বাগমারায় মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক, বাগমারা : রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। মিথ্যা অপবাদ দিয়ে তাকে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বাবা।
শনিবার (৪ মে) বাগমারা থানায় অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীর বাবা রহিদুল ইসলাম। তার ছেলে মোহনগঞ্জ আলিয়াবাদ ক্বওমি মাদ্রাসার আবাসিক শিক্ষার্থী। তার বয়স ১১ বছর।
অভিযোগে রহিদুল ইসলাম বলেন, আমার ছেলে আবাসিক শাখায় থেকে মাদ্রাসায় পড়াশোনা করে। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) রাতে মিথ্যা অভিযোগে প্রতিষ্ঠানের হুজুর আবু হুরাইরা (৩৫) ছেলেকে লাঠি দ্বারা এলোপাতারি মারধর করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে কালচে জখম করে।
পরবর্তীতে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ আমাকে ফোন করে বলে আপনার ছেলে একটি অপরাধ করেছে। আপনি মাদ্রাসায় এসে বিষয়টি জেনে-শুনে মীমাংসা করে দিয়ে যাবেন।
আমি বুধবার (১ মে) সকালে মাদ্রাসায় গিয়ে আমার ছেলের বিরুদ্ধে টাকা চুরির মিথ্যা অভিযোগ শুনতে পাই। আমার ছেলেকে মাদ্রাসা থেকে বাড়িতে নিয়ে আসতে চাইলে কর্তৃপক্ষ নিয়ে আসতে দেয়নি।
ঘটনা সন্দেহজনক হওয়ায় পরের দিন আমি পুনরায় মাদ্রাসায় গিয়ে আমার ছেলেকে আমার বাড়িতে নিয়ে আসি। শনিবার (৪ মে) তার মায়ের কাছে ছেলেকে মারধরের প্রমাণ পাই।
তিনি অভিযোগে আরও বলেন, মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে আবু হুরাইয়া আমার শিশু সন্তানকে অমানবিকভাবে নির্যাতন করেছে। এই ঘটনা না জানানোর জন্য তাকে কসমসহ বিভিন্ন ধরনের শপথ বাক্য পাঠ করিয়ে নিয়েছে। এবং তার চিকিৎসাও পর্যন্ত করায়নি।
তিনি বলেন, আমার ছেলে কোনো অপরাধ করলে আমাকে জানাতে পারতো। কিন্তু হুজুর আবু হুরাইয়া তার উপর অমানবিক নির্যাতন করেছেন। তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তিও করা হয়েছে।
মোহনগঞ্জ আলিয়াবাদ ক্বওমি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ইউনুস আলী বলেন, এই ঘটনা আমাদের মাদ্রাসার জন্য খুবই লজ্জাজনক। আমরা ওই শিক্ষার্থীর অভিভাবকের কাছে ক্ষমা চেয়েছি। সেই সাথে যে শিক্ষক এই কাজ করেছেন আমরা তাকে বহিস্কার করেছি।
বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অরবিন্দ সরকার বলেন, শনিবার রাতে ওই শিক্ষার্থীর বাবা থানায় এসে অভিযোগ করেন। আমরা মাদ্রাসায় পুলিশ পাঠিয়েছিলাম।
কিন্তু ওই শিক্ষক মাদ্রাসায় ছিলেন না। তাই তাকে আটক করা হয়নি। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। অভিযুক্ত ওই শিক্ষককে আটক করা হবে।