সফলতার এক যুগে বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়

প্রকাশিত: মার্চ ১৬, ২০২৪; সময়: ৭:২৯ অপরাহ্ণ |
সফলতার এক যুগে বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়

নিজস্ব প্রতিবেদক : এক ঐতিহাসিক ভৌগোলিক এবং পদ্মা প্রবাহিত অঞ্চলের স্বাধীন মানুষদের মাঝে মুক্ত জ্ঞানচর্চার পাশাপাশি সমাজের বিকাশের লক্ষ্যে ২০১২ সালের ১৪ মার্চ রাজশাহীর কাজলা নামক স্থানে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে উত্তরাঞ্চলের অন্যতম বিদ্যাপিঠ বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়।

বর্তমানে রাজশাহীর পবা উপজেলার চন্দ্রিমা থানায় রাজশাহী বাইপাস রোডে (খড়খড়িতে) প্রায় ১৫ একর জমিতে বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস গড়ে উঠেছে। যার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়টি পেয়েছে নতুন এক রূপ এবং যুক্ত হয়েছে ভিন্ন এক মাত্রা। ২০১৭ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়টির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে বছরে দুই সেমিস্টারে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে ভর্তির সুযোগ রয়েছে। স্প্রিং(জানুয়ারি -জুন) ও সামার (জুলাই-ডিসেম্বর) সেশনে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হয়ে থাকে। বিস্তারিত তথ্যের জন্য ওয়েব সাইডে ভিজিট বা ০১৭৩০৪০৬৫০১, ০১৭৩০৪০৬৫০২, ০১৭৩০৪০৬৫০৩ নম্বরে যোগাযোগ করা যেতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে রয়েছে ৪ টি স্কুলের অধীনে মোট ১২টি বিভাগ। এগুলো হচ্ছে- কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং, ফার্মেসি, পাবলিক হেলথ, ব্যবসায় প্রশাসন, অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান, ইংরেজি, আইন ও মানবাধিকার, জার্নালিজম, কমিউনিকেশন অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ, ইসলামের ইতিহাস। এছাড়াও মাস্টার্স প্রোগ্রামে এলএলএম, এমপিএইচ, এমবিএ ও ইএমবিএ, ইংরেজি, সমাজবিজ্ঞান ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ভর্তির সুযোগ রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়টি শিক্ষার্থীদের যুগোপযোগী শিক্ষা প্রদান এবং বহির্বিশ্বের সাথে সামঞ্জস্য রেখে এগিয়ে যেতে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং, ল অ্যান্ড ল্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং, ট্যুরিজম, ইন্সুরেন্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগ থেকে শুরু করে ফুড নিউট্রিশনসহ বিভিন্ন বিভাগ চালুর কার্যপ্রণালী বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়টি শিক্ষার্থীদের একাডেমিক বিষয়ের দিকে নজর দেওয়ার পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীরা যেন মুক্ত চিন্তার অধিকারী ও স্বাধীন মানুষ হিসেবে গড়ে উঠে মতামত ব্যক্ত করার সক্ষমতা অর্জন করতে পারে, সেই লক্ষ্যে তৈরি করেছে একটি সমৃদ্ধ লাইব্রেরি। পাশাপাশি তাদের প্রযুক্তি নির্ভর এবং বিজ্ঞান বিষয়ক চিন্তার পরিধি বৃদ্ধির জন্য রয়েছে সর্বাধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর ক্লাসরুম, প্রায়োগিক দক্ষতা অর্জনে রয়েছে আন্তর্জাতিক মানের ল্যাবরেটরি, সংস্কৃতি বিকাশে রয়েছে অডিটোরিয়াম, খেলার মাঠ, জিমনেসিয়ামসহ প্রায় সকল ধরনের আধুনিক সুবিধা। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতি বছর ৪ কোটি টাকার বেশি শিক্ষাবৃত্তি দিয়ে যাচ্ছে।

অগ্রযাত্রার এই এক যুগে বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্জনের ঝুলিও অনেক সমৃদ্ধির। বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে বিভিন্ন বিভাগে সাড়ে ৬ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত। মানসম্মত ও গুণগত শিক্ষার স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৬ সালে স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত রোবট কম্পিটিশনে প্রথম স্থান অধিকার করে বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় রোবটিক সোসাইটি। ২০১৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও টিআইবির যৌথ আয়োজনে মুটকোর্ট প্রতিযোগিতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়। ২০২২ সালে রুয়েট কর্তৃক আয়োজিত ইন্টারন্যাশনাল সিম্পোজিয়াম অন আইসিটি প্রতিযোগিতায় প্রজেক্ট কম্পিটিশনে প্রথম স্থান অধিকার করে বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ইইই বিভাগের একটি টিম। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই টিম বুয়েট হ্যাকাথনে অর্জন করে দ্বিতীয় স্থান। দেশের সীমানা পেরিয়ে বিশ্বমঞ্চেও পিছিয়ে নেই বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়। মাথায় তুলেছে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের মুকুট। শিক্ষার্থীদের অসাধারণ কৃতিত্বে ২০২৩ সালে বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের টিম ভয়েজার্স, নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ ২০২৩-এ গ্লোবাল চ্যাম্পিয়নের গৌরব অর্জন করে।

ছাত্রছাত্রীদের অসাধারণ মেধাসাফল্য আর গৌরবের ইতিহাস নিয়ে ১৩ বছরে প্রবেশ করলো বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়। বিগত বছরের ন্যায় এবছরও দিবসটি উদযাপন করেছে বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়। এই উপলক্ষে গত মঙ্গলবার ১১ মার্চ (সোমবার) বিকাল ৪ টায় বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড রুমে কেক কেটে প্রতিষ্ঠার ১ যুগ উদযাপন করা হয়।

১ যুগ উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্টের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান খান। উপস্থিত ছিলেন বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) আনন্দ কুমার সাহা, কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মো. ফয়জার রহমান, নির্বাহী পরিচালক শামীম আহসান পারভেজ, রেজিস্ট্রার সুরঞ্জিত মন্ডল, কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের কো-অর্ডিনেটর প্রফেসর ড. খাদেমুল ইসলাম মোল্যা, ইইই বিভাগের প্রধান প্রফেসর ড. কাজী খায়রুল ইসলাম, আইন বিভাগের কো-অর্ডিনেটর প্রফেসর আবু নাসের মো. ওয়াহিদ, সাংবাদিকতা বিভাগের কো-অর্ডিনেটর মো. শাতিল সিরাজ, ফার্মেসী বিভাগের প্রধান মোনালিসা মনোয়ার, ব্যবসা প্রশাসন বিভাগের কো-অর্ডিনেটর ড. রেজাউল করিম ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক পারমিতা জামানসহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে