ইউক্রেনে হামলা আরও ‘তীব্র’ করার ঘোষণা পুতিনের

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২, ২০২৪; সময়: ১০:৫৫ পূর্বাহ্ণ |
ইউক্রেনে হামলা আরও ‘তীব্র’ করার ঘোষণা পুতিনের

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : টানা প্রায় দুই বছর ধরে ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন চালাচ্ছে রাশিয়া। রুশ এই আগ্রাসন মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা মিত্রদেশগুলোর সহায়তায় লড়াই করছে ইউক্রেনও।

এমন অবস্থায় ইউক্রেনের সামরিক লক্ষ্যবস্তুর বিরুদ্ধে হামলা আরও ‘তীব্র’ করার ঘোষণা দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এমনকি চলমান যুদ্ধ তিনি দ্রুত শেষ করতে চান বলেও জানান রুশ এই প্রেসিডেন্ট।

মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে চলা যুদ্ধে উভয় পক্ষের পাল্টাপাল্টি বিমান ও বোমা হামলার পর ইউক্রেনের বিরুদ্ধে আক্রমণ আরও ‘তীব্র’ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

মস্কোতে একটি সামরিক হাসপাতালে পরিদর্শনের সময় পুতিন বলেন, রুশ সেনাবাহিনী ইউক্রেনের ‘সামরিক স্থাপনা’ লক্ষ্য করে হামলা করা অব্যাহত রাখবে।

সাম্প্রতিক সময়ে রাশিয়ার বেলগোরোদে ইউক্রেনের বিমান হামলাকে তিনি ‘বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃত হামলা’ বলে অভিহিত করেছেন। স্থানীয় কর্মকর্তারা বলছেন, শনিবারের সেই হামলায় ২৫ জন নিহত হয়েছেন।

এছাড়া সোমবার রাশিয়ান সেনাদের সাথে কথা বলার সময় প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেন, যুদ্ধ মস্কোর পক্ষে মোড় নিচ্ছে এবং তিনি যুদ্ধ দ্রুত শেষ করতে চান। তবে সেটি শুধুমাত্র হবে রাশিয়ার শর্তে।

তিনি আরও বলেন, চলমান সংঘাতের অবসান ঘটাতে সবচেয়ে বড় বাধা ইউক্রেনের পশ্চিমা সমর্থকরা। কিন্তু পুতিন বলেছেন, তাদের বক্তব্য পরিবর্তন হতে শুরু করেছে কারণ তারা বুঝতে শুরু করেছে যে, তারা রাশিয়াকে ‘ধ্বংস’ করতে পারবে না।

তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রুশ প্রেসিডেন্টের এসব দাবির পাল্টা জবাব দিয়েছেন। দ্য ইকোনমিস্টকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইউক্রেনীয় এই প্রেসিডেন্ট বলেছেন, রাশিয়া যুদ্ধে জিততে চলেছে বলে পুতিন যে ইঙ্গিত দিয়েছেন তা কেবল একটি ‘অনুভূতি’।

তিনি ইউক্রেনে রাশিয়ার হতাহতের পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেন, রুশ বাহিনী ২০২৩ সালে একটি বড় শহরও দখল করতে পারেনি।

তবে জেলেনস্কি কিয়েভের পশ্চিমা মিত্রদের প্রতি হতাশা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, তারা (ইউক্রেনের মিত্ররা) অত্যন্ত দরকারী পরিস্থিতিতে কি করা প্রয়োজন সেই বোধ হারিয়েছে।

উভয় দেশের এই দুই নেতা এর আগে নববর্ষের বার্তা দেন। গত রোববার প্রেসিডেন্ট পুতিন ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধের কথা স্পষ্টভাবে উল্লেখ না করেই রাশিয়ান সৈন্যদের ‘বীর’ বলে অভিহিত করেন।

অন্যদিকে নতুন বছরের শুরুতে দেওয়া নিজের ভাষণে জেলেনস্কি তার দেশে উৎপাদিত অস্ত্রের সংখ্যা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এছাড়া তিনি কমপক্ষে ১০ লাখ ড্রোন তৈরির প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন।

রাশিয়া ও ইউক্রেন গত কয়েকদিন ধরে প্রাণঘাতী হামলা ও পাল্টা হামলাও চালিয়েছে। ইউক্রেন নববর্ষের প্রাক্কালে রাশিয়া-নিয়ন্ত্রিত ইউক্রেনীয় শহর দোনেৎস্কে গোলাবর্ষণ করেছে। মস্কো-নিযুক্ত কর্মকর্তাদের মতে, এতে কমপক্ষে চারজন নিহত এবং ১৩ জন আহত হয়েছেন।

এছাড়া গত শনিবার ইউক্রেনীয় বাহিনী দক্ষিণ-পশ্চিম রাশিয়ার লক্ষ্যবস্তুতে একের পর এক হামলা চালায়, যার মধ্যে বেলগোরোদের হামলাও ছিল। এসব হামলাকে পুতিন ‘সন্ত্রাসী হামলা’ বলে অভিহিত করেছেন।

বেলগোরোদের গভর্নর ভ্যাচেস্লাভ গ্ল্যাডকভ সোমবার বলেছেন, হামলায় গুরুতর আহত এক শিশুর মৃত্যুর পর মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৫ জনে পৌঁছেছে।

এর আগে গত সপ্তাহে রাশিয়া ইউক্রেনজুড়ে বেশ কয়েকটি শহরে ব্যাপক হামলা চালায়। এতে কমপক্ষে ৪৫ জন নিহত হয়। এই হামলাগুলোকে কিয়েভ যুদ্ধ শুরুর পর থেকে রাশিয়ার সবচেয়ে বড় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বলে অভিহিত করেছে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে