আ.লীগ কর্মীকে পোটানোর ঘটনায় বিএনপি নেতাদের নামে মামলা; গ্রেপ্তার ১
নিজস্ব প্রতিবেদক, বড়াইগ্রাম : নাটোরের বড়াইগ্রামে বৃদ্ধ মা-বাবা ও অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর সামনে উজ্জ্বল কুমার মণ্ডল (২৫) নামে এক আওয়ামী লীগ কর্মীকে বেধড়ক পেটানোর ঘটনায় মামলা দায়ের করা করা হয়েছে।
এ ঘটনায় সোমবার ভোরে জালাল ভূঁইয়া নামে একজন গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এর আগে রোববার রাতে উজ্জ্বলের শ্বশুর কৃষ্ণচন্দ্র মণ্ডল বাদী হয়ে বড়াইগ্রাম ১৫ বিএনপি-নেতাকর্মীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১০/১৫ জনের নামে মামলা দায়ের করেন। বড়াইগ্রাম থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলায় অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছে বনপাড়া পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এবিএম ইকবাল হোসেন রাজু, ৩নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি শাহাবুল আলম, ৮নং ওয়ার্ড বিএনপির সেক্রেটারী দুলাল কবিরাজ, উপজেলা শ্রমিক দলের আহ্বায়ক মুন্নাফ খান, পৌর শ্রমিক দলের আহ্বায়ক জালাল ভূঁইয়া, পৌর সেচ্ছোসেবদ দলের যুগ্ম আহ্বায়ক নুর আলম , পৌর যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, পৌর ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সুজন খান। অবশিষ্টরা বিএনপি কর্মী।
গত বুধবার উপজেলার বনপাড়া পৌরসভার কালিকাপুর শ্মশান ঘাট এলাকার কাঁচামাল ব্যবসায়ী বিশ্বনাথ মন্ডলের ছেলে উজ্জল কুমার মন্ডল। তিনি উপজেলা সেচ্ছাসেবকলীগের সেক্রেটারী আতিকুর রহমান পিয়াসের সাথে চলাফেরা করতেন। ৫ আগষ্টের পরিবর্তিত পরিস্তিতিতে অন্যদের সাথে উজ্জল কুমারও আত্নগোপনে চলে যায়। কিন্তু তার ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে ডাক্তার দেখানোর জন্য গত বুধবার বিকেলে বাড়ী আসেন। খবর পেয়ে বিএনপি নেতা রাজুর অনুসারী জালাল ভূঁইয়া, জাহাঙ্গীর আলম, নুর আলম, দুলাল কবিরাজ, নাজমুল, সুজন, শুভসহ ১০-১৫ জনের একটি দল লাঠি-সোঁটা নিয়ে তার বাড়িতে গিয়ে বাবা-মা ও অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর সামনে উজ্জলকে বেধরক পিটিয় রক্তাক্ত জখম করেন।
পরে হামলাকারীরা পুলিশে খবর দিলে পুলিশ উজ্জ্বলকে উদ্ধার করে বড়াইগ্রাম উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখান থেকে তাকে চিকিৎসা দেওয়ার পর ফৌজদারি আইনের ১৫১ ধারায় আটক দেখিয়ে গত বৃহস্পতিবার সকালে বড়াইগ্রাম আমলি আদালতে পাঠালে আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন। এ ঘটনায় ২ মিনিট ৫৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হল। সেটা বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ছড়িয়ে পরে।
এ ঘটনায় গতকাল রোববার দুপুরে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বড়াইগ্রাম উপজেলার কালিকাপুর এলাকায় নির্যাতিত উজ্জ্বল কুমার মণ্ডলের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। এসময় তিনি চিকিৎসাধীন উজ্জ্বলের শারীরিক অবস্থান খোঁজ খবর নেন। উজ্জলের ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেন বিএনপির এ নেতা। বড়াইগ্রাম থানার ওসিকে জড়িত অপরাধীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন। পরে পুলিশ রাতেই মামলা গ্রহণ করেন এবং অভিযান চালিয়ে জড়িত অপরাধী জালাল ভূইয়াকে গ্রেফতার করেন।
বড়াইগ্রাম থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম বলেন, মামলার পর থেকেই পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতারে অভিযান শুরু করেছে। ইতিমধ্যে প্রধান আসামি জালাল ভূইয়াকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদের ধরতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।