বাগমারার দখলবাজ বিএনপি নেতাদের বহিস্কার চায় তৃণমুল

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৯, ২০২৪; সময়: ৬:৩১ অপরাহ্ণ |
বাগমারার দখলবাজ বিএনপি নেতাদের বহিস্কার চায় তৃণমুল

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীর বাগমারায় চাঁদাবাজি, জমি-পুকুর দখল ও মাছ লুটের ঘটনায় জড়িত বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে আইনগত ও দলীয় সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার যাত্রাগাছি বাজারে স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াত নেতারা এ সংবাদ সম্মেলন করে।

সাংবাদ সম্মেলনে তারা অভিযোগ করেন, দাবিকৃত ১৫ লাখ টাকা চাঁদা না পেয়ে উপজেলার গোয়ালকান্দি ইউনিয়নের দুলালীপাড়া আন্ধিয়ার বাগানের ব্যক্তি মালিকানাধীন পুকুরসহ ১৩ একর জমি দখল করে নিয়েছে বিএনপি নেতারা। একই সঙ্গে দুই দফায় কয়েক লাখ টাকার মাছ লুটসহ পুকুরে বিষ দিয়ে প্রায় ১০ লাখ টাকার মাছ মেরে ফেলাও হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান দখল হওয়া জমি ও পুকুরের ইজারাদার ও স্থানীয় জামায়াত নেতা গোলাম মোস্তফা। তিনি অভিযোগ করেন, আমাদের কাছে ১৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছিল গোয়ালকান্দি ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মুনসুর রহমান। তার মদদ দাতা হিসেবে রয়েছেন বাগমারা উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব কামাল হোসেন। তাদের দাবিকৃত চাঁদার টাকা না পেয়েছে গত ৪ নভেম্বর আমাদের উপর হামলা করে পুকুর দখল করে নেয়। আর এ কাজে তারা ব্যবহার করে মুনসুরের বোন জামাই জালাল উদ্দিনের হেলমেট বাহিনী। আওয়ামী লীগ নেতাদের তৈরী এই হেলমেট বাহিনী গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার মিছিল হামলা করেছিল।

সংবাদ সংম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, এই হেলমেট বাহিনী দিয়ে বিএনপি নেতা মুনসুর রহমান গত ৭ ও ২১ আগস্ট দুই দফায় পুকুরের কয়েক লাখ টাকার মাছ লুট করে। এছাড়াও গত ১৫ নভেম্বর রাতে পুকুরে বিষ দিয়ে প্রায় ১০ লাখ টাকা মাছ নিধন করে। এ সময় তারা পুকুরের কেয়ারটেকার রায়হানের বাড়িতে হামলা করে ভাংচুর চালায়। গত ৪ নভেশ্বরের ঘটনায় থানায় দুইটি মামলা হলেও বিএনপি নেতা কামাল হোসেনের চাপে পুকুরে বিষ দেওয়ার ঘটনায় পুলিশ কোন মামলা নেয়নি। বর্তমানে তাদের হুমকি ধামকিতে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। কেয়ারটার রায়হানের পরিবারও বাড়ি ছাড়া।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, জমির মালিক ও মারিয়া ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান, রাজশাহী জেলা ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি শাহজামাল, তারেক রহমান প্রজন্ম দলের মাড়িয়া ইউনিয়ন শাখার সভপতি জিয়াউর রহমান এবং জমি-পুকুরের আরেক ইজারাদার ও গোয়ালকান্দি ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হাসান মিল্টন।

চাঁদাবাজি, জমি-পুকুর দখল ও মাছ লুটের ঘটনায় জড়িত বিএনপি নেতাদের দল থেকে বহিস্কারের দাবি জানিয়ে জমির মালিক খলিলুর রহমান বলেন, এতো বড় অন্যায় মেনে নেয়ার নয়। বিষয়টি নিয়ে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

মুনসুর রহমান বলেন, ২০১৪ সালে এই জমি ও পুকুর আমি লিজ নিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিলাম। গত ৫ আগস্টের পর একজন জমির মালিক আমাকে লিজ দিতে চেয়েছিল। তার কথামত আমি পুকুরে কিছু মাছ ছেড়ে দিয়েছি। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে তিনি আর আসেননি এবং আমাকে লিখে দেয়নি। তবে মাছ লুট ও বিষ দিয়ে মাছ নিধনের বিষয়টি জানা নেই বলে দাবি করেন মুনসুর।

চাঁদা দাবিসহ জমি-পুকুর দখল ও মাছ লুটের ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে কামাল হোসেন বলেন, আন্ধিয়ার বাগানের জমির মালিকরাও বিএনপি, যারা ইজারা নিয়েছে তারাও বিএনপি। আবার যারা দখল করছে তারাও বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। বিষয়টি মিমাংসার জন্য আমি চেষ্টা করছি। এ নিয়ে স্থানীয় বিএনপির নেতৃবৃন্দদের নিয়ে দুই দফায় বৈঠক করা হয়েছে। কিন্তু কেই মানতে চাইছে না বলে দাবি করেন কামাল হোসেন।

পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে