রাজশাহীতে ভোটের জটিল সমীকরণে আটকা বাদশা

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৭, ২০২৩; সময়: ১:৩৭ অপরাহ্ণ |
রাজশাহীতে ভোটের জটিল সমীকরণে আটকা বাদশা

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহী-২ (সদর) আসনে টানা তিনবারই জোটের শরিক হিসাবে নৌকা প্রতীক নিয়ে এমপি হয়েছেন ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা। আসন্ন নির্বাচনেও তিনি ১৪ দলীয় জোটের প্রার্থী। কিন্তু রাজশাহী সদরে ভোটের হিসাব-নিকাশের নানা জটিল সমীকরণের মধ্যে এবার তিনি আটকা পড়েছেন। জোটের প্রধান শরিক আওয়ামী লীগসহ কোনো দল থেকেই তিনি ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছেন না।

ইতোমধ্যে বাদশাকে রীতিমতো শক্ত চ্যালেঞ্জ জানিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা। রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী বাদশার বিপক্ষে নিয়েছেন কঠোর অবস্থান। পাশাপাশি জোটের আরেক শরিক জাসদ (ইনু) নেতা আবদুল্লাহ আল মাসুদ শিবলী মশাল প্রতীক নিয়ে ভোটযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছেন।

ফলে ভোটের মাঠে নিঃসঙ্গ হয়ে পড়েছেন বাদশা। নিজ দলের গুটিকয়েক নেতাকর্মী ছাড়া তার পাশে কেউ নেই। ফলে আওয়ামী লীগের নৌকা পেয়েও তিনি স্বস্তি পাচ্ছেন না। শক্ত প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে তার লড়াই কঠিন হয়ে পড়েছে। এ অচলাবস্থা নিরসনে বাদশা শুরু করেছেন নানামুখী তৎপরতা। সমস্যার সমাধানে রাজশাহী ১৪ দলের নেতাদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেছিলেন বাদশা। কিন্তু সেখানেও নিঃসঙ্গ বাদশার পক্ষে মেলেনি ফলপ্রসূ সাড়া।

সোমবার রাত ৮টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত নগরীর রাণীবাজারে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে রাজশাহী ১৪ দলের বৈঠক হয়। সভায় রাজশাহী ১৪ দলের সমন্বয়ক লিটন এবং বাদশাও উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক সূত্র জানায়, রুদ্ধদ্বার ওই বৈঠকে নেতাদের তোপের মুখে পড়েন ফজলে হোসেন বাদশা। এ সময় আওয়ামী লীগ এবং জাসদের নেতারা বলেন, ২০০৮ সাল থেকে পরপর তিনবার বাদশা জোটের প্রার্থী হয়ে এমপি হয়েছেন। কিন্তু তিনি কারও সঙ্গে কোনো ধরনের সম্পর্ক রাখেননি। ভোটের আগে কাছে আসেন, ভোট শেষেই দূরে সরিয়ে দেন। ১৫ বছর ধরে তারা এমনটিই দেখেছেন।

বৈঠকে নেতারা আরও বলেন, এবারও প্রধানমন্ত্রী বাদশাকে নৌকা প্রতীক দিয়েছেন। কিন্তু নৌকা পেয়ে বাদশা জোট নেতাদের একবার ফোন দেওয়ারও ন্যূনতম প্রয়োজনবোধ করেননি। জোট নেতাকর্মীদের কাউকে না ডেকে একা একাই প্রতীক বরাদ্দ নিতে রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে গেছেন। ভোটের কার্যক্রমও শুরু করেছেন।

বৈঠকে ফজলে হোসেন বাদশা ও ওয়ার্কার্স পার্টির নেতারা অতীতের সব রকম ভেদাভেদ ভুলে আবারও ঐক্যবদ্ধ হয়ে নির্বাচন শেষ করার অনুরোধ জানান। পাশাপাশি আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীকে নির্বাচন থেকে সরানোর অনুরোধ করেন। এমনকি জাসদ প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল মাসুদ শিবলীকেও নির্বাচন না করার অনুরোধ জানানো হয়। তবে তাদের সঙ্গে একমত হয়নি বৈঠকে উপস্থিত আওয়ামী লীগ এবং জাসদ নেতারা।

মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল বলেন, বৈঠকে আমাদের অনুরোধ করা হয় যেন স্বতন্ত্র প্রার্থীকে নির্বাচন থেকে সরিয়ে আনি। কিন্তু তিনি তো স্বতন্ত্র প্রার্থী, আমরা তার দায়িত্ব নিতে পারি না। সেই কারণে সভায় কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। জোটসঙ্গীদের অন্য ৫টি আসনের চিত্র দেখে পরে আবার সভা হতে পারে। এখন আপাতত সভা মুলতবি ঘোষণা করা হয়েছে।

রাজশাহী মহানগর ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক দেবাশিষ প্রামাণিক দেবু বলেন, সভার বিষয়টি ১৪ দলের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আমির হোসেন আমুকে জানানো হয়েছে। আমরা আশা করছি, দু-একদিনের মধ্যে আবার একটি সভা হবে। তখন সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে নৌকার পক্ষে মাঠে নামবেন। সূত্র- যুগান্তর

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে