রোজা রেখে এন্ডোস্কোপি করা যাবে?
পদ্মাটাইমস ডেস্ক : রমজান মাসের রোজা, সুস্থ-সবল ও প্রাপ্তবয়স্ক সকল মুসলিম নর-নারীর ওপর ফরজ করা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেছেন, হে মুমিনগণ, তোমাদের উপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেভাবে ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর। যাতে তোমরা তাকওয়া অবলম্বন কর। (সূরা বাকারা, আয়াত, ১৮৩)
শরিয়তসম্মত কোনো কারণ ছাড়া রোজা ভাঙার বিধান নেই। যদি কেউ উদাসীনতার কারণে রোজা ভাঙে তবে গুরুতর গুনাহের অংশীদার হবে।
আবু উমামা রা. বলেন, আমি নবীজি সা.-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, ‘একবার আমি ঘুমিয়ে ছিলাম। এমন সময় দুজন ব্যক্তি এসে আমার দুবাহু ধরে দুর্গম পাহাড়ের কাছে নিয়ে গেলেন।
তারপর তারা বললেন, পাহাড়ে উঠুন। আমি বললাম, আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তারা বললেন, আমরা আপনার জন্য সহজ করে দিচ্ছি। তখন আমি ওঠা শুরু করি এবং পাহাড়ের চূড়ায় পৌঁছি। সেখানে প্রচণ্ড চিৎকারের শুনতে পাই।
আমি জিজ্ঞেস করলাম, এটা কিসের আওয়াজ? তারা বললেন, জাহান্নামিদের আওয়াজ। এরপর তারা আমাকে এমন কিছু লোকদের কাছে নিয়ে গেলেন, যাদেরকে পায়ের টাখনুতে বেঁধে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।
তাদের গাল ক্ষতবিক্ষত, তা থেকে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এরা কারা? তারা বললেন, এরা এমন রোজাদার, যারা (অকারণে রমজান মাসের) রোজা শেষ না করেই ভাঙতো।’ (সহিহ ইবনে খুযাইমা : ১৫০৯)
রোজা রেখে এন্ডোস্কোপি করা যাবে?
রোজা রেখে এমন কাজ ও চিকিৎসা থেকে বিরত থাকা জরুরি যেসব কারণে রোজা ভেঙে যায়। কিছু কিছু চিকিৎসা আছে যেসবের কারণে ভাঙে না।
এমন একটি চিকিৎসা হলো এন্ডোসকপি। এন্ডোসকপির ক্ষেত্রে সাধারণ বিধান হলো রোজা ভাঙে না, তবে আনষাঙ্গিক কারণে অনেক সময় রোজা ভেঙে যেতে পারে।
এ বিষয়ে ইসলামি আইন ও ফেকাহশাস্ত্রবিদদের মতামত হলো-
একটি চিকন পাইপ মুখ দিয়ে পেটের ভেতর ঢুকিয়ে ভেতরের অবস্থা নির্ণয় করার মাধ্যমে এন্ডোস্কোপি করা হয়। এন্ডোসকপির পাইপের মাথায় বাল্ব জাতীয় একটি বস্তু ও ছোট্ট একটি ক্যামেরা থাকে।
এর মাধ্যমে বাইরে থেকে মনিটরের মাধ্যমে রোগীর পেটের অবস্থা নির্ণয় করা যায়। সাধারণত এন্ডোস্কোপিতে নল বা বাল্বের সঙ্গে কোনো মেডিসিন লাগানো থাকে না। তাই এন্ডোস্কোপি করালে রোজা ভাঙবে না।
তবে যদি নল বা বাল্বে মেডিসিন লাগানো হয়, তাহলে রোজা ভেঙে যাবে। তেমনিভাবে টেস্টের প্রয়োজনে কখনো পাইপের সাহায্যে ভেতরে যদি পানি ছিটানো হয়, তখনো রোজা ভেঙে যাবে। (সূত্র : জাদিদ ফিকহি মাসায়িল, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা ১৮৬)