যে কারণে ইউক্রেনের রেল ব্যবস্থায় হামলা বাড়িয়েছে রাশিয়া

প্রকাশিত: এপ্রিল ২৭, ২০২৪; সময়: ১১:২০ পূর্বাহ্ণ |
যে কারণে ইউক্রেনের রেল ব্যবস্থায় হামলা বাড়িয়েছে রাশিয়া

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেনে সামরিক সহায়তা পাঠানো সংক্রান্ত বিলে স্বাক্ষরের পর থেকে ইউক্রেনের রেলস্টেশনগুলোতে হামলার মাত্রা বৃদ্ধি করেছে অভিযানরত রুশ বাহিনী।

ইউক্রেনের সরকারি রেল পরিষেবা কোম্পানি ইউক্রাজানিৎসিয়ার যাত্রী পরিবহন বিভাগের প্রধান ওলেকসান্দার পেরেৎসভোস্কি শুক্রবার এএফপিকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেছেন, বৃহস্পতিবার থেকে রেলস্টেশনগুলোতে হামলা শুরু করেছে রুশ বাহিনী।

‘আগ্রাসনকারী বাহিনী নির্বিচারে হামলা চালাচ্ছে। ইতোমধ্যে তাদের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র-গোলায় রেল পরিষেবা বিভাগের অন্তত ৩ জন কর্মী নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন আরও চার জন কর্মী। ১০ জন যাত্রীও আহত হয়েছেন,’ এএফপিকে বলেছেন ওলেকসান্দার পেরেৎসভোস্কি।

তবে পুরো ইউক্রেনজুড়ে রেল স্টেশনগুলোতে হামলা করছে না রুশ বাহিনী। এখন পর্যন্ত পোল্যান্ড সীমান্ত অঞ্চল এবং দোনেৎস্ক প্রদেশের স্টেশন ও রেল নেটওয়ার্কে ক্ষেপণাস্ত্র-ড্রোন নিক্ষেপ করা হচ্ছে।

গত বুধবার ইউক্রেন, ইসরায়েল এবং তাইওয়ানে ৯ হাজার ৫০০ কোটি ডলার সামরিক সহায়তার একটি বিলে স্বাক্ষর করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

এই প্যাকেজে সবচেয়ে বড় অংক বরাদ্দ রয়েছে ইউক্রেনের জন্য। দেশটিকে ৬১ বিলিয়ন ডলার সামরিক সহায়তা দেয়া হচ্ছে। তারপর ২৬ বিলিয়ন ডলার ইসরাইলের জন্য এবং ৮.১২ বিলিয়ন ডলার তাইওয়ানের জন্য বরাদ্দ রয়েছে।

বাইডেন বিলে স্বাক্ষর করার পরদিন থেকে রেল স্টেশনে হামলা শুরু করেছে রুশ বাহিনী। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা এএফপিকে জানিয়েছেন, মার্কিন অস্ত্রের চালান ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর কাছে পৌঁছানো বাধাগ্রস্ত করতেই এই কৌশল নেওয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত, রেল নেটওয়ার্ক শক্তিশালী হওয়ায় সেনাবাহিনীর কাছে অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম পৌঁছে দিতে রেলের ওপর নির্ভর করে ইউক্রেনের সরকার।

প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত মিনস্ক চুক্তির শর্ত অনুযায়ী কৃষ্ণ সাগরের ক্রিমিয়া উপদ্বীপকে রুশ ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও কার্যক্ষেত্রে তা পালন না করা এবং তার পরিবর্তে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য ইউক্রেন তদবিরকে ঘিরে দেশটির সঙ্গে দীর্ঘ কয়েক বছর টানাপোড়েন চলেছে রাশিয়ার। তারপর ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে অভিযান শুরু করে রুশ বাহিনী, সেই অভিযান এখনও চলছে।

গত দুই বছরের যুদ্ধে ইতোমধ্যে ইউক্রেনের দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, ঝাপোরিজ্জিয়া এবং খেরসন প্রদেশের দখল নিয়েছে রাশিয়া। এই চার প্রদেশের সম্মিলিত আয়তন ইউক্রেনের মোট ভূখণ্ডের এক পঞ্চমাংশ।

অন্যদিকে শুরুর দিকে রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুললেও গত বছর থেকে অস্ত্র, গোলাবারুদ, সামরিক সরঞ্জাম এবং লোকবলের গুরুতর অভাবে ভুগছে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী। যুদ্ধ চালিয়ে নেওয়ার জন্য বর্তমানে দেশটি কার্যত যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোর সম্পূর্ণ নির্ভর করছে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে