অধিভুক্তি নিয়ে কি ভাবছে রাবি ও কলেজ শিক্ষার্থীরা?

প্রকাশিত: এপ্রিল ৭, ২০২৪; সময়: ১২:৩৯ অপরাহ্ণ |
অধিভুক্তি নিয়ে কি ভাবছে রাবি ও কলেজ শিক্ষার্থীরা?

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাবি : রাজশাহী জেলা চার সরকারি কলেজকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) অধিভুক্ত করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপন জারির পর এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নানা আলোচনা-সমালোচনা দেখা গেছে। কেউ কেউ এটাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখলেও, নেতিবাচক প্রভাবের কথা বলছেন অনেকে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী মনিমুল হক বলেন, কলেজগুলোর অধিভুক্ত অবশ্যই সুসংবাদ। কারণ আগে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পেলেও এখন স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সার্টিফিকেট পাবে। এতে চাকরির বাজারে তাদের গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে।

তবে পঠনপাঠন ও মূল্যায়ণ উভয়ের যেহেতু আলাদা, তাই দক্ষ শিক্ষকদের নিয়ন্ত্রণে রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেটা পরিচালনা করা দরকার।

তাছাড়া সেশনজট সহ নানা জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। এতে ভোগান্তি আরো বাড়বে। যেমনটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত কলেজে দেখা যায়।

অধিভুক্তিকে ‘পরাধীনতা’ অ্যখ্যা দিয়ে রাজশাহী কলেজের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী মাহাফুজ আহমেদ সিজান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি অন্যের হস্তক্ষেপ ও এক ধরণের পরাধীনতা। রাজশাহী কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম অত্যন্ত সুশৃঙ্খল।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে গেলে খাপ খাওয়ানো থেকে শুরু করে একাডেমিক কার্যক্রমে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতেই পারে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের যথাযথ সহযোগিতা ও একাডেমিক কার্যক্রম একই হলে অধিভুক্ত কলেজগুলোর জন্য সেটা অবশ্যই ভাল হবে।

রাবির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মোসা. ইতি সিদ্ধান্তটিকে ক্যাম্পাসের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে বলেন, আগে কলেজের শিক্ষার্থীরা কিছু সময়ের জন্য ক্যাম্পাসে আসতো ঘুরতে। তখন তারা সামান্য হলেও কিন্তু ভয়ে থাকতো কিন্তু এখন তারা অহরহ আসবে কোনো দ্বিধা ছাড়াই।

এতে ক্যাম্পাসে ভিড় বাড়ার সাথে বাড়বে ইভটিজিং, চুরি, ছিনতাই, নিরাপত্তার ঝুঁকি তো থেকেই যায়।যেকোনো অনুষ্ঠান ও দিবসে পূর্বের তুলনায় ব্যাপক ভোগান্তি পোহাতে হবে।

সেশনজটের সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, তাছাড়া করোনার পর দেখা যাচ্ছে যে বেশ কিছু ডিপার্টমেন্ট এমনিতেই বড়সড় সেশনজটে আছে। কিন্তু এখন কোনো মহামারী ছাড়ায় সেগুলো জোটে থাকবে।

কারণ চার কলেজের পরীক্ষা, রেজাল্ট সংক্রান্ত কাজ করতে আলাদা কোনো ভবন বা প্রশাসন তৈরি হবেনা যার ফলে এসব সামলাতে হিমসিম খাবে রাবি প্রশাসন।

রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থী ইশরাত জলিল সেশনজটের সম্ভাবনা তুলে ধরে বলেন, খুব সমস্যা হবে আমাদের। আমরা দেশের সেরা একটি কলেজে পড়ি। এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এর আগে প্রতিষ্ঠিত আমাদের কলেজ।

সবকিছু বিবেচনা করে দেখা যাবে রাজশাহী কলেজেকে রাবির অধীনে করাটা একদম ঠিক হয়নি। আমাদের কোনো সেশনজট ছিলো না। হয়তো এখন ঢাবির সাত কলেজের মতো আমরাও সেশন জটের মুখোমুখি হবো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার মোর্শেদ অধিভুক্ত করার সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন না।

তিনি বলেন, কোনো কলেজকে একটি পূর্ণাঙ্গ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করার মানে হচ্ছে- অধিভুক্ত কলেজকে হাফ বিশ্ববিদ্যালয়ে অলিখিত ভাবে রূপান্তর করণ পাশাপাশি অধিভুক্ত কারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও প্রতিষ্টানটির শিক্ষার্থীদের অবস্থান ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করণ ছাড়া আর কিছু দেখি না। এহেন সিদ্ধান্তকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে ইতিবাচক হিসেবে দেখছি না।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কোয়ালিটি এসিউরেন্স সেলের পরিচালক ড. দুলাল চন্দ্র রায় বলেন, চার কলেজে অধিভুক্ত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের খুব একটা সমস্যা হবে মনে করি না।

কারণ ওখানে গিয়ে তো আমাদের আর ক্লাস নিতে হবে না। তাদের পরীক্ষার তদারকি আর ভর্তি কার্যক্রমের সময় অফিসিয়াল কিছু কাজ থাকবে। আমাদের তেমন কোনো সমস্যা হওয়ার কথা না।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে