বাগমারায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিন সভাপতির লড়াই

প্রকাশিত: মে ৫, ২০২৪; সময়: ৬:৪৯ অপরাহ্ণ |
বাগমারায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিন সভাপতির লড়াই

শামীম রেজা, বাগমারা : রাজশাহীর বাগমারায় শুরু হয়েছে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা। নিজের পক্ষে ভোট চেয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরছেন প্রার্থীরা। ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আগামী ২১ মে অনুষ্ঠিত হবে ভোট গ্রহণ। গত ২ মে প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়। প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই প্রচারণায় জোর দিয়েছে প্রার্থীরা। এবার বাগমারা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে অংশ নিয়েছেন বিভিন্ন সংগঠনের তিন সভাপতি। নির্বাচনে অংশ নেয়া প্রার্থীরা হলো উপজেলা মহিলা লীগের সভাপতি কোহিনুর বানু, উপজেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি শাহিনূর খাতুন এবং ভবানীগঞ্জ পৌর মহিলা লীগের সভাপতি মমতাজ আক্তার বেবী।

তবে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রথম বারের মতো নির্বাচন করছেন কোহিনুর বানু। তিনি কলস প্রতীক নিয়ে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করছেন। মহিলা লীগ দিয়ে রাজনীতিতে যাত্রা শুরু করেন কোহিনুর বানু। রাজনৈতিক টানা পোড়নের কারণে এবার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন কোহিনুর বানু। পেয়েছেন স্থানীয় এমপির পক্ষ থেকে সমর্থন। কোহিনুর বানু উপজেলার হাট-গাঙ্গোপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত রয়েছেন। তিনি বলেন, আমি স্থানীয় ভাবে আওয়ামী লীগের সমর্থন নিয়ে নির্বাচনে অংশ গ্রহন করেছি। প্রতীক পাওয়ার পর থেকে প্রচার-প্রচারণা চালিযে যাচ্ছি। ভোটারদের নিকট থেকে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি।

অপরদিকে দ্বিতীয় বারের মতো মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন উপজেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি শাহিনূর খাতুন। তিনি মচমইল ডিগ্রী কলেজের সহকারি অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। শাহিনূর খাতুন রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের তাপসী রাবেয়া হল শাখার সক্রিয় নেত্রী ছিলেন। ছাত্ররাজনীতির মধ্যে দিয়ে রাজনীতিতে আসেন তিনি। সহকারি অধ্যাপক শাহিনুর খাতুন উপজেলা যুব মহিলা লীগের দুই মেয়াদে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

পিতার হাত ধরেই ছাত্র রাজনীতির হাতে খড়ি শাহিনুর খাতুনের। তার পিতা মচমইল ডিগ্রী কলেজের অধ্যাপক মরহুম জামাল উদ্দিন শেখ। তিনি তৎকালীন বাগমারা উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেছেন। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এবার ফুটবল প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেছিলেন উপজেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি ও সহকারি অধ্যাপক শাহিনুর খাতুন।

গত নির্বাচনে সামান্য ভোটে পরাজিত হলেও এবার বিপুল ভোটে বিজয়ের আশা নিয়ে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ডে গিয়ে সর্বদায় নারী-পুরুষ সকলের সাথে গণসংযোগ করেছেন তিনি। এরই মধ্যে ক্লিন ইমেজের প্রার্থী হিসেবে সবার মাঝে পরিচিতি পেয়েছেন শাহিনুর খাতুন।

উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সহকারি অধ্যাপক শাহিনুর খাতুন বলেন, আমি রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেছি। ছাত্র জীবন থেকে রাজনীতির সাথে জড়িত। চাকরীর পাশাপাশি রাজনীতির মাধ্যমে উপজেলাবাসীর পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছি। গত নির্বাচনে সামান্য ভোটে পরাজিত হয়েছি। ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আমি আবারও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী। জনগণ আমার সঙ্গে আছে। আমি আশাবাদী উপজেলাবাসী আমার ফুটবল প্রতীকে বিপুল ভোট দিয়ে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হিসাবে নির্বাচিত করবেন।

এছাড়াও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে অংশ নিয়েছেন ভবানীগঞ্জ পৌর মহিলা লীগের সভাপতি এবং বর্তমানে উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মমতাজ আক্তার বেবী। তিনি গত নির্বাচনে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হন। সেই থেকে উপজেলাবাসীর জন্য বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কার্যক্রম সংগঠিত করেছেন। সেই সাথে নানান প্রকার প্রকল্পের কাজও বাস্তবায়ন করেছেন। বিগত ৫ বছর উপজেলা জুড়ে বিভিন্ন প্রকার উন্নয়নমূলক কাজ করাই জনপ্রিয়তায় নিজেকে এগিয়ে রাখছেন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মমতাজ আক্তার বেবী। এবার তিনি প্রজাপতি প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। অন্য প্রার্থীরা সরাসরি নির্বাচনী প্রচারণা চালালেও মমতাজ আক্তার বেবীর ক্ষেত্রে ঘটেছে একটু ভিন্নতা। শুধু ভোট নয় তিনি বিগত ৫ বছর থেকেই ভোটারদের সাথে রয়েছেন। এবার আবারও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে অংশ গ্রহণ করেছেন তিনি। সে কারনে প্রতীক পাওয়ার পর থেকেই ব্যাপক ভাবে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

মমতাজ আক্তার বেবী বলেন, আমি সততা আর নিষ্ঠার সাথে ভোটারদের দেয়া দায়িত্ব যথাযথ ভাবে পালন করার চেষ্টা করেছি। ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আমি আবারও প্রার্থী হয়েছি। আমি আশাবাদী দলমত নির্বিশেষে ভোটাররা আমার প্রজাপতি প্রতীকে বিপুল ভোট দিয়ে বিজয়ী করবে। ভোটাররা আমাকে নির্বাচিত করে উপজেলার অবশিষ্ট কাজ বাস্তবায়ন করার সুযোগ দিবে বলে আশা করছি।

তিন প্রার্থীই যোগ্য হওয়ায় কঠিন সমীকরণের মধ্যে পড়েছে তারা। তবে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের সহিংসতার একটি প্রভাব পড়তে পারে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে। এর আগে গত নির্বাচন একই প্রভাব লক্ষ্য করা গেছে। সে কারনে শতকরা ১০ ভাগ ভোট পড়েছিল বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে। জাতীয় নির্বাচনের প্রভাব যেন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে না লাগে সে কারনে প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে অংশ নেয়া তিন প্রার্থী। নির্বাচনের আগে বলা সম্ভব হচ্ছে না সবশেষ কে হবে বিজয়ী। ভোটাদের ভালো উপস্থিতি হলে জয় পরাজয়ের ব্যবধান বেশি হতে পারে।

 

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে