রাজশাহীতে কৃষকদল নেতা খুনের ছয় বছর পর মামলা, গ্রেপ্তার ১

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৪, ২০২৪; সময়: ১১:৫৮ অপরাহ্ণ |
রাজশাহীতে কৃষকদল নেতা খুনের ছয় বছর পর মামলা, গ্রেপ্তার ১

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষকদলের সহসভাপতি নজরুল ইসলামকে হত্যার ছয় বছর পর মামলা করেছে পরিবার। মামলায় স্থানীয় এক মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রোববার তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

গোদাগাড়ী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘শনিবার রাতে থানায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়েছে। এরপর মামলার প্রধান আসামিকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রোববার আসামিকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’

গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম সেতাবুর রহমান (৩৬)। তার বাবার নাম আতাউর রহমান। বাড়ি উপজেলার মাটিকাটা গ্রামে। তিনি মাটিকাটা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত মাদককারবারি সেতাবুরের নামে একাধিক মাদক মামলাও আছে। আওয়ামী লীগের কর্মী হিসেবে এত দিন দাপটের সঙ্গেই মাদক ব্যবসা করেছেন। নজরুল ইসলামকে হত্যার পর ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দাফন করতে বাধ্য করেছিলেন তিনি।

মামলায় সেতাবুর রহমানের চাচা ও আরেক মাদক ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন ওরফে নয়ন ডাক্তারকেও (৫২) আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন, সেতাবুরের বাবা আতাউর রহমান (৬০), মো. ডালিম (৩৬), মো. আলমগীর (৪৫), তরিকুল ইসলাম (৪৫), সোহেল রানা (৩০), তরিকুল ইসলাম (৩২), মো. সাদ্দাম (৩৪) ও দুরুল মুন্সি (৫২)।

নিহত নজরুল ইসলামের ছেলে রবিউল ইসলাম উপজেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক। তার আরেক ছেলে আসাদুজ্জামান সরকার বাদী হয়ে আদালতে মামলাটি করেন।

পুলিশ জানায়, আসাদুজ্জামান সম্প্রতি আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে হত্যা মামলার আবেদন করেন। তখন আদালত গোদাগাড়ী থানার পুলিশকে প্রাথমিক তদন্তের জন্য নির্দেশ দেয়। এরপর পুলিশ তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে যে বাদীর অভিযোগ সঠিক। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত অভিযোগটি এজাহার হিসেবে নথিভুক্ত করতে পুলিশকে নির্দেশ দেয়। সেই অনুযায়ী গতকাল রাতে থানায় মামলাটি নথিভুক্ত হয়েছে। এরপর রাতেই অভিযান চালিয়ে মামলার প্রধান আসমি সেতাবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সংক্ষিপ্ত এজাহার অনুযায়ী, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন নজরুল ইসলাম ও তাঁর ছেলে রবিউল সরকার মাটিকাটা ভোটকেন্দ্রে যান। তখন আওয়ামী লীগের কর্মীরা বাবা-ছেলেকে পিটিয়ে আহত করেন। ভোট দিতে গেলে প্রাণেই মেরে ফেলা হবে বলে তাঁদের হুমকিও দেওয়া হয়। বাবা-ছেলে পালিয়ে জীবন রক্ষা করেন।

এরপর ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি সন্ধ্যায় আসামিরা নজরুল ইসলামের বাড়িতে হামলা করেন। তাঁরা ব্যাপক ভাঙচুর চালান। দুই লাখ টাকার মালামালও লুট করেন। বাধা দিতে গেলে আসামিরা নজরুল ইসলামকে রড ও হকস্টিক দিয়ে পিটিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে চলে যান। তখন আসামিরা ময়নাতদন্ত ছাড়াই নজরুলের লাশ দাফনে বাধ্য করেন। আসামিদের ভয়ে তখন পরিবারের সদস্যরা মামলা করতে পারেননি বলে উল্লেখ করা হয়।

পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে