চাঁদপুরের ৬শ বছরের পুরনো ঐতিহ্য গায়েবি মসজিদ

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৬, ২০২৪; সময়: ৩:০৮ অপরাহ্ণ |
চাঁদপুরের ৬শ বছরের পুরনো ঐতিহ্য গায়েবি মসজিদ

মাসুদ রানা,কচুয়া : চাঁদপুরের কচুয়ায় বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান রয়েছে। ইসলামী সংস্কৃতির অনেক গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শনও রয়েছে। তেমনি চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলায় রয়েছে আটোমোর পূর্বপাড়া প্রাচীন শাহী জামে মসজিদ’ বা ‘গায়েবি মসজিদ’। এই মসজিদটি কবে, কখন ও কিভাবে নির্মিত হয়েছে তা কেউ জানেন না। বর্তমানে তার নামকরণ করা হয়েছে আটোমোর পূর্বপাড়া প্রাচীন শাহী জামে মসজিদ।

তবে ধারণা করা হয়, প্রায় ৬শ বছর আগে এই মসজিদ নির্মিত হয়েছে। সেই সময় থেকেই ইতিহাস-ঐতিহ্যের প্রাচীনতম এই মসজিদটি আজও দাঁড়িয়ে রয়েছে অক্ষত অবস্থায়। তবে মসজিদটিকে বৃহত্তর আকারে নির্মান করেছেন স্থানীয় এলাকাবাসী। এতে ব্যয় হয়েছে অনেক টাকা। বাকী কাজ করতে সকলের সহযোগিতা চেয়েছেন মসজিদ কমিটির নেতৃবৃন্দ ও এলাকাবাসী।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ওই মসজিদটির পূর্ব পাশে নির্মান করা হয়েছে আটোমোড় জামালিয়া হাফিজিয়া নূরানীয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানা । মসজিদটি প্রায় ১৮ শতাংশ জমিতে নির্মিত রয়েছে। সম্ভবত মুঘল সম্রাট শাসন আমলে মসজিদটি এলাকাবাসী বন-জঙ্গল পরিস্কার করতে গিয়ে খোঁজ মেলে এ মসজিদটির। ওই সময়ে এলাকায় জনবসতি না থাকায় বনজঙ্গল আচ্ছন্ন হয়ে মসজিদটি ঢাকা পড়ে যায়।

তখনকার সময়ে স্থানীয় এলাকাবাসী জন-জঙ্গল পরিস্কার করে মসজিদটি দেখতে পায়। মুঘল সম্রাটের আমলে কে বা কাহারা এ মসজিদটি নির্মান করেছে তা কেউ জানে না। সেই থেকে মানুষ মসজিদটিকে ‘গায়েবি মসজিদ’ হিসেবে আখ্যায়িত করে আসছে। তাছাড়া পূর্বের বিশাল এক গুম্বজ মসজিদটিতে মাত্র ইমামসহ ৯ থেকে ১০জন মুসল্লি নামায় আদায় করা যেত। বর্তমানে ওই মসজিদকে প্রায় ২৩শ স্কয়ারফিট করা হয়েছে। এতেবর্তমানে ৪শ থেকে ৫শ জনের মুসল্লিগন নামাজ আদায় করতে পারে।

স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, সম্ভবত মুঘল সম্রাটের আমলে মসজিদটি প্রায় ৬শ বছর আগে নির্মিত। মসজিদটিকে বৃহত্তর আকারে নির্মান করা হচ্ছে। এদিকে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতি শুক্রবার মুসল্লিরা আসেন এবং অনেকে মনের বাসনা পূরনে মানত করেন বলেও জানান তারা। তবে মসজিদটিকে সংস্কারের জন্য সরকারি কিংবা বেসরকারির সহয়তার পাশাপাশি বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তারা।

মসজিদ কমিটির কোষাধ্যক্ষ মো. বায়েজিদ সরকার বলেন, প্রতি শুক্রবার দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসা মানুষরা মসজিদে মানতের নগদ টাকা ও মিষ্টি নিয়ে আসেন এখানে। তাদের ধারণা, যে কেউ যে কোনো নিয়তে মানত করলে আল্লাহর অশেষ রহমতে তা পূরণ হয়। আগের চেয়ে মসজিদটির অনেক প্রসারিত করা হয়েছে। আরও অনেক কাজ অসমাপ্ত রয়েছে। এদিকে মসজিদ প্রসারিত করতে গিয়ে অনেক টাকার ঋন হয়েছে। তাই সরকারি-বেসরকারি,জনপ্রতিনিধি ও বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করছি।

আটোমোর পূর্বপাড়া প্রাচীন শাহী জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা নুরুল হক নিজামী বলেন, এ মসজিদের নির্মানদাতা কে তাও আমরা বলতে পারি না। আমরা বাপ-দাদার আমল থেকে শুনেছি এ মসজিদের কথা। এদিকে বাহির থেকে অনেক বড় মনে হলেও মসজিদের ভেতরে শুধুমাত্র ৪শ জন মুসল্লি নিয়ে নামাজ আদায় করা যায়। মসজিদের মূল অবকাঠামো ঠিক রেখে প্রসারিত করার জন্য মসজিদ ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। তাই সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।

 

পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে