক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৯, ২০২৩; সময়: ৮:০৯ অপরাহ্ণ |
খবর > কৃষি
শিবগঞ্জে পেঁয়াজ চাষে ঝুঁকছে কৃষক

নিজস্ব প্রতিবেদক, শিবগঞ্জ : শিবগঞ্জে পেঁয়াজ চাষে ঝুঁকছে কৃষক। জানা গেছে, সিন্ডিকেটের মাধ্যমে হঠাৎ করে পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেলেও শিবগঞ্জে বিভিন্ন জাতের পেঁয়াজ উঠতে শুরু করেছে। ফলে কমেছে পেঁয়াজের দাম। বর্তমানে শিবগঞ্জে কেজি প্রতি ৮০-৯০ টাকা দরে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। উপজেলার মোবারকপুর ইউনিয়নের কৃষক দুরুল হোদা বলেন, কম সময়ে, কম খরছে ও কম পরিশ্রমে পেঁয়াজ ফসল খুবই লাভজনক।

আমি গত বছর দেড় বিঘা পেঁয়াজ আবাদ করে প্রায় ৬০ মন পেঁয়াজ পেয়েছি। বিক্রয় করেছি ৫০ হাজার টাকায়। খরছ হয়েছিল ২০ হাজার টাকা। ফের একই জমিতে পেঁয়াজের আবাদ করেছি। আশা করি ভাল ফলন পাবো। তাছাড়া কৃষি বিভাগ থেকে সব সময় খোঁজ খবর নেন এবং পরামর্শ দেন। কৃষি বিভাগের ভাষ্য, যে হারে পেঁয়াজের আবাদ ও ফলন হচ্ছে, তাতে শিবগঞ্জের চাহিদা মিটিয়েও বেশী হবে। কিন্তু বিভিন্ন মোকামে পেঁয়াজ রাখায় মাঝে মধ্যে কৃত্রিম উপায়ে পেঁয়াজের সংকট সৃষ্টি হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছর মৌসুমে শিবগঞ্জে পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে প্রায় ২ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে। ফলনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪৫ হাজার ৩৯০ মেট্রিক টন। সূত্র মতে, শিবগঞ্জে চলতি মৌসুমে পেঁয়াজের আবাদ হওয়া জাতগুলো হলো কন্দল তাহেরপুরী, ফরিদপুরী, বারি-২, সুকসাগর এন-৫৩। সামনে আরো পেঁয়াজের আবাদ বাড়বে। বর্তমানে যে জাতের পেয়াজ উঠতে শুরু করেছে, সেগুলোর ফলন অন্যান্য বছরের অনেক বেশী। প্রতি হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ উৎপাদন হচ্ছে ১৭ মেট্রিক টন। তাছাড়া দামও ভাল পাওয়া যাচ্ছে। কৃষি অফিস বলছে, পেঁয়াজ ফসল অল্প সময়ে, অল্প শ্রমে ও অল্প খরচে অধিক ফলন হওয়ায় কৃষক দিন দিন পেঁয়াজ চাষে ঝুঁকছে।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা গোলাম আজম কনক ও রয়েল আলী জানান, পেঁয়াজ আবাদে শিবগঞ্জের কৃষকরা যেভাবে ঝুঁকছে তাতে অল্প কিছু দিনের মধ্যে বাণিজ্যিকভাবে পেঁয়াজ আবাদ হবে। তারা আরো জানান, গত বছর শিবগঞ্জে পেঁয়াজের আবাদ হয়েছিল ২ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে। যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ হাজার ৭২০ মেট্রিক টন। কিন্তু ফলন বেশি হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশী পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছিল। ফলনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল হেক্টর প্রতি ১৫ মেট্রিক টন। কিন্তু ফলন হয়েছিল প্রায় ১৬ মেট্রিক টন। এর আগে পেঁয়াজের আবাদ হয়েছিল প্রায় ১ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে। ফলনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল প্রায় ১৪ মেট্রিক টন।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শরিফুল ইসলাম জানান, শিবগঞ্জে প্রায় আট লাখ মানুষ বসবাস করে। প্রতিটি মানুষের জন্য প্রয়োজনে প্রতিদিন ৪০ গ্রাম পেঁয়াজ। সে হিসেবে শিবগঞ্জে চাহিদা পূরণ করে অনেক বেশি পেঁয়াজ কৃষকরা বাণিজ্যিকভাবে বিক্রয় করতে পারবে। কিন্তু শিবগঞ্জের পেঁয়াজ সংরক্ষণের কোন ব্যবস্থা না থাকায় কৃষক পেঁয়াজ উঠার সাথে সাথে কম দামে বিক্রয় করতে বাধ্য হয়। ফলে বড় বড় ব্যবসায়ীরা কেবল সুবিধা ভোগ করে এবং উৎপাদনকারী ও সাধারণ মানুষ প্রতারণার শিকার হয়। তিনি আরো জানান, কৃষকরা পেঁয়াজ উৎপাদনের সাথে সাথে যেন নায্য দাম পায় এবং বেশি আগ্রহী হয় সে জন্য কৃষি সম্প্রসারণ দপ্তরের পক্ষ থেকে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া প্রত্যেক কৃষকের সাথে যোগাযোগ করে সব সময় পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

 

পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে