হাসপাতালে বেড়েছে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশু রোগী

প্রকাশিত: নভেম্বর ১২, ২০২৪; সময়: ৪:২৫ অপরাহ্ণ |
হাসপাতালে বেড়েছে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশু রোগী

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : গেলো কয়েক বছরে দেশে নিউমোনিয়াজনিত জটিলতায় মৃত্যুহার কমলেও সম্প্রতি এ রোগে আক্রান্ত শিশু রোগীর সংখ্য বেড়ে গেছে। এর মধ্যে আবার শিশু রোগীর সংখ্যাই বেশি। চিকিৎসকদের দাবি, দ্রুত শনাক্ত করা গেলে এতে শতভাগ রোগী সুস্থ হওয়া সম্ভব। আর বিশেষজ্ঞদের মত, রোগটি নির্মূলে প্রয়োজন সমন্বিত ব্যবস্থাপনা ও গবেষণা।

শিশু সাদি ইসলাম। বয়স সবে পেরিয়েছে এক বছর। কোমল এ শিশুটির শরীর বয়ে বেড়াচ্ছে অবর্ণনীয় যন্ত্রণা। এরই মধ্যে দুবার তাকে ফিরতে হয়েছে লাইফ সাপোর্ট থেকে।

পাশের বেডে থাকা আরেকজন দুমাস বয়সের সাদিক ইসলামের প্রায় পুরোটাই কেটেছে হাসপাতালে। আবার তিন বছরের আয়ানের গল্পটাও অনেকটা একরকম। এতো অল্প বয়সেই তার শরীরের ওপর বয়ে গেছে লম্বা চিকিৎসার ধকল৷

বাড়ির আঙিনায় হেসেখেলে বেড়ানোর সময়টা সাদি আর আয়ানরা আটকা হাসপাতালের চার দেয়ালের মাঝে। এমন গল্প দেশে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত প্রায় সব শিশুরই৷

দেশে শিশুমৃত্যুর যে কটি কারণ আছে, তার অন্যতম নিউমোনিয়া। এসংক্রান্ত জটিলতায় প্রতিবছর দেশে মারা যাচ্ছে প্রায় ২৪ হাজার শিশু।

প্রতিদিনই যে হারে বাড়ছে নিউমোনিয়া রোগীর সংখ্যা, তাতে বাড়ছে উদ্বেগ। শুধু শিশু নয়, এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন বয়স্করাও। চিকিৎসা নিয়ে সুস্থও হচ্ছেন অধিকাংশ রোগী। তবে, তাতে কি সম্ভব রোগটি একেবারে নির্মূল করা?

নিউমোনিয়ায় আগের চেয়ে মৃত্যুহার কমলেও এখনও সম্ভব হয়নি এ রোগ প্রতিরোধে টেকসই ব্যবস্থা৷ চিকিৎসকরা বলছেন, এটি সম্ভব হলে মৃত্যুহার কমে আসবে তিন শতাংশের নিচে৷ এজন্য প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসার প্রতি জোর দেন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মো. কামরুজ্জামান। তিনি বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ে যারা চিকিৎসকের কাছে আসে, তাদের বেশিরভাগই সুস্থ হয়। শরীরে কোন প্রকার জটিলতার সৃষ্টি হয় না।

বাংলাদেশ পেডিয়াট্রিক পালমোনোলজি ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. প্রবীর কুমার সরকার বলেন, ‘৯০ দশকের কথা চিন্তা করলে বছরে এক লাখ শিশু মারা যেতো। আমরা আগেই এমডিজি লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছে যেতে পারলেও এসডিজিতে ২০২৫ সালের মধ্যে ৫ বছরের শিশু মৃত্যুর হার তিন শতাংশের নিচে নামিয়ে আনার যে লক্ষ্য ছিল তা কিন্তু আমরা পারিনি। এক্ষেত্রে এখনও আমরা সাত-এ অবস্থান করছি।’

নিউমোনিয়া নির্মূলে সমন্বিত চিকিৎসা ব্যবস্থার ওপর জোর দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, সরকারের পাশাপাশি কাজে লাগাতে হবে এ খাতে কাজ করা বেসরকারি সংস্থাগুলোকেও। সারা দেশের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে তা গবেষণার মাধ্যমে কার্যকরভাবে প্রয়োগ করা গেলেই ঠেকানো সম্ভব এ রোগের প্রাদুর্ভাব৷

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ মহিমা বেনজীর হক বলেন, এ বিষয়ে অনেক গবেষণা করতে হবে। একজন চিকিৎসক ১০ হাজার রোগীর দায়িত্বে থাকেন। ফলে তিনি পরিপূর্ণ সেবা দিতে পারেন না। এক্ষেত্রে কমিউনিটি স্বাস্থ্য কর্মী বা মাঠ পর্যায়ে যারা স্বাস্থ্যকর্মী আছেন, তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।

 

পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে