ফলনের দর পেয়ে খুশি চাষিরা, নওগাঁয় আগাম সবজি চাষে ঝুঁকছেন কৃষক

প্রকাশিত: অক্টোবর ২, ২০২৪; সময়: ৭:১৯ অপরাহ্ণ |
খবর > কৃষি
ফলনের দর পেয়ে খুশি চাষিরা, নওগাঁয় আগাম সবজি চাষে ঝুঁকছেন কৃষক

শফিক ছোটন, নওগাঁ : প্রকৃতি জুড়ে শরতের শুভ্রতা। ধীরে ধীরে শীত আসছে। শুরু হয়েছে শীতকালীন আগাম শাক-সবজির চাষাবাদ। মাঠে মাঠে শীতকালীন সবজি চাষের ধুম পড়েছে। হরেক রকম সবজি চাষে মেতেছেন নওগাঁর চাষিরা। বাজারে উঠেছে আগাম শীতকালীন বেশ কিছু সবজি। ভালো দাম পেয়ে চাষাবাদে আগ্রহী হচ্ছেন কৃষকরা।

নওগাঁ জেলা কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে এই জেলায় প্রায় ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে আগাম শীতকালীন সবজি চাষাবাদ হচ্ছে। ভরা মৌসুমের আগেই দুই থেকে তিন দফায় উৎপাদন ও সরবরাহ হবে। আবহাওয়া ভালো থাকায় চাষিরা নির্বিঘ্নে ফসল চাষ করছেন।

নওগাঁ সদর উপজেলার বর্ষাইল, কীর্ত্তিপুর চক আতিথা এলাকার মাঠগুলোতে দিনভর চাষিদের ব্যাস্ততা দেখা গেছে। মূলা, শীম, বেগুন, ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটোসহ হরেক রকম আগাম শীতকালীন সবজি চাষ হচ্ছে। জমি প্রস্তত, বীজ বপন, সার- বালাইনাশক প্রয়োগ, চারার পরিচর্যা ও নতুন ফলন তুলে বাজারে সরবরাহ করছেন চাষিরা।

চক আতিথা গ্রামের চাষি মকবুল হোসেন বলেন, গ্রীষ্মকালীন সবজির যোগান প্রায় শেষ। এখন প্রায় সব কৃষকই ঝুঁকেছেন শীতকালীন চাষাবাদে। তিনি বলেন গ্রীষ্মকালীন চাষাবাদ কঠিন ছিলো। শুরুতে তীব্র ক্ষড়ায় চারা রোপন ও উৎপাদন ব্যাহত হয়। দফায় দফায় কীটনাশকের দাম বাড়ায় চাষিদেরকে হিমশিম খেতে হয়েছে। রোগ-বালাইয়ের আক্রমনে উৎপাদন খরচ বেড়েছে। সে তুলনায় ফলন পাননি চাষিরা।

প্রায় ৩ বিঘা জমিতে গ্রীষ্মকালীন করলা, মিষ্টি কুমড়া, বইকচু ও কাঁচা মরিচের আবাদ করেছিলেন বর্ষাইল এলাকার কৃষক আফাজ উদ্দিন। এখন সেই জমিগুলোতে শীতের আগাম জাতের মূলা, টমেটো, কপি, শীম চাষ করছেন। তিনি বলেন, গ্রীষ্মকালীন সবজির বাজার দর ভালো ছিলো। কিন্তু প্রতিকূল আবহাওয়ার কারনে আশানূরুপ ফলন পাওয়া যায়নি। তাই লাভের আশায় তারা দ্রুতই আগাম শীতকালীন চাষাবাদে শুরু করেছেন।

বোয়ালিয়া গ্রামের চাষি মুনছুর রহমান এই প্রতিবেদককে বলেন, শীতকালীন চাষাবাদের জন্য ভাদ্র মাসের শুরু থেকে প্রস্তুতি নিতে হয়। বর্তমানে তিনি ৩ বিঘা জমিতে মূলা চাষ করেছেন। ৪ বিঘা জমিতে কপি চাষের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ইতোমধ্যেই চারা তৈরী হয়েছে। নতুন সবজির ভালো দাম থাকায় চাষিরা আবাদে আগ্রহী হচ্ছেন। তিনি বলেন, বাজারে নতুন মূলার দর ৫০ টাকা কেজি। আগাম জাতের ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে প্রতিপিচ ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। শীমের কেজি ১২০ টাকা। শীতের শুরু থেকে একই জমি ব্যবহার করে শীত মৌসুমে ৩ থেকে ৪ টি ফসল উৎপাদন করেন চাষিরা।

নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক আবুল কালাম আজাদ জানান, চলতি মৌসুমে জেলায় প্রায় ৬০ লাখ মেট্রিক টন আগাম শীতের সবজি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। আবহাওয়া ও বাজারে সবজির ভালো দাম পাওয়ায় চাষিরা উৎপাদনে আগ্রহী হচ্ছেন।

তিনি আরো বলেন, ধান ও আমের পর নওগাঁ জেলা সবজি উৎপাদনে এগিয়ে আছে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে উৎপাদিত ফলন এখান থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সীলেটসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ হয়। চলতি মৌসুমে সময় উপযোগী চাষাবাদে কৃষি বিষয়ক পরামর্শ ও সহযোগীতা দিয়ে চাষিদেরকে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন উপ পরিচালক আবুল কালাম আজাদ।

পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে