যে কারণে একদিনে গোদাগাড়ীর ১০ পুলিশ ক্লোজড

প্রকাশিত: মে ৬, ২০২৪; সময়: ১০:০৪ অপরাহ্ণ |
যে কারণে একদিনে গোদাগাড়ীর ১০ পুলিশ ক্লোজড

নিজস্ব প্রতিবেদক : আটক বানিজ্যে বেপরোয়া হয়ে উঠা রাজশাহীর গোদাগাড়ী মডেল থানা থেকে একদিনে ১০ পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। যাদের মধ্যে সাতজন কর্মকর্তা ও তিনজন কনস্টেবল। পৃথক দুইটি ঘটনায় তাদের প্রত্যাহার করে রাজশাহী পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।

এরা হলেন, গোদাগাড়ী মডেল থানার এসআই সত্যব্রত সরকার, আকরামুজ্জামান, এএসআই আবদুল করিম, মঞ্জুরুল ইসলাম, রঞ্জু আহমেদ ও কনস্টেবল মাহবুবুর রহমান এবং প্রেমতলী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই রেজাউল করিম, এএসআই আনোয়ারুল ইসলাম, কনস্টেবল রেজাউল করিম ও মিলন হোসেন।

থানা সূত্রে জানা গেছে, গ্রেপ্তারী পরোয়ানার আসামি ধরতে গিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগে গোদাগাড়ী থানার ছয় পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। রোববার সন্ধ্যায় পুলিশ সুপার সাইফুর রহমানের এক আদেশে তাদের প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।

ওই পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁরা এক মামলার আসামিকে ধরে তাঁর কাছ থেকে দুই লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এ ঘটনায় সত্যতা পাওয়ায় তাঁদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

প্রত্যাহার করা পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যরা হলেন, গোদাগাড়ী মডেল থানার এসআই সত্যব্রত সরকার, আকরামুজ্জামান, এএসআই আবদুল করিম, মঞ্জুরুল ইসলাম, রঞ্জু আহমেদ ও কনস্টেবল মাহবুবুর রহমান।

এর আগে রোববার বিকেলে এক কাপড় ব্যবসায়ীর ছেলেকে উঠিয়ে নিয়ে চাঁদা দাবির অভিযোগে গোদাগাড়ী প্রেমতলী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের আরও চার সদস্যকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে পৃথক আদেশে একই থানায় দায়িত্বরত ১০ জনকে প্রত্যাহার করা হলো।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার সন্ধ্যার পর গোদাগাড়ী মডেল থানার ছয় পুলিশ গিয়ে চর আষাড়িয়াদহ গ্রামে গিয়ে আবদুস সামাদ নামের এক কৃষককে আটক করে। তাঁর বাড়ি গোদাগাড়ী থানার সীমান্ত–সংলগ্ন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার কোদালকাটি গ্রামে। তাঁর বিরুদ্ধে মাদক মামলা রয়েছে। সেই মামলায় তিনি গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি।

তাঁকে সেদিন রাতে হাতকড়া পরানোর পর একটি ফাঁকা মাঠে দুই ঘণ্টা বসিয়ে রেখে ৪ লাখ টাকা দাবি করা হয়। এই ৪ লাখ টাকা দিলে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হবে। রাত একটার দিকে তাঁর পরিবারের সদস্যরা নগদ দুই লাখ টাকা দিয়ে আবদুস সামাদকে ছাড়িয়ে নিয়ে যান। পরদিন বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়। পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে নেমে ঘটনার সত্যতা পায়। পরে সন্ধ্যার দিকে পুলিশ সুপার তাঁদের প্রত্যাহার করে নেন। এ ঘটনায় বিভাগীয় তদন্ত চলমান।

পুলিশের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, তাঁরা আসামি ধরতে গিয়ে চাঁদাবাজি করে আসামিকে ছেড়ে দিয়েছে। এটি অনেক বড় অপরাধ। এ বিষয়ে বিভাগীয় তদন্ত চলছে।

এদিকে, রোববার বিকেলে প্রত্যাহার করা পুলিশের ওই চার সদস্য হলেন, গোদাগাড়ী প্রেমতলী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই রেজাউল করিম, এএসআই আনোয়ারুল ইসলাম, কনস্টেবল রেজাউল করিম ও মিলন হোসেন।

তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁরা এক কিশোরকে ধরে নিয়ে গিয়ে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছেন। এ ঘটনায় শনিবার রাতে গোগ্রাম গ্রামে এএসআই আনোয়ারুল ইসলামকে অবরুদ্ধ করেন এলাকাবাসী। পরে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে। এ সময় স্থানীয় লোকজনের ওপর পুলিশ চড়াও হলে উত্তেজিত জনতা পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করে।

পুলিশ সুপার সাইফুর রহমান বলেন, শৃংঙ্খলা পরিপন্থি কাজে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠে পাঁচ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে। প্রাথমিক তদন্তে তার সত্যতা পাওয়া যায়। এর পর রোববার সন্ধ্যায় তাদের প্রত্যাহার করে রাজশাহী পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত চলমান থাকবে বলেও জানান তিনি।

অপর চারজনকে প্রত্যাহারের বিষয়ে তিনি বলেন, একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে জনতা উত্তেজিত হয়। পুলিশের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি, গাড়ি ভাঙচুর হয়। এ ঘটনায় মামলাও হয়েছে। এ ঘটনায় চারজনকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে বিভাগীয় তদন্ত চলছে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে