মাত্র ১৫ শতাংশ ইসরায়েলির সমর্থন রয়েছে নেতানিয়াহুর সঙ্গে

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩, ২০২৪; সময়: ১১:০০ পূর্বাহ্ণ |
মাত্র ১৫ শতাংশ ইসরায়েলির সমর্থন রয়েছে নেতানিয়াহুর সঙ্গে

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : ইসরায়েলের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘসময় সরকারপ্রধানের পদে থাকা বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর জনপ্রিয়তায় ধস নেমেছে।

সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান যুদ্ধ শেষ হয়ে যাওয়ার পরও বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চান মাত্র ১৫ শতাংশ ইসরায়েলি।

বরং জনপ্রিয়তার নিরিখে তার চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন নেতানিয়াহুর অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনীতিবিদ বেনি গান্টজ। অবসরপ্রাপ্ত এই সেনা কর্মকর্তা ২০২০ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ছিলেন। বর্তমানে নেতানিয়াহুর যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভাতেও রয়েছেন তিনি, তবে তাকে কোনো মন্ত্রণালয় দেওয়া হয়নি।

অবশ্য নেতানিয়াহুর জনপ্রিয়তা কমলেও গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসকে নির্মূলে উপত্যকায় লাগাতার সেনা অভিযান পরিচালনার যে নীতি নিয়েছে তার নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভা, সেই নীতির প্রতি সমর্থন রয়েছে অধিকাংশ নাগরিকের।

ইসরায়েলের থিঙ্কট্যাংক সংস্থা ইসরায়েল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট (আইডিআই) ডিসেম্বরের ২৫ থেকে ২৮ তারিখ পর্যন্ত পরিচালনা করেছে জরিপটি।

জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ১৫ শতাংশ জানিয়েছেন, তারা হামাসের সঙ্গে যুদ্ধ শেষ হয়ে যাওয়ার পরও দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নেতানিয়াহুকে দেখতে চান।

২৩ শতাংশ অংশগ্রহণকারীর মতে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য বেনি গান্টজ সবচেয়ে উপযুক্ত রাজনীতিবিদ বেনি গান্টজ এবং যুদ্ধের পর তারই এই পদে আসীন হওয়া উচিত; আর ৩০ শতাংশ এ সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করতে চাননি।

তবে জনপ্রিয়তা কমলেও হামাসকে পুরোপুরি ধ্বংস করা এবং এখনও এই গোষ্ঠীটির কব্জায় থাকা জিম্মিদের উদ্ধারে গাজায় টানা সেনা অভিযানের পরিচালনার যে নীতি নিয়েছে নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন বিশেষ যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা, সেই নীতির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন ৫৬ শতাংশ ইসরায়েলি।

অপরদিকে জরিপে অংশ নেওয়া ২৮ শতাংশ ইসরায়েলি হামাসের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সংলাপ এবং যুদ্ধবিরতি ঘোষণার মাধ্যমে জিম্মিদের উদ্ধারের পক্ষে মত দিয়েছেন।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় ইরেজ সীমান্তে হামাস যোদ্ধারা অতর্কিত হামলা চালানোর পর ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমানবাহিনী। ২৮ অক্টোবর থেকে অভিযানে যোগ দেয় স্থলবাহিনীও।

ইসরায়েলি বাহিনীর টানা দেড় মাসের অভিযানে কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা উপত্যকা, নিহত হয়েছেন ২২ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। এই নিহতদের ৭০ শতাংশই নারী, শিশু, অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোর-কিশোরী এবং বয়স্ক লোকজন।

আহত হয়েছেন আরও ৫৪ হাজার ৯৬৮ জন এবং এখনও নিখোঁজ রয়েছেন ৭ হাজার জন।। এছাড়া হাজার হাজার পরিবার বাড়িঘর-সহায় সম্বল হারিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন বিভিন্ন স্কুল, সরকারি প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতাল প্রাঙ্গণে।

অন্যদিকে, হামাসের গত ৭ অক্টোবরের হামলায় ইসরায়েলে নিহত হয়েছিলেন ১ হাজার ২০০ জন ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিক।

পাশাপাশি, ইসরায়েলের ভূখণ্ড থেকে ২৪২ জন ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিককে সেদিন জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যান হামাস যোদ্ধারা। তাদের মধ্যে এখনও মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছেন ১২৯ জন জিম্মি।

আইডিআই’র জরিপ বলছে, হামাসের সেই হামলার পর থেকে ইসরায়েলে জনপ্রিয়তা কমেছে নেতানিয়াহুর।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে