রাজশাহীতে বাড়ছে নির্বাচনি সহিংসতা

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২১, ২০২৩; সময়: ১২:০৮ অপরাহ্ণ |
রাজশাহীতে বাড়ছে নির্বাচনি সহিংসতা

নিজস্ব প্রতিবেদক : নির্বাচনি প্রচার শুরু হতে না হতেই রাজশাহীর বিভিন্ন আসনে ছড়িয়ে পড়েছে সহিংসতা। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলার পাশাপাশি নির্বাচনি কার্যালয় ভাঙচুরের বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে।

মঙ্গলবার বাগমারা, দুর্গাপুর ও চারঘাটে ১০টি নির্বাচনি সহিংসতার ঘটনা ঘটে। এসব আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা অভিযোগ করেন, নৌকার প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকরা বেপরোয়া হয়ে প্রচারে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছেন। ক্ষেত্র বিশেষে তাদের কর্মী-সমর্থকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালাচ্ছে। পোস্টার কেড়ে নিয়ে পুকুরে নিক্ষেপ করার মতো ঘটনাও ঘটেছে। দুর্গাপুরের সহিংসতার এক ঘটনায় নৌকার তিন কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে অন্য ঘটনাগুলোর বিষয়ে পুলিশ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের বিভিন্ন স্থানে মঙ্গলবার ৬টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। নৌকার প্রার্থী আবুল কালাম আজাদের কর্মী-সমর্থকরা হামলা পরিচালনা করে। এর মধ্যে ওইদিন সন্ধ্যার পর বাগমারা নরদাশ ইউনিয়নের নরদাশ বাজারে স্বতন্ত্র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হকের কাঁচি প্রতীকের নির্বাচনি অফিসে হামলা করে নৌকা প্রার্থী কালামের কর্মী-সমর্থকরা। জানা যায়, ঘটনার সময় স্বতন্ত্র প্রার্থী এনামুল হক এমপি ওই অফিসে নেতাকর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করছিলেন।

প্রার্থীর সামনেই তার নেতাকর্মীদের বাঁশ ও লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়। এতে ৬ জন আহত হন। হামলাকারীরা নির্র্বাচনি অফিসের চেয়ার টেবিল ভাঙচুর ও পোস্টার লুট করে। ওইদিন রাত ১০টার দিকে উপজেলা সদর ভবানীগঞ্জ বাজারের গোডাউন মোড়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী এনামুলের কাঁচি প্রতীকের নির্বাচনি অফিসে হামলা করে নৌকা প্রার্র্থীর একদল সশস্ত্র কর্মী।

তারা অফিস ভাঙচুর ছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থীর ৭ কর্মীকে পিটিয়ে আহত করে। ওইদিন বাগমারার মাড়িয়া ইউপির যাত্রাগাছী, গোবিন্দপুর ইউপির হাটদামনাশ বাজার, তাহেরপুর পৌরসভার অর্জুনপাড়া ও গণিপুর ইউনিয়নের আঁচিনঘাট এলাকায় কাঁচি প্রতীকের গাড়ি ও প্রচার মাইক ভাঙচুর, পোস্টার কেড়ে নিয়ে পুকুরে ফেলে দেওয়া এবং ১৮ কর্মীকে পিটিয়ে আহত করে নৌকার কর্মী-সমর্থকরা। এসব ঘটনায় বাগমারা থানায় অভিযোগ দেওয়া হলেও পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।

এ ব্যাপারে রাজশাহী-৪ আসনের সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উজ্জ্বল হোসেন জানান, কিছু বিশৃঙ্খল ঘটনার অভিযোগ এসেছে। এসব বিষয়ে পুলিশকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনের দুর্গাপুরে স্বতন্ত্র প্রার্থী ওবায়দুর রহমানের ঈগল প্রতীকের পোস্টার কেড়ে নিয়ে তিন কর্মীকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই ঘটনায় রাতেই দুর্গাপুর থানায় মামলা হলে পুলিশ নৌকা প্রতীকের তিন কর্মীকে গ্রেফতার করে। রাজশাহী-৬ (চারঘাট-বাঘা) আসনের শলুয়া ইউনিয়নের বামনদীঘা বাজারে মঙ্গলবার স্বতন্ত্র প্রার্থী রাহেনুল হকের কাঁচি প্রতীকের নির্বাচনি অফিস ভাঙচুর এবং একই সময়ে মালেকের মোড় এলাকায় কাঁচি প্রতীকের গাড়ি ও মাইক ভাঙচুর করে নৌকার প্রার্থী শাহরিয়ার আলমের কর্মী-সমর্থকরা।

রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী চলচ্চিত্র অভিনেত্রী শারমিন আক্তার নিপা মাহিয়া মাহি অভিযোগ করেন নৌকার প্রার্থীর লোকজন তানোর ও গোদাগাড়ীতে নির্বাচনি অফিস করতে তার লোকজনকে বাধা দিচ্ছে।

রাজশাহী-১ আসনের আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম রাব্বানীর কাঁচি প্রতীকের নেতাকর্মীদের প্রকাশ্যে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গোলাম রাব্বানীর ভাই সাবেক যুবলীগ নেতা শরিফুল ইসলাম বলেন, সোমবার তানোর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল বাসার সুজন তানোরের তালোন্দ বাজারে এক প্রচার সভায় রাব্বানীর নেতাকর্মীদের পা ভেঙে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। অব্যাহতভাবে নির্বাচনি সহিংসতা প্রতিরোধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, কিছু ঘটনায় ইতোমধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সূত্র- যুগান্তর

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে